বিচারের নামে প্রহসনের অভিযোগ চেয়ারম্যান মতিনের বিরুদ্ধে

রাজশাহী

তানোর প্রতিনিধি : রাজশাহীর তানোরে তালাকের বিচারের নামে প্রহসন করেছেন চেয়ারম্যান মতিন বলে অভিযোগ উঠেছে। রোববার বিকেলের দিকে উপজেলার পাঁচন্দর ইউনিয়ন পরিষদে ঘটে চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি। এঘটনায় এক প্রকার জুলুম করে দেনমোহরের পুরো টাকা এক তরফা ভাবে নানা ভয়ভীতি দেখিয়ে আদায় করা হয়েছে বলেও একাধিক সুত্র নিশ্চিত করেন। ফলে চেয়ারম্যান মতিনের একের পর এক বিতর্কিত কর্মকাণ্ডে ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছেন স্হানীয়রা। পুরো টাকা আদায় হলেও নোটিশে কোন কিছুর উল্লেখ নেই।

জানা গেছে, বিগত ২০২১ সালের দিকে উপজেলার পাঁচন্দর ইউপি এলাকার ইলামদহী গ্রামের আব্দুল বারীর মেয়ে অন্তরা আক্তার সাথীর সাথে মোহনপুর উপজেলার ঘাসিগ্রাম ইউপি এলাকার ডাঙ্গাপাড়া গ্রামের আফসার আলীর পুত্র শাহিন আজিমের সাথে ইসলামি শরিয়া মোতাবেক বিয়ে হয়। বিয়ের কয়েক মাস ভালো ভাবে চললেও বেশ কয়েক মাস থেকে মেয়ে ভাত খাবেনা বলে পিতার বাড়িতে চলে আসেন। এঅবস্হায় রোববার বিকেলের দিকে পাঁচন্দর ইউনিয়ন পরিষদে সালিশ বিচার বসলে মেয়ে ভাত খাবেনা বলে সাব জানিয়ে দেন।
সরেজমিনে দেখা যায়, ইউনিয়ন পরিষদের বারান্দায় পাঁচন্দর ইউপির কাজি মিজানুর রহমান তালাক নামা লিখছেন। ওই সময় বেশকিছু ব্যক্তি এসে এই প্রতিবেদককে বলেন, ছেলে ভাত দিবে, কিন্তু মেয়ে ভাত খাবেনা। এজন্য চেয়ারম্যান সহ তার নিকটতম মুন্জুর এবং আরো কয়েকজন পুরো দেনমোহরের টাকা দিতে চাপ সৃষ্টি করেন। ছেলের লোকজনরা দুবারে টাকা দিতে চাইলে নানা ধরনের হুমকি ধামকি দেওয়া শুরু করেন। আদালতে মামলা হলেও দেনমোহরের টাকা কয়েকবারে দেওয়া যায়। কিন্তু আজকের বিচারে কোন ছাড় নাই। পুরো টাকা আদায় করেন চেয়ারম্যান সহ তাদের লোকজন।

ছেলে শাহিন আজিম জানান, সংসার জীবনে কোন কলহ বিবাদ ছিল না। কিন্তু আমি বাচ্চা নিতে চাইলেও কোনভাবেই নিতে দিত না মেয়ের মা। কেউ চায় না সংসার ছিন্ন ভিন্ন হোক। আজ যদি আমার সন্তান থাকত তাহলে হয় তো এমন ঘটনার শিকার হতে হত না। আমার জীবনে দাগ লেগে গেল সেটা তো আর ফিরে পাব না। পরিকল্পিত ভাবে আমাদের কাছ থেকে জুলুম করে দেনমোহরের পুরো টাকা আদায় করা হয়েছে। দেনমোহরের টাকা দিতেই হবে, আমিও রাজি, কিন্তু একসাথে এত টাকা দেওয়া কষ্টকর।

ছেলে পক্ষের আরেক ব্যক্তি জানান, জীবনে অনেক বিচার সালিশ করেছি দেখেছি। কিন্তু রোববারের বিচার ছিল প্রহসন। কেন না ঘর ভাঙ্গা সহজ, কিন্তু ঘর সংসার করা কঠিন। তাদের মেয়ে ভাত খাবেনা পিতা মাতা বাড়িতে রেখে মেয়েকে বোঝাবে। নচেৎ তারাই তালাক নিতে মরিয়া। ঠিক আছে আবেগে মনের খেদে অনেক কিছু বলা যায়। কিন্তু সেটা বাস্তবে রুপ দেওয়া ঠিক না। বিচারে চেয়ারম্যানের চাইতে ইলামদহী গ্রামের মুন্জুরের ভুমিকা ছিল কঠোর। দেনমোহরের পুরো ১ লাখ ২১ টাকা চেয়ারম্যানের হাতে দেওয়া হয়েছে।

মুন্জুরের সাথে মোবাইলে কথা বলা হলে তিনি জানান মেয়ে ভাত খাবেনা, তালাক নিবে। সেক্ষেত্রে কারো কিছু করার নেই। এজন্য দেনমোহরের পুরো টাকা আদায় করা হয়েছে।

চেয়ারম্যান আব্দুল মতিনের সাথে যোগাযোগ করে তালাকের নোটিশে দেনমোহর পরিশোধের কোন কিছু উল্লেখ নাই ও ছেলে পক্ষ দেনমোহরের টাকা দুবারে দিতে চেয়েছিল আপনি নাকি সময় দেন নি জানতে চাইলে তিনি জানান কাজি কিভাবে লিখেছেন তিনি বলতে পারবেন আর পুরো টাকা আমি কেন আদায় করব এমপি আয়েন উদ্দিনের ভাই বোর্ডে ছিল আর বাহানচোদেরা আমার দোষ দিচ্ছে, শালাদের কে বাধা উচিত ছিল, মানুষের ভালো করতে নেই বলে সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন।

কাজি মিজানুর রহমান জানান, আমাকে চেয়ারম্যান ডেকে তালাক নামা লিখতে বলেছেন আমি সে অনুযায়ী কাজ করেছি। তালাকের নোটিশে দেনমোহর বিয়ের তারিখ এবং আপনার কোন স্বাক্ষর নেই জানতে চাইলে তিনি জানান এটা নোটিশ সাটিফাই কপিতে সব উল্লেখ করা হবে।

আরেক কাজির কাছে এসব বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি জানান নোটিশে দেনমোহর পরিশোধের টাকার পরিমান ও কাজির স্বাক্ষর থাকতেই হবে। এভাবে নোটিশ হয় না।

স্ব.বা/বা

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *