তানোরে গর্ভবতী নারীদের সিজারিয়ান অপারেশন করছেন ক্লিনিকের ম্যানেজার!

রাজশাহী লীড

তানোর প্রতিনিধি : রাজশাহীর তানোরে দীর্ঘদিন ধরে ভূয়া ডাক্তার সেজে রোগীদের চিকিৎসা সেবা ও গর্ভবতী নারীদের সিজারিয়ান অপারেশন করে আসছিলো মহানগর ক্লিনিকের ম্যানেজার মামুনুর রশীদ। মহানগর ক্লিনিকের ম্যানেজার মামুনের ভূয়া ডাক্তার সেজে চিকিৎসা দেয়ার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হলে তোলপাড় সৃষ্টি হয় মিডিয়াজুড়ে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মহানগর ক্লিনিকের মালিক হচ্ছেন রাজশাহী শহরের হেলাল উদ্দিন নামের একজন ব্যক্তির। এই ক্লিনিকে ম্যানেজার হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয় পৌর এলাকার আমশো গ্রামের মামুন নামের একজন কে। মামুন দীর্ঘদিন ধরে মহানগর ক্লিনিকে ম্যানেজারের ছত্রছাঁয়ায় থেকে ভূয়া ডাক্তার সেজে চিকিৎসার নামে সাধারণ মানুষের সাথে প্রতারণা জালিয়াতি করে আসছিলো। ক্লিনিকের সামনে ও উপজেলার বিভিন্ন হাট-বাজার জনবহল মোড়ে মোড়ে শহরের বড় বড় ডাক্তারের নাম লিখে চিকিৎসা করানো হয় বলে সাইনবোর্ড লাগিয়ে রেখেছেন।

এছাড়া অল্প মূল্যে চিকিৎসা সেবা দেয়া হয় মহানগর ক্লিনিকে বলে ঢাক ঢ়ল পিটিয়ে মাইকে প্রচার করা হয়ে থাকে। অথচ ডাক্তার তো দূরের কথা একটা ভালো মানের নার্স পর্যন্ত নেই এই মহানগর ক্লিনিকে। যদি জরুরী কোন গর্ভবতী রোগী আসে তাহলে মামুন নিজে গর্ভবতী রোগীদের সিজারিয়ান অপারেশন করতেন। এতে করে কোন সিজারিয়ান অপারেশন সফল হতো। আবার কোন রোগী মারাও যেতো। তবে সফল সিজারিয়ান অপারেশনের থেকে মৃত্যু হয়েছে বেশির ভাগ গর্ভবতী রোগীর। কিন্তু রোগীর স্বজনরা কেউ প্রতিবাদ করতে পারেনা। কেউ কেউ প্রতিবাদ করলেও তাদের রাতারাতি ম্যানেজ করে ফেলতেন ম্যানেজার মামুন।

নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক বেশকিছু স্থানীয়রা জানান, এই ক্লিনিকে রোগী আসার সাথে সাথে রোগীর স্বজনদের কাছে থেকে আগেই মুচলেকা লিখে নিতেন এই মামুন। যাতে করে রোগী মারা গেলে রোগীর স্বজনরা কোন প্রকার ক্লিনিককে দায়ী করে অভিযোগ করতে না পারে। সেই জন্য মুচলেকা টি লিখে নেয়া হতো। পাশাপাশি মামুনের বাড়ি স্থানীয় প্রপারে হওয়ায় ক্লিনিকে সাংবাদিক তো দূরের কথা সাধারণ মানুষকেও প্রবেশ করতে দেয়া হয়না। এমনকি এই ক্লিনিকের বিরুদ্ধে কোন সাংবাদিক সংবাদ প্রকাশ করে তাহলে সেই সাংবাদিককে বিভিন্ন ভাবে হুমকি ধামকি ও লাঞ্ছিত করতে ছাড়েন না ক্লিনিকের ম্যানেজার মামুন।

তানোর মহানগর ক্লিনিকের পরিচালক হেলাল উদ্দিনের কাছে ক্লিনিকের ম্যানেজার হয়ে মামুন কি ভাবে অপারেশন করে, সে কি ডাক্তার অপারেশন করছে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, না মামুন ক্লিনিকের ম্যানেজার সে অপারেশন করতে পারবে না।

বিষয়টি নিয়ে তানোর থানার অফিসার ইনচার্জ ওসি কামরুজ্জামান মিয়া জানান,ঘটনাটি শোনার পরে ক্লিনিকে গিয়ে দোষী ব্যক্তিকে পাওয়া যায়নি, তার পরেও কেউ বাদী হয়ে অভিযোগ দেয়নি, অভিযোগ পেলে অভিযুক্ত ব্যক্তির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানান তিনি।

স্ব.বা/ম

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *