ঘোড়ায় চড়ে স্কুলে যান বাগমারার শিক্ষক এটিএম লাল মোহাম্মাদ !

রাজশাহী লাইফস্টাইল

বাগমারা প্রতিনিধি : এটিএম লাল মোহাম্মদ উপজেলার দ্বীপপুর ইউনিয়নের নানছোর গ্রামের বাসিন্দা। তিনি সহকারী শিক্ষক হিসেবে প্রায় ১০ কিলোমিটার দূরের উত্তর জামালপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কর্মরত রয়েছেন।

বাড়ি থেকে স্কুলের দূরত্ব প্রায় ১০ কিলোমিটার। মাঝের ৪ কিলোমিটার সড়কের দশা একেবারেই বেহাল। তাই সাইকেল-মোটরসাইকেল ফেলে বাহন হিসেবে ঘোড়াকে বেছে নিয়েছেন রাজশাহীর বাগমারা উপজেলার শিক্ষক এটিএম লাল মোহাম্মদ।

লাল মোহাম্মদ জানান, দীর্ঘ দিন ঘুরে-ফিরে আশপাশের এলাকার স্কুলে চাকরি করেছেন। এক সময় বাইসাইকেলে স্কুলে যাতায়াত করতেন। পরে মোটরসাইকেলকে বেছে নেন।।

সর্বশেষ তিনি বদলি হয়ে আসেন উত্তর জামালপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। বাড়ি থেকে পথের দূরত্ব প্রায় ১০ কিলোমিটার। তবে হুলিখালী থেকে জামালপুর পর্যন্ত প্রায় ৪ কিলোমিটার সড়কের একেবারেই বেহাল অবস্থা।

তাছাড়া বর্ষায় কাদাজলে একাকার থাকে সড়ক। গ্রীষ্মে ধুলাবালুতে যাতায়াতে সমস্যায় পড়তে হয়। মোটরসাইকেল নিয়ে যেতে হয় ঠেলে। এতে ভোগান্তির শেষ থাকে না। সময়মতো স্কুলে পৌঁছানোও যায় না। তাই বিকল্প বাহনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। নওগাঁর মহাদেবপুর থেকে কিনে আনা হয় ঘোড়া। ঘোড়াকে নিজের মতো করে পোষও মানানো হয়। সেই ঘোড়ায় চড়ে ২০ কিলোমিটার (আসা-যাওয়া) পথ পাড়ি দেন লাল মোহাম্মদ।

এই শিক্ষক জানান, প্রথম দিকে অনেকে হাসাহাসি করলেও এখন আর করেন না। সহকর্মী, শিক্ষার্থী ছাড়াও এলাকার লোকজন বিষয়টি স্বাভাবিকভাবে নিয়েছেন। অন্য বাহনের চেয়ে ঘোড়ায় যাতায়াত সবদিক থেকেই নিরাপদ।

তিনি আরও বলেন, বিদ্যালয়ে আসার জন্য যেমন নিজে প্রস্তুতি নেন, তেমনি ঘোড়াকেও প্রস্তুত করেন। ঘোড়াকে খাওয়ানোসহ সব পরিচর্যা নিজেই করেন। মাঝে-মধ্যে পরিবারের সদস্যরাও সহযোগিতা করেন। শিক্ষকের ঘোড়া থাকার বিষয়টি বেশ উপভোগ করে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। কখনো কখনো তারা ঘোড়ায় চড়ার বায়নাও ধরে। শিক্ষক তাদের শখও মেটান।

লাল মোহাম্মদ একজন ব্যতিক্রম ও দায়িত্বশীল শিক্ষক হিসেবে উল্লেখ করেছেন উত্তর জামালপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বয়েন উদ্দিন প্রামাণিক। তিনি জানান, তিনি ঘোড়া নিয়ে প্রতিদিন নির্দিষ্ট সময়ে বিদ্যালয়ে আসেন।

সোনাডাঙ্গা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আজাহারুল বলেন, হুলিখালী থেকে জামালপুর পর্যন্ত চার কিলোমিটার রাস্তায় জনদুর্ভোগ বাড়ছে। এই রাস্তাটুকু কাঁচা। শিগগিরই রাস্তাটি পাকা করার উদ্যোগ নেওয়া হবে।

খোঁজ-খবর নিয়ে রাস্তাটি পাকা করার উদ্যোগ নেওয়ার কথা জানিয়েছেন উপজেলা প্রকৌশলী খলিলুর রহমান।

স্ব.বা/ম

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *