কয়রায় দাবি আদায়ের জন্য দ্বারে দ্বারে কাঁদছে অসহায় স্ত্রী

জাতীয়

খুলনা প্রতিনিধিঃ দিন দিন বেড়ে যাচ্ছে যৌতুকের মতো এই অন্যায়।যৌতুকের দাবী পূরণ না করায় খুলনার কয়রার স্ত্রী আফরিন আক্তার কে শারিরীক ও মানষিক নির্যাতন করে বাড়ি থেকে বের করে দিয়েছে উপজেলার গোবরা গ্রামের স্বামী শরিফুল (ঢাকা ইউনিভার্সিটির সমাজ কল্যাণ বিষয়ের ছাত্র) ও শ্বশুর বাড়ীর লোকজন। শুধু তাই নয় গ্রাম্য মাতব্বরদের কাছে বিচার না পেয়ে আদালতে মামলা করায় মামলা তুলে নিতে বিভিন্ন ভাবে হুমকি ও ভয়ভীতি প্রদর্শন করছে। যৌতুকলোভী ও নারী নির্যাতনকারী শরিফুলের পরিবার উল্টো ষড়যন্ত্রমূলক মিথ্যা বানোয়াট ও ভিত্তিহীন মামলা করছে বলে সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে জানান ভোক্তভোগী আফরিন আক্তার ও তার পরিবার। আজ সোমবার (৫ সেপ্টেম্বর) বেলা ১১টায় কয়রা রিপোটার্স ইউনিটি কার্যালয়ে ভুক্তভোগী নারী আফরিন সুলতানা ডুকরে কাদতে কাদতে এ অভিযোগ করেন ।

সংবাদ সম্মেলনে আফরিন সুলতানা বলেন, ছোট বেলা থেকে আমার ওপর আসক্ত আমার বর্তমান স্বামী শরিফুল ইসলাম আমার জীবন নিয়ে ছিনিমিনি খেলছে। আমি ও আমার স্বামী উপজেলার একই গোবরা গ্রামের বাসিন্দা হওয়ায় সে সহজে ফাঁদ পেতে ধোঁকা দেয়। আমার অন্যত্র বিয়ে হলেও সেখানে ঘর করতে দেয়নি সে। এখন সে আমাকে স্ত্রীর মর্যাদা না দিলে আত্মহত্যা ছাড়া আমার আর কোন পথ খোলা তাকবে না। অন্যত্র সংসার করাকালীন আমি একটি বেসরকারি এনজিও’তে চাকরি ও পড়ালেখা চালিয়ে যাই। কিন্তু অর্থ ও যৌতুকলোভী স্বামী শরিফুল ইসলাম আমার চাকরির টাকা হাতিয়ে নিতে আমাকে ওই স্বামীর সংসার থেকে ছিনিয়ে আনে।

সে আমাকে ফুসলিয়ে গত বছরের ১০ অক্টোবর ১ লক্ষ ১ হাজার টাকা দেনমোহরে বিয়ে করেন। বিয়ের পরে আমার চাকরির টাকায় স্বামী ও তার পরিবারের ভরনপোষণ চলতে থাকে। আমি ও আমার পরিবার এ পর্যন্ত প্রায় ৫ লক্ষ টাকা ও বিভিন্ন উপঢৌকন আমার স্বামীকে দিয়েছি। পরবর্তীতে আমি টাকা দিতে না পারায় সে ও তার পরিবার আমাকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন শুরু করে। এমনকি ৫ লক্ষ টাকা না দিলে মেরে ফেলারও হুমকি দিতে থাকিলে আমি নিরুপায় হইয়া আদালতে ৩৭৪/২২ নং মামলা রুজু করলে মিমাংসার স্বার্থে ২ মাসের জন্য জামিন পাইয়া আমার উপর আরও চড়াও হয়। এক পর্যায়ে গত ৩ সেপ্টেম্বর আমি আমার শ্বশুর বাড়ীতে গেলে আমার শাশুড়ি, শ্বশুর, ননদ ও পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা আমাকে বেধড়ক মারপীঠ করে ফুলা জখম অবস্থায় আটক রেখে নিজেরাই ঘরের আসবাব পত্র ভাংচুর করে পুলিশকে ফোন দিয়ে আমাকে দোষী সাব্যস্ত করার চেষ্টা করে। কিন্তু থানা ফোর্স ঘটনাস্থলে পৌছাইয়া আমার মোবাইলের ভিডিও ও গ্রামবাসীর নিকট শোনা জানার পর আমাকে নির্দোষ হিসাবে প্রমাণ পাইয়া আমাকে আমার পিত্রালয়ে পাঠিয়ে দেন। এরপরও আমাকে তারা হুমকি ধামকিসহ জীবন নাশের হুমকি দিতে থাকিলে আমি থানায় ৩/৯/২২ তারিখে একটি সাধারণ ডায়েরী করিলে পরবর্তীতে তারা ৪/৯/২২ তারিখে বিজ্ঞ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত, কয়রায় তারিখে ৫১০/২২ নং সিআর মামলায় আমিসহ আমার পরিবারের অন্যান্য নিরীহ ৬ জন সদস্যকে আসামী করে একটি মামলা মিথ্যা দায়ের করেন। প্রকৃত পক্ষে আমি একাই আমার শ্বশুরবাড়ীতে গিয়েছিলাম এবং আমাকে আটকে রেখে নিজেরাই মালামাল ধ্বংস করে আমাদেরকে ফাসানোর জন্য মিথ্যা মামলা দায়ের করেছে। ভুক্তেভোগী নারী জীবনের নিরাপত্তা, স্বামীর অধিকার ও সঠিক বিচার চেয়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীসহ প্রশাসনের সুদৃষ্টি কামনা করেন।

এ ব্যাপারে অভিযুক্ত স্বামী ঢাকা ভার্সিটির ছাত্র শরিফুল ইসলামের সাথে মোবাইল ফোনে কথা বললে তিনি বলেন- আমার উপর আনিত অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট, আমাকে জোর পূর্বক ভাবে ফাসিয়ে আফরিন বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়ে আমাকে সম্মানহানীসহ ক্ষতি করিবার চেষ্টা করে। আমি ও আমার পরিবার এ বিয়ে মানি না তাই আদালতের মাধ্যমে তালাক প্রদান করেছি। প্রয়োজনে আইনের মাধ্যমে তার সকল দেনা পাওনা পরিশোধ করিব।

স্ব.বা/বা

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *