মাস্টার ও ভিসা কার্ড থেকে যেভাবে অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছিল তারা

জাতীয় লীড

স্বদেশ বাণী ডেস্ক: মাস্টার কার্ড ও ভিসা কার্ডধারীদের অ্যাকাউন্টের তথ্য নিয়ে অর্থ হাতিয়ে নেওয়া প্রতারক চক্রের চার সদস্যকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গুলশান গোয়েন্দা বিভাগ (ডিবি)। এ সময় তাদের কাছ থেকে নগদ ২ লাখ ৫০ হাজার টাকা ও প্রতারণার কাজে ব্যবহৃত বিভিন্ন ব্র্যান্ডের ১০টি মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়েছে।

শনিবার ডিএমপির ডিবি কম্পাউন্ডে নিজ কার্যালয়ে অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (গোয়েন্দা) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ সাংবাদিকদের এসব তথ্য নিশ্চিত করে জানান, গত শুক্রবার ও শনিবার রাজধানী, ফরিদপুর ও সাভার এলাকা থেকে অভিযান চালিয়ে তাদেরকে গ্রেফতার করা হয়।এরা হলেন- সোহেল মীর, নাজমুল হোসেন, পারুল ও তারা মিয়া।

ডিএমপির ডিবিপ্রধান হারুন অর রশীদ বলেন, ‘বর্তমান ডিজিটাল প্রযুক্তির যুগে ভিসা ও মাস্টার কার্ড ব্যবহার করে পৃথিবীর যেকোনো দেশে ইলেকট্রনিক পেমেন্ট, কেনাকাটা, এটিএম বুথ থেকে টাকা উত্তোলন ও মোবাইল রিচার্জসহ বিভিন্ন কাজ করা যায়। এই কার্ড ব্যবহার করে বিকাশ অ্যাকাউন্টে টাকা লোডও করা যায়। আর এই সুযোগটিকে কাজে লাগিয়ে কার্ড ব্যবহারকারীদের অ্যাকাউন্ট হ্যাক করে অর্থ হাতিয়ে নিয়ে আসছিল একটি প্রতারক চক্র।’

ডিবি জানায়, প্রতারকরা কার্ডের ১৬ ডিজিটের নাম্বার, কার্ডের মেয়াদ উত্তীর্ণের তারিখ, কার্ডের বিপরীত পাশে উল্লিখিত ৩ ডিজিটের সিকিউরিটি পিন নাম্বার সংগ্রহ করে। পরবর্তীতে গ্রাহককে বোকা বানিয়ে তাদের কাছে ওটিপি কোড পাঠায় এবং অত্যন্ত সুকৌশলে পাঠানো ওটিপি কোড প্রতারক চক্রের নিয়ন্ত্রণে নিয়ে প্রতারণার মাধ্যমে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়।

জিজ্ঞাসাবাদে আসামিরা ডিবিকে জানায়, তারা বিভিন্ন ব্যাংকের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও কার্ড ডিভিশনের কর্মকর্তা সেজে সুকৌশলে কথা বলতে থাকে। নিরাপত্তামূলক মেসেজ/নির্দেশনা অনুসারে তথ্য হালনাগাদ করা হয়নি, কার্ডের পাসওয়ার্ড চার ডিজিটের পরিবর্তে ছয় ডিজিট করতে হবে, ইমেইলে পাঠানো মেসেজ আপডেট করা হয়নি ইত্যাদি ধরনের কথাবার্তা বলে কার্ডের সেবা বন্ধ হয়েছে বলে ব্যবহারকারীকে জানায়। অনেক গ্রাহক কার্ডে উল্লেখযোগ্য পরিমাণ টাকা ব্যালেন্স থাকায় আশঙ্কাগ্রস্ত হয়ে পড়েন এবং প্রতারকদের সুকৌশল কথামতো কাজ করতে থাকেন।

তিনি বলেন, ‘এ ধরনের কয়েকটি ঘটনায় গুলশান, বনানী ও হাতিরঝিল থানায় একাধিক মামলা হয়। গোয়েন্দা গুলশান বিভাগের অতিরিক্ত উপকমিশনার মাহবুবুল হক সজীবের টিম মামলাগুলোর ছায়াতদন্ত শুরু করে। গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে এ চক্রের সদস্যদের শনাক্ত করা হয়। পরবর্তীতে রাজধানী ঢাকা, ফরিদপুর ও সাভার এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করা হয়।’

ডিএমপির ডিবিপ্রধান আরও বলেন, ‘এর আগে বিকাশ অ্যাকাউন্ট হ্যাক করে টাকা হাতিয়ে নেওয়ার ঘটনা ঘটলেও মাস্টার কার্ড অথবা ভিসা কার্ড ব্যবহারকারীদের সঙ্গে প্রতারণার বিষয় নতুন হওয়ায় অনেক ব্যবহারকারী প্রাথমিকভাবে সন্দেহ প্রকাশ করেন না। অনেকেই কার্ড স্থায়ীভাবে সাসপেন্ড হয়ে যাওয়া ও কার্ডে জমা অর্থের ক্ষতির আশঙ্কায় প্রতারকদের বেঁধে দেওয়া সময়ের মধ্যেই তথ্য দিয়ে দেন।’

স্ব.বা/রু

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *