তানোরে গুদাম কর্মকর্তাকে হাতুড়ী দিয়ে মারতে গেলেন যুবলীগ নেতারা

রাজশাহী

তানোর প্রতিনিধি: রাজশাহীর তানোর পৌর সদর গোল্লাপাড়া খাদ্য গুদাম কর্মকর্তা ওসিএলএসডিকে প্রকাশ্যে হাতুড়ী দিয়ে মারতে যান বলে নিশ্চিত করেন গুদাম কর্মচারী ও ব্যবসায়ীরা। গত মঙ্গলবার গুদামের ভিতরেই ঘটে এমন নেক্কার জনক ঘটনাটি। শুধু তাই না যারাই কর্মকর্তাকে রক্ষা করতে গেছেন তাদেরকেও গালমন্দ ও জামা ছিড়ে ফেলেন পৌর যুবলীগের সাধারন সম্পাদক ওহাব সরদার ও সাবেক লেবার সরদার ওয়ার্ড যুবলীগ নেতা ইমরান হোসেন ভুট্রো। এমনকি তারা কোন ডিলার না মিলারও না তারপরও সন্ত্রাসী ও মাস্তানি কায়দায় প্রতি নিয়তই ওএমএসের চাউল পাচার করছেন। গত শুক্রবার ১২০ বস্তা ওএমএসের চাউল পাচারের সময় নওহাটা বাজারে স্থানীয় আটক করলে ভুট্র ও ওহাব সরদার ২৫ হাজার টাকা জরিমানা দিয়ে ছাড় পায়। এসব ঘটনায় সচেতন মহল ও অসহায় ব্যক্তিরা চরম ক্ষুব্ধ। কারন গরীবের চাউল কিভাবে পাচার হয়, আর কর্মকর্তারা কি ঘুমিয়ে থাকেন এমন প্রশ্ন উপজেলা জুড়ে।

জানা গেছে, চলতি মাসের ১৩ সেপ্টেম্বর মঙ্গলবার গুদামের মুল গেট থেকে চাউল কিনার সময় বাধা দিলে পৌর যুবলীগের সাধারন সম্পাদক ওহাব সরদার ও ওয়ার্ড যুবলীগ নেতা ওই গুদামের সাবেক লেবার সরদার ভুট্রো ওসিএলএসডিকে হাতুড়ী দিয়ে মারতে তেড়ে যান। সংবাদ পেয়ে ওএমএস ডিলাররা উপস্থিত হলে তাদেরকে মারার হুমকিসহ মা মাসি তুলে অকাথ্য ভাযায় গালিগালাজ করেন।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ভুট্র এই গুদামের লেবার সরদার ছিলেন। রাজশাহীর বেশকিছু গণমাধ্যম কর্মীরা গুদামে এসে ট্রাক আনলোডের ছবি তুললে ভুট্র বাশ ও হাতুড়ী নিয়ে তাদের সাথে প্রচন্ড খারাম আচরন করেন। যার কারনে ভুট্রকে লেবার সরদার থেকে বাদ দেয় কর্তৃপক্ষ। তিনি এখন ওএমএসএর বিভিন্ন ডিলারের কাছ থেকে চাউল কিনে পাচার করছেন। শুধু তাই না গুদামের ভিতরে ও মুল গেটে অল্প দামে চাউল না দিলে তিনি তার চাউলের ঘরে তুলে ব্যাপক ভয়ভীতি দেখান। যার কারনে ভয়ে দিতে না চাইলেও দিতে হয়।

নাম প্রকাশ না করে এক ব্যক্তি জানান, সেদিন ভুট্র ও ওহাব একজন সরকারী কর্মকর্তার সাথে হাতুড় নিয়ে মারার জন্য যে ভাষা ব্যবহার করেছেন সেটা মারাত্মক অন্যায়, এরপরও তারা কিভাবে গুদামে যেতে পারে বুঝে আসে না। ভুট্রর সাথে গুদামের কিছু কর্মচারীর সখ্যতা রয়েছে। এজন্য তিনি দাপটের সাথে ব্যবস্থা করে যাচ্ছেন। ওই দিন আওয়ামীলীগের সিনিয়র নেতা ওএমএসএর ডিলার সুনিলকে যে ভাবে গালিগালাজ ও মেরে ফেলার হুমকি দেন। অথচ সুনিল কত দিন থেকে ব্যবসা করছেন কোনদিন কারো সাথে খারাপ কথা বা ব্যবহার করেছে কোন সাভাবিক জ্ঞানের ব্যক্তি এটা করতে পারেন না।

সুনিল জানান, আমি ভুট্রর কাছ থেকে ২০ হাজার টাকা পাব, সেটা চাওয়ার কারনে আমাকে প্রচন্ড অন্যায় ভাবে গালিগালাজ করেছেন।

ওহাব সরদার জানান, আমার ও ভুট্রর কাজে যে বাধা হবে তাকেই সায়েস্তা করা হবে। এই ওহাব স্বশিক্ষিত কৃষি বিজ্ঞানী নুর মোহাম্মাদের গবেষনার ধান নষ্ট করে দেন। এঘটনায় নুর মোহাম্মাদ আদালতে মামলা চলমান রয়েছে।

ভুট্র জানান, আমার কাছে সব সময় হাতুড় থাকে এটা আমার নিরাপত্তার জন্য। ওসিএলএসডিকে হাতুড় দিয়ে হামলা কেন করা হয়েছিল জানতে চাইলে তিনি জানান, গুদাম কর্মকর্তা কয়েকজনকে সকল ধরনের সুযোগ সুবিধা দিয়ে যাচ্ছেন। এজন্য তাকে শিক্ষা দেওয়া হয়েছে। কিন্তু অন্যরা না থাকলে ভুট্রর রুপ দেখতো। শুধু কর্মচারী ইসমাইলের জন্য রক্ষা পেয়েছে।

কর্মচারী ইসমাইল জানান, খাদ্য গুদাম সংরক্ষিত এলাকা সেখানে হাতুড়ী দিয়ে মারতে আসবে এটা সম্পূর্ণ আইন বিরোধী। আমি সবাইকে না থামালে এবং বের না করে দিলে হয় তো আরো কিছু ঘটতে পারত। সংরক্ষিত এলাকা তারপরও তাদের এমন আচরন কল্পনাতীত।

ওসিএলএসডি ওহেদুজ্জামান জানান, আসলে সে দিনের ঘটনা অত্যান্ত দু:খ্যজনক। আমার চাকুরীর জীবনে এমন ঘটনার সিকার হতে হয় নি। ভুট্র লেবার সরদার ছিলেন, আর সে এমন ঘটনার জন্ম দিলেন। অবশ্য তারা পরে এসে ভুল সিকার করেন।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্ততা পংকজ চন্দ্র দেবনাথ জানান, ঘটনা সম্পর্কে আমি অবগত না। ঘটনার সতত্য পেলে ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।

স্ব.বা/বা

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *