ইনস্টাগ্রাম-হোয়াটসঅ্যাপ ব্লক করেছে ইরান

তথ্যপ্রযুক্তি

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: ইনস্টাগ্রাম এবং হোয়াটসঅ্যাপ ব্লক করেছে ইরান। একই সঙ্গে ইন্টারনেট ব্যবহারেও কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে। দেশজুড়ে চলমান বিক্ষোভের কারণে এমন পদক্ষেপ নিয়েছে কর্তৃপক্ষ। সমপ্রতি ইরানে পুলিশ হেফাজতে মাশা আমিনি নামে এক তরুণীর মৃত্যু হয়।

ইরানের আধা সরকারি সংবাদ সংস্থা ফার্স নিউজ এজেন্সি জানিয়েছে, কর্মকর্তাদের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বুধবার সন্ধ্যা থেকে ইরানে ইনস্টাগ্রাম ব্যবহার করা যাচ্ছে না এবং হোয়াটসঅ্যাপ ব্যবহারেও সমস্যা হচ্ছে।

গত কয়েক বছরে ইরানে ফেসবুক, টুইটার, টেলিগ্রাম, ইউটিউব এবং টিকটকের মতো অন্যান্য সামাজিক মাধ্যম বøক করে রাখায় এই দুই মাধ্যম সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত হচ্ছিল।

এদিকে দেশজুড়ে চলমান বিক্ষোভে এখন পর্যন্ত কমপক্ষে নয়জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। এদের মধ্যে একজন পুলিশ সদস্যও রয়েছেন। অন্তত ১৫টি শহরে বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ হয়েছে।

সামাজিক মাধ্যমে পোস্ট করা ভিডিওতে পুলিশের গাড়িতে অগ্নিসংযোগ, বিক্ষোভকারীদের পুলিশকে ধাওয়া করা, গুলির শব্দ এবং মেয়েদের হিজাবে আগুন লাগানোর দৃশ্য চোখে পড়েছে।

এই ক্রমবর্ধমান বিক্ষোভে একেবারে সামনের কাতারে রয়েছেন ইরানের নারীরা। আন্দোলনকারীরা জানিয়েছেন, উরমিয়া, পিরানশাহর এবং কেরমানশাহে নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে নিহত তিন বিক্ষোভকারীর মধ্যে এক নারীও রয়েছেন। ইরানি কর্তৃপক্ষ বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে কেরমানশাহে দুজন বেসামরিক নাগরিকের পাশাপাশি শিরাজে একজন পুলিশ সহকারীকে হত্যার অভিযোগ এনেছে।

গত সপ্তাহের মঙ্গলবার মাশা আমিনিকে তেহরান থেকে আটক করা হয়। আটকের পর তিনি থানায় অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে তেহরানের একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় শহর সাকেজ থেকে আসা ২২ বছর বয়সী এই কুর্দি নারী তিনদিন কোমায় থাকার পর শুক্রবার হাসপাতালে মারা যান।

তেহরানে তার ভাইয়ের সঙ্গে থাকার সময় ইরানের কঠোর নৈতিকতা বিষয়ক পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে। তারা আমিনির বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছিল যে, তিনি হিজাব বা চাদর দিয়ে চুল ঢেকে রাখা এবং ঢিলেঢালা পোশাক পরার আইন ভঙ্গ করেছেন।

পুলিশের একটি ডিটেনশন সেন্টারে অজ্ঞান হয়ে যাওয়ার পরপরই তিনি কোমায় চলে যান। জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক ভারপ্রাপ্ত হাইকমিশনার নাদা আল-নাশিফ বলেছেন, পুলিশ আমিনির মাথায় লাঠি দিয়ে বাড়ি মারে এবং তাদের একটি গাড়ির সঙ্গে আঘাত করার পর তার মাথা ফেটে যায়।

তবে পুলিশ তার সঙ্গে দুর্ব্যবহারের কথা অস্বীকার করেছে এবং বলেছে যে হঠাৎ করেই তার হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে যায়। তবে তার পরিবার বলছে, তিনি শারীরিকভাবে সুস্থ ছিলেন।

এদিকে নাদা আল-নাশিফ বলছেন, মাশা আমিনির মর্মান্তিক মৃত্যু এবং নির্যাতন ও দুর্ব্যবহারের অভিযোগগুলো অবশ্যই স্বাধীন ও উপযুক্ত কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে অবিলম্বে, নিরপেক্ষভাবে এবং কার্যকরভাবে তদন্ত করা উচিত এবং এটা নিশ্চিত করতে হবে যে, তার পরিবার যেন সত্য ঘটনা জানতে পারে এবং তারা ন্যায়বিচার পাবে।

ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনির এক সহযোগী সোমবার আমিনির পরিবারের সঙ্গে দেখা করেছেন এবং তাদের বলেছেন, যেসব প্রতিষ্ঠান অধিকার লঙ্ঘন করেছে তাদের সবার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

স্ব.বা/রু

 

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *