প্রাইভেট শিক্ষকের পরকীয়া, এলাকায় পোস্টারিংয়ে স্ত্রীকে তালাকের হুমকি

অন্যান্য রাজশাহী লীড শিক্ষা

পুঠিয়া সংবাদদাতা : রাজশাহীর পুঠিয়া উপজেলার বিড়ালদহ মাজার পাড়া এলাকার মেহেদী হাসান নামের এক প্রাইভেট শিক্ষকের বিরুদ্ধে কৌশলে একাধিক ছাত্রীর সঙ্গে অনৈতিক সম্পর্ক গড়ার অভিযোগ উঠেছে। সেই সাথে সকল অপকর্মের প্রতিবাদে ওই শিক্ষকের ছবিসহ বিভিন্ন এলাকায় পোস্টারীং হওয়ায় স্ত্রীর ওপর নির্যাতনমূলক অপরাধে জড়িয়ে পড়ে । এজন্য  মঙ্গলবার (২৭ সেপ্টেম্বর) মেহেদীর শশুরকে থানায় ডাকেন এবং মেহেদীর শ্বশুর থানায় হাজির হয়ে লিখিত অভিযোগ দেয়।

বিষয়টি নিয়ে এলাকাজুড়ে অভিবাবকদের মাঝে উত্তেজনা ও সমালোচনা শুরু হয়েছে। মেহেদী হাসান উপজেলার বিড়ালদহ গ্রামের হাবিবুর রহমান (হবি) মন্ডলের ছেলে।

গত রোববার (২৪ সেপ্টেম্বর) রাতে তার ছবিসহ পোস্টার উপজেলার বিভিন্ন হাট-বাজার এলাকায় সাঁটানো হয়েছে বলে জানা গেছে।

নাজমুল হুদা নামের একজন শিক্ষার্থীর অভিভাবক বলেন, মেহেদী হাসান কৌশলে ছাত্রীদের সঙ্গে অনৈতিক সম্পর্ক করছে। মানহানীর ভয়ে কোনো ছাত্রী বা তার পরিবার প্রতিবাদ করেছে না। সে সুযোগে অভিযুক্ত শিক্ষক আরো বেপরোয়া হয়ে উঠেছে।

তিনি বলেন, সম্প্রতি ওই শিক্ষক একজন ছাত্রীকে নিয়ে উধাও হয়ে যায়। এরপর এক সপ্তাহ পর আবার বাড়ি ফিরে আসে। ওই ছাত্রীর পরিবারটি গ্রামে মানসম্মান হারানোর আশঙ্কায় কোথাও কোনো অভিযোগ দেয়নি।

নাম প্রকাশ না করা শর্তে বিড়ালদহ কলেজের এক ছাত্রী বলেন, তিনি একজন চরিত্রহীন ব্যক্তি। তার কাছে প্রাইভেট পড়তে গেলে নানা প্রলোভন দেখিয়ে অনৈতিক সম্পর্ক গড়ে তোলার চেষ্টা করেন। তার ফাঁদে যারা পড়েছে, তাদের সবার সর্বনাশ হয়েছে। আর এ কারণে ভুক্তভোগি পরিবারের লোকজনরা প্রতিবাদ স্বরুপ ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে পোস্টার লাগানো হয়েছে।

এদিকে প্রাইভেট শিক্ষক মেহেদীর স্ত্রী এসব খবর জানতে পেরে স্বামীর কাছে বিস্তারিত জানতে চাইলে মেহেদী তার স্ত্রীকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন শুরু করে। নিজ স্ত্রীকে দোষারোপ করে গৃহবন্দী করে রাখে এবং তালাক দেয়ার হুমকি দেয়। এমনকি মেহেদী তার শশুরকে মোবাইলে কল করে তার বাড়িতে আসতে বলে।

ফোনে হুমকি দিয়ে বলেন” আপনার মেয়ে আমার বিরুদ্ধে অপবাদ দিয়ে এলাকায় পোস্টারিং করিয়েছে, আপনি আসেন। আমি আপনার মেয়েকে তালাক দিয়ে দেব।

মেহেদীর শারীরিক ও মানুষিক নির্যাতনের শিকার গৃহবন্দী স্ত্রী গতকাল রাতে ৯৯৯ নম্বরে কল করে পুলিশের সাহায্য চাইলে পুঠিয়া থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সোহরাওয়াদী হোসেন প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করেন।

থানার (ওসি) সোহরাওয়াদী হোসেনের নির্দেশে এসআই রেজাউল করিম ও সঙ্গীয় ফোর্সসহ মেহেদীর বাড়িতে অভিযান পরিচালনা করে মেহেদীর গৃহবন্দী স্ত্রীকে উদ্ধার করে তার শশুরের হাতে তুলে দেন।

এ বিষয়ে প্রাইভেট শিক্ষক মেহেদী হাসান অভিযোগের বিষয়গুলো অস্বীকার করে বলেন, আমার কাছে অনেক ছাত্র-ছাত্রী পড়তে আসে। আর এটা, অনেক প্রাইভেট শিক্ষকরা পছন্দ করেন না। যারকারণে তারা আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ ছড়িয়ে দিচ্ছে। সেই সাথে তারা রাতের আঁধারে বিভিন্ন এলাকায় পোস্টারিং করছে। বিষয়টি নিয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এ ব্যাপারে থানার ওসি সোহরাওয়াদী হোসেন পোস্টারিং এর বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, লোক মারফত বিষয়টি জানার পর পুলিশ তদন্ত শুরু করেছেন। তবে কোনো ছাত্রীকে অনৈতিক কাজ করেছে এমন অভিযোগ এখনো কেউ থানায় করে নাই অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

স্ব.বা/ম

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *