পরিবারের দাবি নিঃশর্ত মুক্তি, পিবিআই বলছে আগে তদন্ত

অন্যান্য জাতীয়

স্বদেশ বাণী ডেস্ক: খুলনার আলোচিত রহিমা বেগম উদ্ধারের পরও এই মামলায় আটককৃতরা এখনও বের হতে পারেননি। পরিবারের সদস্যরা বলছেন, জামিন আবেদন করলেও আমরা এখন আমরা আটককৃতদের নিঃশর্ত মুক্তি চাই। একইসঙ্গে তারা মরিয়ম ও তার মায়ের উপযুক্ত শাস্তি দাবি করছেন। তবে পিবিআই বলছে, রহিমা বেগম যেখান থেকে উদ্ধার হয়েছেন তার সঙ্গে আটককৃতদের সংশ্লিষ্টতা রয়েছে কিনা সে তদন্ত শেষ করে আদালতে প্রতিবেদন দিলে তবেই তাদের মুক্তি মিলবে। তবে তার আগে আদালত চাইলে তাদের জামিন হতে পারে।

গত ২৪ সেপ্টেম্বর ফরিদপুর থেকে জীবিত উদ্ধার করা হয় রহিমা বেগমকে। পরে গ্রেফতারকৃতদের স্বজনরা ২৭ সেপ্টেম্বর আদালতে জামিন আবেদন করেন। কিন্তু সংশ্লিষ্ট আদালতের বিচারকের স্বামীর হৃদরোগ হওয়ার কারণে ওইদিন শুনানি হয়নি। আগামী ৪ অক্টোবর গ্রেফতার পাঁচ জনের পক্ষে জামিন আবেদনের শুনানির দিন ধার্য রয়েছে।

গ্রেফতারকৃতদের মধ্যে খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রকৌশলী গোলাম কিবরিয়ার স্ত্রী আয়েশা বলেন, রহিমার মুক্তির আগে নি¤œ আদালতে জামিন আবেদন মঞ্জুর হয়নি। পরে রহিমা বেগম জীবিত অবস্থায় উদ্ধার হলে ২৭ সেপ্টেম্বর চার জনের পক্ষে মহানগর দায়রা জজ মাহমুদা খানমের আদালতে জামিন আবেদন করা হয়। শুনানির পরবর্তী তারিখ ৪ অক্টোবর নির্ধারণ করা হয়।

রহিমা বেগম ও মরিয়ম মান্নানের গ্রেফতার দাবি করেছেন আটক রফিকুল ইসলাম পলাশের স্ত্রী মরিয়ম হাসনাত মৌ। তিনি বলেন, রহিমা বেগম উদ্ধারের পর এখন পর্যন্ত আমরা জামিনের আবেদন করিনি। আগামী তারিখে জামিনের আবেদন করার চিন্তা রয়েছে। তবে, আমরা এখন শুধুই জামিন নয়, গ্রেফতারকৃত ৫ জনের নিঃশর্ত মুক্তি চাই। একইসঙ্গে আমি চাই বিনা দোষে পাঁচ জন জেল খাটার বদলা হিসেবে মরিয়ম মান্নান ও তার মা রহিমা বেগমকে যেন কারাগারে পাঠানো হয়।

মরিয়ম মান্নান এরই মধ্যে পিবিআইতে যোগাযোগ করে মামলাটি আর তারা চালাতে চান না বলে জানিয়েছেন। তিনি বলেন, আমরা চাইলেই তো মামলার তদন্ত বন্ধ হবে না। তদন্ত তার নিজস্ব গতিতে চলবে। তদন্তে যদি বের হয় আমার মায়ের বা মাকে খুঁজতে গিয়ে আমাদের কোনও দোষ হয়েছে তবে আমি মাথা পেতে নেবো। আমি মাকে খুঁজেছিলাম, মাকে পেয়েছি। আমি মিসিং মামলা করেছি। কে বা কারা দায়ী বা কারও শাস্তির দাবি আমি করিনি।

পিবিআই পুলিশ সুপার সৈয়দ মুশফিকুর রহমান বলেন, রহিমা বেগম অক্ষত অবস্থায় উদ্ধার হয়েছেন। এখনও আমরা তদন্ত করছি। তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত সত্যটা জানতে অপেক্ষা করতে হবে। আমরা তদন্ত শেষে প্রতিবেদন দেবো। তবে গ্রেফতারকৃতদের মুক্তি পাওয়া না পাওয়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন আদালত।

গত ২৭ আগস্ট রাত সাড়ে ১০টার দিকে বাড়ির নলক‚পে পানি আনতে গিয়ে আর ফিরে আসেননি। একঘণ্টা পার হলেও তিনি বাসায় ফিরে না আসলে সন্তানেরা থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন। এসময় বাসার নিচে রাস্তায় মায়ের ফেলে যাওয়া ওড়না-জুতা পেয়েছে বলেও দাবি করেন তারা। মামলার তদন্তকালে পুলিশ ও র‌্যাব ১২ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ছয় জনকে গ্রেফতার করে। এরা হলেন খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) প্রধান প্রকৌশল কার্যালয়ের সহকারী প্রকৌশলী মো. গোলাম কিবরিয়া, নিখোঁজ গৃহবধূর দ্বিতীয় স্বামী বেলাল হাওলাদার, দৌলতপুর মহেশ্বরপাশা বণিকপাড়া এলাকার মহিউদ্দিন, পলাশ, জুয়েল ও হেলাল শরীফ। পরবর্তীতে গত ২৪ সেপ্টেম্বর ফরিদপুর থেকে জীবিত উদ্ধার হন রহিমা বেগম।

স্ব.বা/রু

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *