তানোরে মাদ্রাসার নৈশ প্রহরীর মাদক সেবন স্কুল কেরানীর পরকিয়া মারপিট

রাজশাহী

তানোর প্রতিনিধি: রাজশাহীর তানোরে এক মাদ্রাসার নৈশ প্রহরীর বিরুদ্ধে মাদক সেবন ও স্কুল কেরানীর পরকিয়ার অপবাদে মারপিট থানায় অভিযোগ এবং মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে ধামাচাপা দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। উপজেলার পাচন্দর ইউনিয়ন(ইউপির) চাদপুর মাদ্রাসার নৈশ প্রহরী হান্নানের বিরুদ্ধ মাদক সেবন মারপিট ও চাদপুর স্কুলের কেরানী মাইনুলের বিরুদ্ধে পরকিয়া মাদক সেবনের ঘটনাগুলো ঘটে রয়েছে। এঘটনায় চাদপুর স্কুলের কেরানি মাইনুল থানায় অভিযোগ করেন নৈশ প্রহরী হান্নানের বিরুদ্ধে। অভিযোগের বিষয়টি হান্নান জানতে পেরে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ দিতে চাইলে স্কুলের প্রধান শিক্ষক থানায় বসে রফাদফা ও ধামাচাপা দিতে মোটা অংকের টাকা দেন বলেও একাধিক সুত্র নিশ্চিত করেন। এখবর ছড়িয়ে পড়লে এলাকায় ব্যাপক চান্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। ফলে দুজনের শাস্তির দাবিতে বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছেন শিক্ষক শিক্ষার্থী থেকে শুরু করে অভিভাবক মহল,সেই সাথে স্থানীয়দের মাঝেও বিরাজ করছে চরম অসন্তোষ ।

চাদপুর স্কুলের কেরানী মাইনুল জানান, আমি নাকি নৈশ প্রহরীর বাড়িতে চুরি করতে গেছি। সেই অপবাদে আমাকে নৈশ প্রহরী হান্নানসহ তাদের লোক মারপিট করে। হান্নান মাদ্রাসায় ইয়াবা গাজা সেবন করেন নিয়োমিত। তার ইয়াবা সেবনের ছবি আমি ফেসবুকে ছেড়েছিলাম এবং থানায় অভিযোগও করা হয়েছিল। আবার মিমাংসা করা হয়েছে।
নৈশ প্রহরী হান্নান জানান, আমার বাড়িতে টাকা চুরি করতে আসে মাইনুল। বুঝতে পেরে উত্তম মাধ্যম দেওয়া হয়েছে। এখন সে আমার পরিবারের সাথে পরকিয়ার অপবাদ ছড়াচ্ছে।

স্থানীয়রা জানান, কেরানী মাইনুল ও হান্নানের এত মিল কল্পনাতীত। মাইনুল হান্নানের বাড়িতে যায় পরকিয়ার ডাকে। তাকে পরকিয়ার জন্যই মারা হয়েছে এবং সে তার স্ত্রীর সাথে পরকিয়া করে বলেও আমাদের কাছে এসে বলে।
চাদপুর মাদ্রাসার সুপার বেলাল উদ্দিন জানান, গত রোববারে ঘটনা জানতে পেরে নৈশ প্রহরীকে কারন দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে এবং সোমবারে ম্যানেজিং কমিটির মিটিংয়ে তার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত গ্রহন করা হবে। এর আগেও শরীর চর্চা শিক্ষক মাদক সেবন করার অপরাধে তাকে চাকুরী থেকে বাদ দেওয়া হয়েছিল।
মাদ্রাসা ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান আবু বাক্কার সিদ্দিক জানান, সোমবারে মিটিংয়ে হান্নান তার ভুলের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করে হাত পা ধরে পড়ে যান। তাকে নোটিশ ও ২০০ টাকার নন জুডিশিয়াল স্ট্যাম্পে মুচলেকা দিয়ে সে নিজের ইচ্ছায় কান ধরে বলেছে আমি এসব কাজ আর করব না। আপনি তাকে সাসপেন্ড করবেন বলেছিলেন জানতে চাইলে তিনি জানান, তিনটি নোটিশের পর সাসপেন্ড করতে হয়। আপনি মুচলেকা নিয়েছেন তাহলে সাসপেন্ড কি ভাবে হবে প্রশ্ন করা হলে উত্তরে বলেন অবশ্যই করা যাবে, তারমত নৈশ প্রহরীর জন্য মাদ্রাসার বদনাম হবে সেটা মানা যাবে না। তাকে সাসপেন্ড করা হবে।

চাদপুর স্কুলের প্রধান শিক্ষক আবু হেনা ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে জানান, আমার স্কুলের কেরানী মাইনুলকে মেরেছিল মাদ্রাসার নৈশ প্রহরী হান্নান। এঘটনায় মাইনুল থানায় অভিযোগ করেছিল উভয়পক্ষ বসে আপোশ মিমাংসা করে দেওয়া হয়েছে। কি কারনে কেন মেরেছিল জানতে চাইলে তিনি জানান হান্নানের ইয়াবা সেবনের ছবি তুলেছিল এজন্য মাইনুলকে মারে। শুনেছি মাইনুল পরকিয়ার অপবাদ ছড়ানোর কারনে নাকি মারা হয়েছে জানতে চাইলে তিনি তেমন কিছু না বলে এড়িয়ে গিয়ে জানান জালিয়াতি করে মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠা করেছে ১৯৯৫ সালে আর দেখানো হয়েছে ১৯৮৮ সালে। সেখানে অপকর্ম হবে এটাই স্বাভাবিক, মাইনুল স্কুলে নাকি মাদক সেবন করেন জানতে চাইলে তিনি অস্বীকার করেন।

এসব বিষয়ে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার সিদ্দিকুর রহমানের মোবাইলে একাধিকবার ফোন দেওয়া হলেও রিসিভ করেন নি। অবশ্য না করার কথা, কারন তাকে ফোন দেওয়া যাবে না এবং সাক্ষাত করতে হলেও আগে আবেদন জমা দিতে হবে তাহলে বুঝে নেন একজন শিক্ষা কর্মকর্তার কত ক্ষমতা।

স্ব.বা/রু

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *