তানোরে মাদ্রাসা শিক্ষক সমিতির বার্ষিক সম্মেলন নিয়ে মিশ্রপ্রতিক্রিয়া

রাজশাহী

তানোর প্রতিনিধি: রাজশাহীর তানোরে মাদ্রাসা বন্ধ রেখে নির্দলীয় শিক্ষক কর্মচারী বার্ষিক সম্মেলন নিয়ে মিশ্রপ্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। বৃহস্পতিবার সরনজাই দাখিল মাদ্রাসা মাঠে হয় বার্ষিক সম্মেলন। সকাল থেকে দুপুর আড়াইটা পর্যন্ত চলে সভা ও ভুড়ি ভোজ।

শিক্ষক সমিতির উপদেষ্টা স্থানীয় সংসদকে অবহিত না করায় সহসভাপতি সহ বেশ কিছু মাদ্রাসা সভা বয়কট করেন। আবার নির্দলীয় বলা হলেও বিএনপির সাবেক সভাপতি সরনজাই ইউপি চেয়ারম্যান মোজাম্মেল হক খানকে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দিতে দেখা যায়। মাদ্রাসা শিক্ষক সমিতির সভাপতি ও সম্পাদকের এমন কান্ডে চরম বিব্রত শিক্ষক মহল। ফলে সম্মেলনের আয়োজক ও সমিতির দায়িত্বশীল দের চরম শাস্তির দাবি তুলেছেন। কারন সমিতির উপদেষ্টা স্থানীয় সাংসদ বা তার কোন প্রতিনিধিই জানেন না। অথচ মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার সিদ্দিকুর রহমাব বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন। কিন্তু ব্যানারে প্রধান অতিথি ইউএনও থাকলেও উপস্থিত হন নি। শুধু তাই না এমপি বা উপজেলা চেয়ারম্যান কে অবহিত না করায় সভা বয়কট করেন জিওল মাদ্রাসার সুপার আসলাম উদ্দিন।
জানা গেছে, উপজেলায় ২৮ টি মাদ্রাসা রয়েছে। এসব মাদ্রাসার শিক্ষক কর্মচারী সমিতি গঠন করা হয় এবং এর পৃষ্ঠ পোশক বা উপদেষ্টা স্থানীয় সাংসদ ফারুক চৌধুরী। অথচ তাকে বা তার কোন প্রতিনিধি কে সভায় ডাকা হয়নি। যার কারনে একাধিক মাদ্রাসা সভা বয়কট করে এর তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছেন।

বেশকিছু শিক্ষকররা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, আমরা সভাপতি ও সম্পাদককে একাধিকবার বলেছিলাম এমপি, নয় তো তার কো প্রতিনিধিককে সভা প্রধান অতিথি করা হোক। কিন্তু আমাদের কোন কথায় শোনেন নি। তাদের অবস্থা বা কথা শুনলে মনে হবে এমপি নেই, কারো স্বার্থ হাসিলের জন্য সভাপতি ও সম্পাদক মরিয়া। যদি নির্দলীয় সভা হয় তাহলে মোজাম্মেল চেয়ারম্যান কেন, এর সব দায় দায়িত্ব সভাপতি সিরাজুল ইসলাম, সম্পাদক আব্দুল হামিদ দায়ী। আমাদের মনে হয় সভাপতি তার কোন উদ্দেশ্য হাসিলের জন্য নিজেদের মধ্যে দ্ব›দ্ব সৃষ্টি করছেন।
সরেজমিনে বৃহস্পতিবার দুপুরের আগে মাদ্রাসায় গিয়ে দেখা যায়, সামনে শতাধিক মটরসাইলেল রাখা হয়েছ, চলছে রান্নাবাড়ার কাজ। দেওয়া যোহর নামাজের বিরতি। এরপর আসেন মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার। বিরতির পর শুরু হয় আলচনা সভা। সরনজাই দাখিল মাদ্রাসার সুপার ও সমিতির সভাপতি সিরাজুল ইসলামের সভাপতিত্বে এবং গোকুল দাখিল মাদ্রাসার সুপার সমিতির সাধারন সম্পাদক আব্দুল হামিদের পরিচালনায় বক্তব্য রাখেন সরনজাই ইউপির চেয়ারম্যান মোজাম্মেল হক, চিনাশো সিনিয়র মাদ্রাসার প্রিন্সিপ্যাল হারুনুর রশিদ, শিক্ষা অফিসার সিদ্দিকুর রহমান। মোজাম্মেল চেয়ারম্যান মাদ্রাসা শিক্ষা কে প্রধান্য দিয়ে বলেন, মাদ্রাসায় পড়লেই বর্তমান সরকার জঙ্গির তকমা লাগিয়ে দিচ্ছে।

সভা শেষে চিনাশো সিনিয়র মাদ্রাসার প্রিন্সিপ্যাল হারুনুর রশিদের কাছে জানতে চাওয়া হয় সমিতির উপদেস্টা এমপি, তিনি বা তার কোন প্রতিনিধি অবহিত না কেন, তিনি জানান সমিতির সভাপতি ও সম্পাদক নির্দলীয় সভা করবেন এজন্য কাউকে জানায়নি, আবার চেয়ারম্যান মোজাম্মেল বক্তব্য দিল এটা বিব্রতকর।

সরনজাই মাদ্রাসার এক শিক্ষক জানান, এমপি স্কুল শিক্ষক সমিতি করে দিয়েছিল সেটা ভেঙ্গে গেছে, আমরা তার কথা মত সমিতি করলে আমাদের টাও ভেঙ্গে যেত। তার এমব কথার প্রেক্ষিতে স্কুল শিক্ষক সমিতির সভাপতি জিল্লুর রহমান কে বিষয়টি অবহিত করলে তিনি এর তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে বলেন, অন্তত আটটি মাদ্রাসার সুপার ফোন করে বলেছে এমপিকে অবহিত না করায় সভা বয়কট করা হয়েছে।

মাদ্রাসা সমিতির সভাপতি সরনজাই দাখিল মাদ্রাসার সুপার সিরাজুল ইসলামের কাছে জানতে চাওয়া হয় সকল প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে ও এমপি বা তার কোন প্রতিনিধি কে অবহিত করা হয়নি তিনি সহ সম্পাদক হামিদ জানান আমরা কি করব না করব সেটা আমাদের ব্যাপার। এমপিকে কি বলতে হবে আমরা দেখব। নির্দলীয় সম্মেলন তাহলে মোহাম্মেল চেয়ারম্যান কেন প্রশ্ন করা হলে তিনি জানান তার জায়গাতে সভা করা হচ্ছে, তাকে না ডেকে উপায় নাই। তবে মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার এসব বিষয়ে কোন মন্তব্য করেন নি।

স্ব.বা/বা

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *