বাঘায় ড্রেনের টপ স্লাবের মাঝখানের ফাঁকা জায়গায় পড়ে গুরুতর আহত নারি ভিক্ষুক

রাজশাহী

বাঘা (রাজশাহী) প্রতিনিধি: বাঘা পৌর এলাকায় নির্মিত ড্রেনের টপ স্লাব দিয়ে হেঁটে যাওযার সময়,টপ স্লাবের মাঝ খানের ফাঁকা জায়গায় পড়ে আকলিমা বেওয়া (৬০) নামের এক নারি ভিক্ষুকের মাথার পেছনে ও থুতনিতে লেগে গুরুতর আহত হয়েছে। তাকে উদ্ধার করে প্রথমে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগে নেওয়া হয়। ডাঃ মল্লিকা সরকার জানান,জরুরি চিকিৎসার জন্য পরে রাজশহাী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। আহত আকলিমা বেওয়া উপজেলার তেপুকুরিয়া গ্রামের মৃত দেরাজ প্রমানিকের স্ত্রী। রোববার(২৭-১১-২০২২) বাঘা বাজার এলাকার কলেজ মার্কেটের এসএম ক্লথ ষ্টোরের সামনে এই ঘটনা ঘটে।
এসএম ক্লথ ষ্টোরের ব্যবসায়ী জাহাঙ্গীর হোসেন জানান, ড্রেনের টপ স্লাবের মাঝখানের ফাঁকা জায়গায় কোন কাজ না করে ফেলে রাখা হয়েছে। নিরাপত্তার স্বার্থে নিজেরাই কাঠ দিয়েছেন। কয়েকদিন আগেও ড্রেনের পাশ দিয়ে বাই সাইকেল নিয়ে চলার এক স্কুল ছাত্র আহত হয়েছে বলে জানান জাহাঙ্গীর হোসেন ।

ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কোকন কন্সট্রাকশন এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং লিমিটেড এর মোঃ মনিরুজ্জামান জানান,অনাকাঙ্খিত দুর্ঘটনার খবর শুনেছি। তার দাবি, লিপটিন স্লাব বসানোর জন্য ফাঁকা জায়গায় কাঠ দিয়ে রাখা হয়। কিন্তু পরে সেই কাঠ পাওয়া যায়না। ড্রেনের টপ স্লাবের মাঝে মাঝে ফাঁকা রাখার কারণ হলো,নীচে সাটারিং এর কাঠ থাকে। টপ স্লাবের কাজ শেষ হলে ফাঁকা সেই জায়গা দিয়ে কাঠ বের করে লিপটিন স্লাব বসানো হয়। এতে সময় লাগে। বাজার এলাকায় কাজ করতে গিয়ে ব্যবসায়ী, সড়ক ও জনপদ বিভাগের বাধায় কাজে আগাতে পারেননি বলে জানান মোঃ মনিরুজ্জামান ।

জানা গেছে, স্থানীয় সরকার ও পল্লী উন্নয়ন মন্ত্রনালয়ের স্থানীয় সরকার বিভাগের অধীনে বাংলাদেশের ৩০টি পৌরসভার পানি সরবরাহ ও স্যানিটেশন প্রকল্পের কাজের মধ্যে ৭(সাত) কোটি ৩০ লক্ষ টাকা ব্যয়ে, বাঘা পৌর এলাকার বঙ্গবন্ধু চত্বর থেকে বাঘা বাজার হয়ে পূর্বে বটতলা এলাকা পর্যন্ত ১৭৮৪ মিটার ড্রেন ণির্মানের কাজটি পায় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কোকন কন্সট্রাকশন এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং লিমিটেড। জিওবি,বিশ্বব্যাংক, এআইআইবি’র অর্থায়নে কাজটি বাস্তবায়ন করছে, জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলী অধিদপ্তর। ২০ ফেব্রুয়ারি শুরু হওয়া নির্মাণকাজ শেষ হওয়ার কথা রয়েছে ২৯ ডিসেম্বরের মধ্যে। কিন্তু এখন পর্যন্ত কাজ হয়েছে ৭০০ মিটারের মতো । এই কাজে, টপ স্লাবের মাঝে মাঝে লিপটিন স্লাব বসানোর জন্য ফাঁকা রাখা হয়েছে। কিন্তু নিরাপত্তার ব্যবস্থা না থাকার কারণে দুর্ঘটনার স্বিকার হচ্ছে পথচারিরা।

সরেজমিন দেখা গেছে, মাটি কেটে খুঁড়ে রাখার ফলে কোন কোন জায়গায় রাস্তার অংশ ভেঙে গেছে। এতে ভোগান্তি বেড়েছে সড়কে চলাচলকারি যানবাহনসহ মানুষের।

উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান,আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন,রাস্তার সীমানায় নির্মিত দোকান উচ্ছেদ না করে, ড্রেন নির্মাণের কাজ চলছে। সড়ক প্রশস্তকরণের সময় অবৈধ দখল আগের মতোই থেকে যাবে। কাজের মান নিয়েও প্রশ্ন তোলেন এই সাবেক জনপ্রতিনিধি।
অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক ওহিদুর রহমান বলেন,রাজশাহীর পুঠিয়া উপজেলার বানেশ্বর থেকে চারঘাট-বাঘা হয়ে নাটোরের লালপুর ও পাবনার ঈশ্বরদী পর্যন্ত ৫৪ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যর সড়ক প্রশস্তকরণের কাজ চলমান। কিন্তু সরকারি সড়কের সীমানা নির্দ্ধারন ও অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ না করেই বাঘা পৌরসভা এলাকায় ড্রেন ণির্মানের কাজ শুরু করা হয়েছে।

ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের দাবি,পৌরসভা কর্তৃক দেখানো সীমানায় কাজ করা হচ্ছে। বাঘা পৌর মেয়র আব্দুর রাজ্জাক বলেন, সরকারি সীমানা নির্দ্ধারন পূর্বক কাজ করতে বলা হয়েছে। এ বিষয়ে সুষ্ঠ ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানিয়েছেন, রাজশাহীর সড়ক ও জনপদ অধিদপ্তরের নির্বাহি প্রকৌশলী আব্দুল হাকিম।

স্ব.বা/বা

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *