বায়োলজিক ওষুধের ব্যবহার বাড়াতে সব পর্যায়ে সচেতনতা প্রয়োজন

জাতীয়

স্বদেশ বাণী ডেস্ক: ডায়াবেটিস, বাত এবং সোরিয়াসিসের মতো রোগের চিকিৎসায় কার্যকরী ভূমিকা পালন করতে পারে বায়োলজিক ওষুধ। তবে এ জন্য সবার (ডাক্তার, রোগী ও সংশ্লিষ্টদের) মাঝে সচেতনতা বাড়ানো প্রয়োজন বলে মত দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। বায়োলজিক মেডিসিন সম্পর্কে সচেতন করার লক্ষ্যে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক, সরকারি নিয়ন্ত্রক সংস্থা, নীতি নির্ধারক এবং বিভিন্ন অংশীজনদের অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিত হয়েছে ‘প্রথম বায়োলজিক সামিট-২০২২’। আজ (বৃহস্পতিবার) রাজধানীর প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁও হোটেলে নোভারটিসের উদ্যোগে এই সামিট অনুষ্ঠিত হয়।

অনুষ্ঠানে বক্তারা বায়োলজিক মেডিসিনের বিভিন্ন ইতিবাচক দিক, এর ব্যবহারবিধি ও ভবিষ্যৎ সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা করেন। অনুষ্ঠানে এক্সপার্ট প্যানেল হিসেবে ছিলেন কনসালটেন্ট ফিজিসিয়ান জেনারেল, বাংলাদেশ আর্মড ফোর্স এবং ডিরেক্টর জেনারেল অফ মেডিকেল সার্ভিসেস -ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট মেঃ জেঃ প্রফেসর ড. মোঃ আজিজুল ইসলাম, ওষুধ প্রশাসনের মহাপরিচালক মেঃ জেঃ মোঃ ইউসুফ, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মহাপরিচালক ব্রিঃ জেঃ মোঃ নাজমুল হক এবং দেশের বরেণ্য বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকবৃন্দ।

অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য প্রদান করেন নোভারটিস বাংলাদেশের কান্ট্রি প্রেসিডেন্ট ডা. রিয়াদ মামুন প্রধানী। এছাড়াও, অনুষ্ঠানে বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং ও বায়োটেকনোলজি ডিপার্টমেন্টের প্রফেসর ও প্রাক্তন চেয়ারম্যান প্রফেসর শরীফ আখতারুজ্জামান এবং নোভারটিস ফার্মাসিউটিকাল সুইজারল্যান্ড এর সিনিয়র গ্লোবাল মেডিকেল অ্যাফেয়ার্স ডিরেক্টর ড. প্যাট্রিসিয়া পারটেল।

অনুষ্ঠানে নোভারটিস বাংলাদেশের কান্ট্রি প্রেসিডেন্ট ডা. রিয়াদ মামুন প্রধানী বলেন, “বায়োলজিক মেডিসিনগুলো নির্দিষ্ট রোগের সমাধানের লক্ষ্যেই তৈরি করা হয়ে থাকে। বায়োলজিক মেডিসিনই আগামী দিনে বহুল ব্যবহৃত হবে। এর চিকিৎসা প্রক্রিয়া এবং উপকারিতা নিয়ে চিকিৎসকগণ এবং রোগীদের আরও সচেতনতা প্রয়োজন। বায়োলজিক দীর্ঘমেয়াদি ফলপ্রসূ চিকিৎসা তবে আর্থিক খাতের প্রতিষ্ঠান এবং সরকারের বিভিন্ন অংশীজনরা এগিয়ে আসলে আমাদের দেশে আরও বিস্তৃত পরিসরে এই চিকিৎসা পদ্ধতি প্রয়োগ করা সম্ভব বলে আমি মনে করি।“

১৯ শতক থেকে বায়োলজিক এর ব্যবহার শুরু হয়, যার ফলে বিশ্বব্যাপী বিভিন্ন রোগের লক্ষ লক্ষ রোগীদের সেবা প্রদান করা সম্ভব হচ্ছে। বাংলাদেশে, ২০০০ সালের গোড়ার দিকে বায়োলজিকের প্রথম ব্যবহার শুরু হয়। গত ২ দশকে চিকিৎসা জগতের আমুল পরিবর্তন হয়েছে । কেমিক্যাল কম্পাউন্ড থেকে যথাক্রমে বায়োলজিক্স, কোষ এবং জিন থেরাপিতে স্থানান্তরিত হয়েছে। বায়োলজিক্স ব্যবহারের ভবিষ্যত সম্ভাবনা যথেষ্ট উজ্জল। সারা বিশ্বের চিকিৎসকরা বায়োলজিক্সের ব্যবহার বেছে নিয়েছে যার ফলস্রুতিতে রোগীরা নানাবিধ সুবিধা পাচ্ছে। কিন্তু বিভিন্ন চ্যালেঞ্জের কারণে বাংলাদেশে বায়োলজিক এর ব্যবহার এখনও সীমিত। রোগীদের আরো টার্গেটেড এবং কার্যকর চিকিৎসা হিসেবে ভবিষ্যতে আরো অনেক বায়োলজিক্ আসছে। এর যথার্থ ব্যবহারের জন্য বাংলাদেশের দ্রুত প্রস্তুতি গ্রহণ প্রয়োজন।

এরই পরিপ্রেক্ষিতে বায়োলজিক সামিট অনুষ্ঠিত হয়। বায়োলজিক ওষুধগুলিকে আরও ভালোভাবে বোঝা, চ্যালেঞ্জগুলো চিহ্নিত করা এবং বাংলাদেশকে আগামী দিনে বায়োলজিক ব্যবহারের জন্য প্রস্তুত করে তোলাই এই আয়োজনের লক্ষ্য । আর তারই ফলস্বরূপ দেশের বিশেষজ্ঞ চিকিত্সক, নিয়ন্ত্রক সংস্থা এবং নীতি নির্ধারকরা এই সম্মেলনে যোগ দিয়েছেন যাতে করে তাদের অভিজ্ঞতা এবং পরামর্শের আলোকে দেশ বায়োলজিক ব্যবহারে প্রস্তুত হতে পারে।

স্ব.বা/রু

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *