পোষা কুকুরের ওপর রাসায়নিক অস্ত্র পরীক্ষা করেছিলেন লাদেন

আন্তর্জাতিক লীড

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: পোষা কুকুরের ওপর রাসায়নিক অস্ত্র পরীক্ষা করেছিলেন জঙ্গিগোষ্ঠী আল-কায়েদার প্রতিষ্ঠাতা ওসামা বিন লাদেন। স¤প্রতি এমনই বিস্ফোরক দাবি করেছেন যুক্তরাষ্ট্রে নাইন-ইলেভেন হামলার প্রধান এই পরিকল্পনাকারীর এক পুত্র।

তার দাবি, ছোটবেলায় আফগানিস্তানে থাকার সময় বিন লাদেনই তাকে আগ্নেয়াস্ত্র চালানোর প্রশিক্ষণ দিয়েছিলেন। এমনকি ছেলেও নিজের (লাদেনের) পদাঙ্ক অনুসরণ করুক, এমনটিই চাইতেন আল-কায়েদার এই প্রতিষ্ঠাতা।

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য সানকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এসব দাবি করেছেন ওসামা বিন লাদেনের চতুর্থ ছেলে ওমর। বিশ্বকাপের খেলা উপলক্ষে কাতারে গিয়ে সংবাদমাধ্যমকে এই সাক্ষাৎকার দেন তিনি। ওমর দাবি করেছেন, তিনি পারিপার্শ্বিক ঘটনার একজন ভিকটিম এবং নিজের বাবার সাথে অতীতের সেই ‘খারাপ সময়কে’ ভুলে যাওয়ার চেষ্টা করেছেন তিনি।

সংবাদমাধ্যমটি বলছে, ৪১ বছর বয়সী লাদেনপুত্র ওমর বর্তমানে স্ত্রী জাইনার সঙ্গে ফ্রান্সের নরম্যান্ডিতে বসবাস করেন। নিউইয়র্কে ১১ সেপ্টেম্বরের সন্ত্রাসী হামলার কয়েক মাস আগে অর্থাৎ ২০০১ সালের এপ্রিলে আফগানিস্তান ছেড়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন তিনি।

নিজের বাবা লাদেনের কাছ থেকে বিদায় নেওয়া সম্পর্কে সাক্ষাৎকারে ওমর বলেন, ‘আমি বিদায় বলেছিলাম এবং তিনিও বিদায় জানান। আমার কাছে সেই পৃথিবীই যথেষ্ট ছিল। আমি চলে যাচ্ছি তাতে তিনি খুশি ছিলেন না।’

এরপরই পোষা প্রাণীর ওপর রাসায়নিক পরীক্ষার বিষয়টি উল্লেখ করেন ওমর। লাদেনের ঘনিষ্ঠ এক ভৃত্য সেই পরীক্ষা চালিয়েছিল উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আমি এটা দেখেছি। তারা আমার কুকুরের ওপর এই পরীক্ষা করেছে এবং আমি খুশি ছিলাম না। আমি যতটা পারি সব খারাপ সময় ভুলে যাওয়ার চেষ্টা করি। এটা খুব কঠিন। সব সময় কষ্ট পাই।’

তবে এই পরীক্ষা কেন করা হয়েছিল বা আল কায়দার কোনও রাসায়নিক হামলার ছক ছিল কিনা, তা স্পষ্ট করেননি লাদেন পুত্র।

অবশ্য ছোটবেলায় অত্যাধুনিক অস্ত্র একে-৪৭ চালানো হাতে পরবর্তী জীবনে তুলি ধরেছিলেন ওমর। আর সেই থেকেই তিনি বেশ নামী চিত্রশিল্পী। এই শিল্পীর হাতে আঁকা এক একটি ছবি সাড়ে আট হাজার পাউন্ডেও বিক্রি হয়।

নিজের ছবি আঁকার কাজ সম্পর্কে ওমর বলছেন, ‘হাতে আঁকা এসব ছবি আমাকে একটি নিরাপদ অনুভূতি দেয়, যেন আমি অস্পৃশ্য।’

সৌদি আরবে ১৯৮১ সালের মার্চে লাদেনের প্রথম স্ত্রী নাজওয়ার গর্ভে জন্মগ্রহণ করেন ওমর। তিনি বলছেন, ‘আমার বাবা আমাকে কখনোই আল-কায়েদায় যোগ দিতে বলেননি, কিন্তু তিনি আমাকে বলেছিলেন- পরবর্তীতে তার কাজ চালিয়ে যাওয়ার জন্য আমিই তার নির্বাচিত ছেলে। জবাবে আমি সেই জীবনের জন্য উপযুক্ত নই বলে জানালে তিনি হতাশ হয়েছিলেন।’

কেন বিন লাদেন তাকে তার উত্তরাধিকারী হিসেবে বেছে নিয়েছেন, এমন প্রশ্নের জবাবে ওমর ব্রিটিশ এই সংবাদপত্রকে বলেন: ‘আমি জানি না, হয়তো আমি বেশি বুদ্ধিমান ছিলাম, তাই আমি আজ বেঁচে আছি।’

ওমরের ৬৭ বছর বয়সী স্ত্রী জাইনা সংবাদপত্রকে বলেছেন, ওমর তার ‘হৃদয়ের সঙ্গী’ এবং তিনি ‘খুব খারাপ ট্রমা, স্ট্রেস এবং প্যানিক অ্যাটাকে’ ভুগেছেন।

তিনি বলছেন, ‘ওমর একই সাথে ওসামা বিন লাদেনকে ভালোবাসে এবং ঘৃণা করে। লাদেনকে সে ভালবাসে কারণ তিনি তার বাবা। কিন্তু সে (লাদেন) যা করেছে সেটার জন্য তাকে ঘৃণা করে ওমর।’

স্ব.বা/বা

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *