কুলি থেকে নাইটগার্ড সাইদুরের কোটিপতি ও মেয়র হয়ে উঠার কাহিনী 

রাজশাহী
তানোর প্রতিনিধি: একসময় ছিলেন মানুষের মালামাল বহনকারী কুলি,পাঁচ দশ টাকার বিনিময়ে মানুষের মালামাল বহন করে চালাতেন সংসার। সারাদিনে মালামাল বহন করে যা আয় হত তা দিয়ে কোনরকমে চলত কুলি সাইদুরের সংসার। জানা গেছে, পাকিস্তান আমলে ভারতের মুর্শিদাবাদ থেকে পালিয়ে মুন্ডুমালায় শ্যালক নোমানের বাড়িতে আশ্রয় নেন কুলি সাইদুরের বাবা সাইনাল হক।
তার পরে মুন্ডুমালা বাজারে পান সিগারেটের ঢোপ নিয়ে শুরু করেন ব্যবসা। আর ছেলে সাইদুর বাজারে ভবঘুরে হয়ে ধরলেন কুলির কাজ। এতে করে বাপ বেটার সারাদিনে যা আয় হত তা দিয়ে কোনরকমে  দিন চলত কুলি সাইদুরের পরিবার । এভাবেই চলতে চলতে হঠাৎ করে কুলি সাইদুর পেয়ে গেলেন আলাদীনের চেরাগ বাতি। আর সেই আলাদীনের চেরাগ টি হচ্ছে প্রয়াত তানোর উপজেলা বিএনপির সভাপতি ও মুন্ডুমালা পৌরসভার মেয়র শীশ মোহাম্মদ।
শীশ মোহাম্মদের আর্শিবাদে কুলি থেকে হলে গেলেন মুন্ডুমালা মহিলা কলেজের নাইটগার্ড। তবে কুলি সাইদুরের নাইটগার্ডের চাকরি হলেও কোনদিন করতে হয়নি রাতে কলেজ পাহারা দেয়ার ডিউটি। তার পরিবর্তে ভাড়াটে দিয়ে করানো হত কলেজে নাইট ডিউটির কাজ। আর কুলি সাইদুর দিনরাত ততকালীন মুন্ডুমালা পৌরসভার প্রয়াত মেয়র শীশ মোহাম্মদের ছত্রছায়ায় থেকে শুরু করেন ঠিকাদারি কাজ । আর ধিরে ধিরে হয়ে উঠতে শুরু করেন আঙুল ফুলে কলা গাছ । আর যখনই শীশ মোহাম্মদ রাস্ট্রদ্রোহী মামলায় পালিয়ে গেলো তখন থেকেই শীশ মোহাম্মদের সাথে বেঈমানী করে কুলি সাইদুর আশ্রয় নিলো গোলাম রাব্বানীর ছায়াতলে । আর নতুন করে শুরু করলেন গোলাম রাব্বানীর চামচামি। এমনকি গোলাম গোলাম রাব্বানীর বাড়ির কাজ থেকে শুরু করে হাটবাজার পর্যন্ত করে দিতেন কুলি সাইদুর। যার ফলে গোলাম রাব্বানীর বিশ্বস্ত হয়ে উঠতে বেশি সময় লাগেনি কুলি সাইদুরের। আর গোলাম রাব্বানীর বিশ্বস্ত হওয়ার সুবাদে দিন দিন  আরো বেপরোয়া হয়ে উঠে কুলি সাইদুর।
গোলাম রাব্বানীর ছত্রছায়ায় থেকে এলাকায় শুরু করলেন লুটপাট রাহাজানি থেকে শুরু করে মাদকের কারবারও করেছেন কুলি সাইদুর বলেও মুন্ডুমালা পৌরসভার একাধিক প্রবীণ ব্যক্তিরা জানান। বর্তমানে সেই কুলি থেকে নাইটগার্ড সাইদুর ওরুফে কুলি সাইদুর এখন মুন্ডুমালা পৌরসভার মেয়র। করেছেন ৫তলা বিশিষ্ট ফ্ল্যাট বাড়ি। মুন্ডুমালা বাজারে জেলা পরিষদের জায়গা আওয়ামী লীগ অফিস করার নামে লীজ নিয়ে করেছেন ব্যক্তিগত বিলাসবহুল ৩ তলা পাকা মার্কেট । চলাফেরা করেন পাজেরো জিপে করে । ছেলেকে দিয়ে করাচ্ছেন পৌরসভার সকল ঠিকাদারি কাজ। রয়েছে কোটি কোটি টাকা ব্যাংক ব্যালেন্স । স্ত্রী হয়েছেন জেলার শীর্ষ করদাতা। অথচ আজ থেকে ৫বছর আগেও সে মুন্ডুমালা মহিলা কলেজের নাইটগার্ড ছিলেন। আর এখন হয়েছেন কোটি টাকার মালিক ও মুন্ডুমালা পৌরসভার মেয়র । এসব বিষয়ে জানতে মুন্ডুমালা পৌরসভার মেয়র সাইদুর রহমানের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, কপালে লেখা ছিলো তাই আজ আমি কোটিপতি হয়েছি। কিন্তু এত অল্প সময়ের মধ্যে আপনি কিভাবে এত টাকার মালিক হলেন জানতে চাইলে তিনি কোন মন্তব্য না করে এড়িয়ে যান ।
স্ব.বা/রু
Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *