মশাল মিছিলে ছাত্রলীগের বাধা, মোবাইল তল্লাশি

জাতীয় লীড

স্বদেশ বাণী ডেস্ক: জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রগতিশীল ছাত্রসংগঠনগুলোর মশাল মিছিলে শাখা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের দুই দফায় বাগড়া দেওয়া এবং এক আন্দোলকারীর মোবাইল ফোন তল্লাশির অভিযোগ উঠেছে।

রোববার (১৮ ডিসেম্বর) রাত সাড়ে ৭টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার থেকে বের হওয়া মিছিলে এ ঘটনা ঘটে বলে জানান একাধিক প্রত্যক্ষদর্শী। এরপর মিছিলটি বিশ্ববিদ্যালয়ের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক ঘুরে পরিবহন চত্বর এলাকায় যায়।

অভিযোগ উঠেছে, মিছিলের শুরুতে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সম্পাদক এস.এম দিদারুল আলম দীপ ও বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক চিন্ময় সরকারের নেতৃত্বে ২০-২৫টি মোটরসাইকেলে ৫০-৬০ নেতাকর্মী সেখানে জড়ো হন। মিছিলে যাতে সরকারবিরোধী স্লোগান না দেওয়া হয় এবং ছাত্রদল ও শিবিরের কর্মীরা যেন না থাকে সে বিষয়ে আন্দোলনকারীদের সতর্ক করেন তারা।

মিছিলে দুদফা বাধা দেওয়া হয়। উভয়পক্ষের বাগবিতণ্ডা হয়। এক পর্যায়ে মিছিলে থাকা কয়েকজনকে টানা হেঁচড়া করারও অভিযোগ ওঠে। এ সময় শিবির সন্দেহে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিকতা ও গণমাধ্যম অধ্যয়ন বিভাগের সীমান্ত বর্ধন নামে একজন শিক্ষার্থীর মোবাইল তল্লাশিও করেন ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা।

এ বিষয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে সীমান্ত বর্ধন বলেন, ‘তারা যৌক্তিক আন্দোলনকে বানচাল করতে ছাত্রদল-শিবিরের সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ আনে। সনাতন ধর্মের অনুসারী হওয়া সত্ত্বেও আমার মোবাইল তল্লাশি করে। যা পুরোপুরি অনৈতিক। প্রগতিশীল দলের একজন কর্মী হয়েও যদি ব্যক্তিগত নিরাপত্তা না পাই, তাহলে সাধারণ শিক্ষার্থীদের অবস্থা কি হবে?’

বিশ্ববিদ্যালয় শাখা সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্টের সাধারণ সম্পাদক কনোজ কান্তি রায় বলেন, ‘দেশের কোনো দুর্নীতি বা অপশাসনের ব্যাপারে জনগণ কথা বলতে চাইলে, তার মুখ চেপে ধরা হচ্ছে। আমরা একটি শান্তিপূর্ণ মিছিল বের করা সত্ত্বেও ছাত্রলীগ মিছিলে বাধা দিয়েছে। শিবির সন্দেহে কয়েকজন শিক্ষার্থীকে ‘টানা-হেঁচড়া’ করেন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা।’

জাহাঙ্গীরনগর সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি সৌমিক বাগচী বলেন, ‘ফ্যাসীবাদী সরকার যেকোনো আন্দোলনকে দমন করতে বারবার স্বাধীনতা বিরোধী অপশক্তি আখ্যা দেওয়ার কাজটি করে আসছে। তাহলে তারা ১৫ বছর ক্ষমতায় থেকে কী করলো যে এখনো সে অপশক্তিতে দমন করতে পারলো না?’

ছাত্র ইউনিয়ন বিশ্ববিদ্যালয় সংসদের সাংগঠনিক সম্পাদক আলিফ মাহমুদ বলেন, ‘বিরোধী দলগুলোর ওপর দমনপীড়ন চালাচ্ছে সরকার। দেশে পুলিশি রাষ্ট্র কায়েম করে সাধারণ জনগণের সাংবিধানিক অধিকার কেড়ে নেওয়া হয়েছে। আমরা এসব ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।’

বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমান লিটন বলেন, ‘ক্যাম্পাসে যে কেউ মিছিল মিটিং করতে পারে, সেটাতে কেউ বাধা দেবে না এটাই স্বাভাবিক। আজকের কর্মসূচিতে ছাত্রদল-শিবিরের সংশ্লিষ্টতা আছে বলে আমাদের কাছে আগে থেকে অভিযোগ ছিল। এছাড়া প্রধানমন্ত্রীকে নিয়ে যখন কুরুচিপূর্ণ স্লোগান দেওয়া হয় তখন ছাত্রলীগ সেটা প্রতিহত করে। প্রধানমন্ত্রীকে কটূক্তি করা হলে অবশ্যই ছাত্রলীগ বাধা দেবে।’

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর রনি হোসাইন জাগো নিউজকে বলেন, ‘মশাল মিছিলের শুরু থেকেই পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছিলাম। হট্টগোল সৃষ্টির সঙ্গে সঙ্গে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি শান্ত করি। এছাড়া উভয়পক্ষকে সহনশীলতার পরিচয় দেওয়ার অনুরোধ জানাই।’

স্ব.বা/রু

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *