তানোরে গভীর নলকুপের তালা ভাংচুরের ঘটনায় থানায় অভিযোগ

রাজশাহী
তানোর প্রতিনিধি: রাজশাহীর তানোর পৌর সদর শেখ রাসেল মিনি স্টেডিয়ামের পূর্বদিকে শীতলীপাড়া গ্রামের ভিতরে অবস্থিত গভীর নলকূপের তালা ভাংচুর ও মালামাল লুটপাটের ঘটনায় বিএমডিএর সহকারী প্রকৌশলী বরাবর লিখিত অভিযোগ দেওয়া হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার দুপুরের দিকে কৃষকদের পক্ষে সেচ পরিচালনা সমিতির ক্যাশিয়ার কৃষক হিন্দুপাড়া গ্রামের কৃষক অধির কান্ত দাস বাদী হয়ে ভাংচুরকারী বকুলসহ অজ্ঞাত ব্যাক্তিদের নামে অভিযোগটি দায়ের করেন। অভিযোগের প্রেক্ষিতে মঙ্গলবার বিকেলের দিকে বিএমডিএ তানোর জোনের সহকারী প্রকৌশলী মাহফুজুর রহমানের সাক্ষরিত ১০৬৬ নম্বর স্বারকে থানার ওসিকে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নিতে পত্র দেন। এর অনুলিপি নির্বাহী প্রকৌশলী বিএমডিএ রাজশাহী রিজয়ন, উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান, নির্বাহী কর্মকর্তা ও পৌর মেয়রকে দেওয়া হয়েছে। অভিযোগের খবর ছড়িয়ে পড়লে বখাটে বকুল নানা ভাবে হুমকি ধামকি দেওয়া শুরু করেছেন। এতে করে কৃষকরা তার শাস্তির দাবিতে উত্তেজিত হয়ে পড়েছেন।
অভিযোগে উল্লেখ, চলতি মাসের ২৪ নভেম্বর শনিবার গুবিরপাড়া গ্রামের বখাটে বকুলসহ কিছু ব্যক্তিরা তানোর মৌজার ১৭৪৪ নম্বর দাগে শীতলীপাড়া গ্রামের ভিতরে অবস্থিত গভীর নলকুপের তালা ভেঙ্গে মালামাল লুট করে। অবশ্য গভীর নলকূপটির বিগত ২০১৭ -১৮ সালে বকুল অপারেটর নিয়োগ পেয়ে অতিরিক্ত সেচ হার ও সময়মত সেচ পানি না দেওয়ার কারনে ব্যাপক ফসল হানি হয়। তার অপসারনের দাবিতে হিন্দুপাড়া, কুঠিপাড়া, গুবিরপাড়া ও সিন্দুকাই গ্রামের কৃষকরা বিক্ষুব্ধ হয়ে নির্বাহীর দপ্তরে অভিযোগ দেয়। এরই প্রেক্ষিতে ইউএনও ও বিএমডিএর সহকারী প্রকৌশলী বখাটে বকুলকে অপারেটর রেখে সেচ পরিচালনার জন্য সমিতি করে দেন। বিগত ২০১৯ সাল থেকে সল্প টাকা হারে শান্তিপূর্ণ ভাবে চাষাবাদ করে আসছে কৃষকরা। এঅবস্থায় গত শনিবার বকুল তালা ভেঙ্গে দখলে নেয়।
অভিযোগকারী কৃষক অধির জানান, বকুল সেচ না দেওয়ার কারনে প্রচুর ফসলহানি ঘটে। কৃষককের জন্য গভীর নলকূপ। আমরা সেচ না পাওয়া ও অতিরিক্ত হারের কারনে সংশ্লিষ্ট দপ্তর ও ইউএনও স্যার অবহিত করা হলে সমিতি করে দেন। সমিতির মাধ্যমে সুষ্ঠু ভাবে চাষাবাদ হচ্ছে। কোন কৃষককের তীল পরিমান অভিযোগ নাই। গভীর নলকূপ সরকারের, যাকে দায়িত্ব দিবে সে চালাবে। কিন্ত তালা কেন ভাঙ্গবে। প্রতি বোরো মৌসুম এলে বকুল নানা ভাবে হয়রানি করতে মরিয়া হয়ে উঠেন। ব্যক্তিগত সম্পদ না, অভিযোগ দেওয়া হয়েছে আইনগত ব্যবস্থা না হলে আন্দোলন করা হবে। ডাকযোগে এমপিকেও অভিযোগ দেওয়া হয়েছে এবং গত সোমবার উপজেলা চেয়ারম্যান কে কৃষকরা জানায় ঘটনাটি। সুষ্ঠু প্রতিকার না হলে কৃষকরা চাষাবাদ করবে না। বকুলকে বাদ দিতেই হবে। তানা হলে সে কৃষকদের ফসলহানি ঘটাবে।
সমিতির সভাপতি কৃষক সারোয়ার জানান, গত সোমবারে কৃষকরা বিএমডিএর সহকারী প্রকৌশলীর কাছে গিয়ে অবহিত করা হলে তিনি লিখিত অভিযোগ দিতে বলেন। মঙ্গলবার অভিযোগ দেওয়া হয়েছে। কৃষকের স্বার্থ আগে। যাকে দিয়ে সুষ্ঠু ভাবে চাষাবাদ হবে তাকেই দিবে। কিন্তু তালা ভাঙ্গা হুমকি ধামকি এটা কোন ধরনের কথা।
বিএমডিএর সহকারী প্রকৌশলী মাহফুজুর রহমান জানান, অভিযোগ পেয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য থানার ওসিকে লিখিত পত্র দেওয়া হয়েছে।
থানার ওসি কামরুজ্জামান জানান, বিএমডিএ বললে ব্যবস্থা নিব। ব্যবস্থা নিতে তো পত্র দিয়েছে জানতে চাইলে তিনি জানান তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বিএমডিএর নির্বাহী পরিচালক আব্দুর রশিদ জানান, বিএমডিএর সম্পদ, তালা ভেঙ্গেছে সহকারী প্রকৌশলীকে ব্যবস্থা নিতে হবে। সরকার বেতন ভাতা এজন্যই দিচ্ছি। তালা ভাঙ্গা আইন বিরোধী। সমিতির মাধ্যমে পরিচালিত করে সঠিক ভাবে চাষাবাদ হচ্ছে তারাই পরিচালিত করবেন। তালা ভেঙ্গে সেচ পরিচালনা মারাত্মক অপরাধ। দ্রুত আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
প্রসঙ্গত,  গত ২৪ ডিসেম্বর শনিবার সন্ধ্যার দিকে বকুল গভীর নলকুপের তালা ভাঙ্গার ঘটনায় প্রতিবেদন প্রকাশ পায়। চারদিনেও তেমন কোন ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।

স্ব.বা/বা

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *