উপজেলা পরিষদ নির্বাচন: প্রশাসনের পক্ষপাতদুষ্ট আচরণ ও সহিংসতার আশংকায় আব্দুল মজিদের সংবাদ সম্মেলন

রাজশাহী
দুর্গাপুর প্রতিনিধি: রাজশাহীর দুর্গাপুর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে নেতাকর্মীদের হুমকী-ধামকী, মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি ও সহিংসতার আশংকায় সংবাদ সমে¥লন করেছেন চেয়ারম্যান প্রার্থী আব্দুল মজিদ। সংবাদ সম্মেলনে দুর্গাপুর থানার ওসি ও নির্বাচন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের পক্ষপাতদুষ্ট আচরণ নিয়েও অভিযোগ করা হয়। আগামী ২১ মে দুর্গাপুর উপজেলা পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এই নির্বাচনে তিনি ঘোড়া প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দিতা করছেন আব্দুল মজিদ।
শনিবার বিকেলে উপজেলা সদরে নির্বাচন পরিচালনা অফিসে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেন চেয়ারম্যান প্রার্থী আব্দুল মজিদ। উপজেলা পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা নজরুল ইসলাম সহ অন্যান্য নেতাকর্মীরা সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন। সংবাদ সম্মেলনে আব্দুল মজিদের পক্ষে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন নওপাড়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান সাইফুল ইসলাম।
লিখিত বক্তব্যে অভিযোগ করা হয়, প্রচার-প্রচারণার শুরু থেকেই প্রতিদ্বন্দি প্রার্থী শরিফুজ্জামান শরিফ ও তার কর্মী সমর্থকরা নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে নীল নকশা আঁকতে থাকে। এমনকি তার সমর্থকরা বলে বেড়াচ্ছে ভোট যেই পাক শরিফ ভাই চেয়ারম্যান। তার প্রেক্ষিতে গত শুক্রবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে পৌর এলাকার শালঘরিয়া পচার মোড়ে কাউন্সিলর মাহাফুল ইসলাম লিটন সহ নেতাকর্মীদের উপর অতর্কিত হামলা চালিয়ে আহত করা হয়েছে। ভোট কেন্দ্রে পোলিং এজেন্টদের ঢুকতে দেয়া হবে না বলেও হুমকী দিয়ে যাচ্ছে। এছাড়াও সাধারণ ভোটারদের উপরে বিভিন্ন ভাবে তান্ডব চালিয়ে আসছে। তার যের ধরে দুর্গাপুর বাজার, শিবপুর, কুহাড় ও নওপাড়া সহ বিভিন্ন স্থানে অফিস ভাংচুরসহ কর্মীদের মারধোর ও পোস্টার লাগাতে বাধা দেয়া হচ্ছে।
সংবাদ সম্মেলনে আরও অভিযোগ করা হয়, গত শুক্রবার পৌর মেয়র সাজেদুর রহমান মিঠু সিংগা পশ্চিম পাড়া জামে মসজিদে নামাজ শেষে মসজিদের উন্নতিকল্পে অনুদানের প্রলোভন দিয়ে প্রকাশ্যে মোটরসাইকেল প্রতীকে মুসল্লীদের কাছে ভোট চান। যা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে।
পুঠিয়া-দুর্গাপুর আসনের সাংসদ এবং পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় প্রতিমন্ত্রী আব্দুল ওয়াদুদ দারা নিজেও নেতাকর্মীদের পুঠিয়ার বাসায় ডেকে ও ফোনে মোটরসাইকেল প্রতীকে ভোট দিতে দিক নির্দেশনা দিচ্ছেন। সরকারের দায়িত্বশীল একজন প্রতিমন্ত্রী যেভাবে নির্বাচনী কার্যক্রম চালাচ্ছেন তা আচরণবিধি পরিপন্থী বলেও সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে উল্লেখ করা হয়, চেয়ারম্যান প্রার্থী শরিফুজ্জামান শরিফ সম্পদের তথ্য গোপন করেছেন। এমনকি ব্যবসা ও মামলার তথ্য গোপন করেছেন। এসব বিষয়ে রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে লিখিতভাবে আবেদন করলেও ব্যবস্থা নেয়নি। নির্বাচন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা ও দুর্গাপুর থানার ওসির ভুমিকা নিয়েও ক্ষোভ প্রকাশ করা হয় সংবাদ সম্মেলনে।
সংবাদ সম্মেলন শেষে উপজেলা পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম অভিযোগ করেন, নির্বাচনের তফসিল ঘোষনার পর থেকেই দুর্গাপুর থানার ওসি সব সময় প্রতিমন্ত্রীর কথায় উঠছেন বসছেন। নির্বাচনে বিশেষ সুবিধা দিতে একজন প্রার্থীর পক্ষে কাজ করছেন তিনি। গভীর রাতে ওসি ওই প্রার্থীর সাথে গোপনে বৈঠক করছেন। নির্বাচনের সুষ্ঠ পরিবেশ নিশ্চিত করতে প্রশাসন এখন পর্যন্ত ব্যার্থ।
সংবাদ সম্মেলনে উত্থাপিত অভিযোগ প্রসঙ্গে প্রতিদ্বন্দি চেয়ারম্যান প্রার্থী শরিফুজ্জামান শরিফ বলেন, প্রতিদ্বন্দি প্রার্থী আব্দুল মজিদ এর আগেও চেয়ারম্যান ছিলেন। তিনি সহ বর্তমান চেয়ারম্যান আমার জনপ্রিয়তায় ভীতসন্ত্রস্ত হয়ে নানা প্রোপাগান্ডা ছড়াচ্ছেন। নির্বাচনের পরিবেশ যাতে সুষ্ঠ ও সুন্দর হয়, ভোটাররা যাতে নির্বিঘ্নে ভোট কেন্দ্রে ভোট দিতে আসতে পারেন সে জন্য আমি নিজেই রিটানিং কর্মকর্তার কাছে লিখিত আবেদন করেছি। সম্পদ বা মামলার তথ্য কোথাও গোপন করা হয়নি। নির্বাচনকে বাধাগ্রস্ত করতে প্রতিপক্ষের লোকজন নোংরামি রাজনীতি করছে। জনগণ আগামী ২১ মে তার এই সব অপপ্রচার ও নীলনকশার দাঁতভাঙ্গা জবাব দেবে।
Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *