বাঘায় গরমে কদর বেড়েছে কচি তালের শাঁসের, দাম বেশি হলেও কিনছেন অনেকে

রাজশাহী লীড

আব্দুল হামিদ মিঞা,বাঘা(রাজশাহী): রাজশাহীর বাঘায় এবার প্রায় বাগানে আমশূন্যে গাছ। জাত ভেদে আমের দেখা মিলেছে কম। মধুমাস জৈষ্ঠ্য বাজারে উঠেছে লিচুসহ মিষ্টি স্বাদের কচি তাল। তবে দাম বেশি। বিভিন্ন বাজারে বিক্রি হচ্ছে কচি তালের সুস্বাদু শাঁস। প্রচন্ড গরমে একটু স্বস্তি পেতে কচি তালের শাঁস খেতে বিক্রেতাদের কাছে ভিড় করছেন স্কুল-কলেজগামী শিক্ষার্থী, পথচারীরা । এ বছর তালশাঁসের দাম বেশি হলেও কিনছেন ক্রেতারা। তাই বাঘায় কদর বেড়েছে তালের শাঁসের।
মঙ্গলবার(২১ মে’২৪) সরেজমিন দেখা যায়, সব বয়সের মানুষের পছন্দের খাবার হিসেবে সমাদৃত তালের শাঁস বিক্রি হচ্ছে, বাঘা পৌর বাজার, আড়ানি পৌর বাজারসহ উপজেলার বিভিন্ন হাট বাজারে।

কলেজ থেকে বাড়ি ফেরার পথে ৬টা কচি তাল কিনছিলেন শাহদৌলা সরকারি কলেজের প্রভাষক আব্দুল হানিফ মিঞা। তিনি জানান,১টা তালে ৩টা শ্বাস রয়েছে। পরিবারের সদস্য সংখ্যা হিসেব করে ৬টা কিনলাম। বড় সাইজের একেকটি তালের দাম নিলো ১৫ টাকা করে। গত বছর একেকটি তাল ১০ টাকা করে কিনেছিলেন বলে জানান তিনি। তিনি বলেন, তালের শাঁসে কোনও ধরনের ভেজাল নেই। মৌসুমি এই ফলের আমেজ অন্যরকম!
আরেক ক্রেতা রেজিনা আক্তার বলেন, গরীব মানুষের সব জিনিসই কেনা দায়। অন্য পণ্য কম কিনে সন্তানদের জন্য মাঝারি সাইজের ৩ পিস তাল কিনলাম ৩৫ টাকা দিয়ে।
উপজেলার গ্রাম ঘুরে দেখা যায়, তালগাছগুলোতে এখন শোভা পাচ্ছে থোঁকা থোঁকা কচি তাল। সেই তাল হাতবদল করে উপজেলার হাট-বাজারে এনে বেশি দামে বিক্রি করা হচ্ছে।

তালশাঁস ব্যবসায়ীরা বলেছেন, জৈষ্ঠ্য মাসে এসব তাল আসে বিভিন্ন গ্রাম থেকে। উপজেলায় প্রতিদিন প্রায় ৫ হাজার থেকে ১০ হাজার তালশাঁস এর চাহিদা থাকে। এবার বৃষ্টি না হওয়ায় প্রখর রোদে এর চাহিদা আরো বাড়বে বলে মনে হচ্ছে। চলতি মৌসুমে তালের উৎপাদন ভালো হলেও গতবারের তুলনায় এবার দাম বেশি।
বাজারে কচি তালের পসরা সাজিয়ে বসেছেন, বাঘা পৌরসভার মর্শিদপুর গ্রামের বাসিন্দা মিনারুল ইসলাম। তিনি জানান,গত পনের বছর ধরে তালের শাঁস বিক্রি করেন। গরম যতো বাড়ে তালের শাঁসের চাহিদাও বাড়ে। বেচাকেনাও ভালো হয়। এখন প্রতিটি তালের শাঁস বিক্রি করছেন ১০-১৫ টাকায়।

পাইকারি বিক্রেতা শামীম হোসেন বলেন, গতবার ১শ তাল কিনেছি ৬ (ছয়)শ’ থেকে ৯শ’(নয়) টাকায়। এবার মৌসুমে ১শ তাল কিনতে হচ্ছে,৮শ’(আট) থেকে ১ হাজার ১শ টাকায়। বিক্রি ভালো হলে দৈনিক ৬শ থেকে ১ হাজার টাকা আয় সম্ভব।

পুষ্টিবিদদের মতে, ডাবের পানি এবং তালের শাঁসের গুণাগুণ প্রায় একই রকমের। মিষ্টি স্বাদের কচি তালের শাঁস শুধু খেতেই সুস্বাদু নয় বরং পুষ্টিতেও ভরপুর। এর বেশিরভাগ অংশ জলীয় হওয়ায় এটা খেলে দ্রুত শরীরে পানিশূন্যতা দূর করে।

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা অফিসার ডাঃ আশাদুজ্জামান বলেন, তালের শাঁসে অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট, ভিটামিন, ফাইবার এবং খনিজ উপাদান থাকে। এটা ডায়টের জন্য বেশ কার্যকর। এছাড়া শুষ্ক ত্বক ও চুল পড়া বন্ধ করে। লিভার, কোষ্ঠকাঠিন্য, রক্তশূন্যতার জন্যেও উপকারী।

 

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *