মহাদেবপুর (নওগাঁ) প্রতিনিধিঃ নওগাঁর মহাদেবপুরে পূর্ব শত্রুতা এবং পারিবারিক বিরোধের জের ধরে বসতবাড়িতে অতর্কিত হামলা-ভাংচুর ও লুটপাটের অভিযোগ পাওয়া গেছে। ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার ফাজিলপুর গ্রামের মৎসজীবি পাড়ায়। এ ঘটনায় প্রতিকার চেয়ে মহাদেবপুর থানায় একাধিক অভিযোগ দায়ের করার পরেও কোন সহযোগীতা না পাওয়ায় চরম ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন ভূক্তভোগী পরিবারের লোকজন। বাধ্য হয়ে তারা আদালতের আশ্রয় নিয়েছেন বলে জানিয়েছেন।
অভিযোগসূত্রে জানা গেছে, ফাজিলপুর গ্রামের আব্দুস সামাদের পরিবারের লোকজনের সাথে একই গ্রামের প্রতিপক্ষ ছয়ফুল ইসলাম গংদের সাথে দীর্ঘদিন থেকে পূর্ব শত্রুতা এবং পারিবারিক বিরোধ চলে আসছিলো। এসব বিরোধের জের ধরে গত ৪ জুন বিকেল সাড়ে সাড়ে ৫ টার দিকে ফাজিলপুর গ্রামের প্রতিপক্ষ ছয়ফুল ইসলাম,শাহিন আলম ,জুয়েল রানা ,নান্নু,লালবর,লাবলু,সাদ্দাম হোসেন ,হাতেম আলী,রাসেল,রফিকুল ইসলাম ,আলমগীর হোসেন,ফিরোজ আলী,শ্যামল চন্দ্র এবং বুলবুলিসহ ৪০/৫০ জন ভাড়াটিয়া সন্ত্রাসী সংঘবদ্ধ হয়ে এসে বাড়ির সামনে রাখা প্রায় ৬ লক্ষা টাকা মূল্যের একটি সিএনজি গাড়ি ভাংচুর করেন। এরপর বাড়ির থাই জানালা ও দরজা ভাংচুর করে বাড়ির ভিতর অনধিকারভাবে প্রবেশ করে প্রায় ২ লক্ষ ৫০ হাজার টাকার বাড়ির আসবাবপত্র (সেলাই মেশিন,এলইডি স্মার্ট টেলিভিশন,ফ্রিস, খাট, সুকেস,ড্রেসিং,পানির পাম্পের মটর,পল্লী বিদু্যুতের মিটার) ভাংচুর করেন। এছাড়াও নগদ ৫ লক্ষ ৩০ হাজার টাকা এবং প্রায় ১১ লক্ষ টাকা মূল্যের ১০ ভরি স্বর্ণলঙ্কার লুটপাট করে নিয়ে যায় বলে জানান ভুক্তভোগীরা। এতে তারা মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন বলে জানিয়েছেন। এসময় প্রতিহত করতে গিয়ে আব্দুস সামাদের ছেলে আবু বাশার (১৮),মামুনুর রশিদ (২৮), ও সবুজ আলী (২৫), ছেলের স্ত্রী সাথী বেগম(২৫) এবং সাথী আক্তার(২২) সহ আরো বেশ কয়েকজন আহত হন। আহত বাশারকে উদ্ধার করে প্রথমে মহাদেবপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। এরপর তার অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। সেখানে অপারেশন থিয়েটারে নেওয়ার পর কর্তব্যরত চিকিৎসকরা অপারগতা প্রকাশ করায় তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা পিজি হাসপাতালে নেয়া হয়। সেখানেও ব্যার্থ হওয়ায় পরবর্তীতে ঢাকার হাই কেয়ার অর্থোপেডিক্স এন্ড জেনারেল হসপিটালে তার জখমপ্রাপ্ত হাতের ব্যায়বহুল অপারেশন করা হয়। বর্তমানেও তিনি আশঙ্কাজনক অবস্থায় রয়েছেন। এমতাবস্থায় তারা এর সুষ্ঠু বিচার দাবি করেন। বর্তমানে তারা জীবনের নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন বলেও জানান।
এব্যাপারে জানার জন্য ঘটনাস্থলে গেলে অভিযুক্তদের কাউকে না পাওয়ায় তাদের মন্তব্য পাওয়া যায়নি।
মহাদেবপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) রুহুল আমীন বলেন, এ ঘটনায় ৯৯৯ ফোন পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করা হয়েছে। পরবর্তীতে উভয়পক্ষ অভিযোগ দায়ের করেছেন। তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যাবস্থা গ্রহণ করা হবে।