তানোরে হুমকিতে পরিবারের কাছে যেতে বাধ্য করেছেন সেই অনশনে বসা শিক্ষার্থীকে  

রাজশাহী লীড
তানোর প্রতিনিধি: রাজশাহীর তানোরে বিয়ের দাবিতে অনশনে বসা সেই ছাত্রীর উপর লাগাতার হুমকি ও ভয়ভীতি দেখানোর কারনে পরিবারের কাছে যেতে বাধ্য করেছেন ক্ষমতাসীন দলের চেয়ারম্যান ও নেতারা বলে একাধিক সুত্র নিশ্চিত করেন। উপজেলার কৃষক লীগ সভাপতি ও পরিশো দূর্গাপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রাম কমল সাহার পুত্র জয়ন্ত সাহার সাথে বিয়ের দাবিতে অনশনে বসেন অনার্স পড়ুয়া এক শিক্ষার্থী। উপজেলার কামারগাঁ ইউনিয়ন ইউপির পারিশো দূর্গাপুর গ্রামে রাম কমল সাহার বাড়িতে ঘটে এমন ঘটনা। গত ১৬ জুন রোববার অনশনে বসেন ওই শিক্ষার্থী। কিন্তু ক্ষমতা সীন দলের  চেয়ারম্যান ও উপজেলা পর্যায়ের শীর্ষ নেতাদের অমানবিক চাপে পরিবারের কাছে যেতে বাধ্য করেন বলেও অভিযোগ উঠেছে। তবে যাবার সময় ওই শিক্ষার্থী জয়ন্ত সাহাকে বিয়ে করতে না পারলে আত্মহননের হুমকিও দিয়ে গেছেন।
স্থানীয়রা জানান, দীর্ঘ দিন ধরে রাম কমল সাহার পুত্র জয়ন্ত সাহার সাথে মোবাইল ও ফেসবুকের মাধ্যমে অনার্স পড়ুয়া শিক্ষার্থীর সাথে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। প্রেমের সম্পর্ক হলেও বিয়ের কথা বললেই জয়ন্ত সাহা তালবাহানা করে। এক প্রকার বাধ্য হয়ে ওই শিক্ষার্থী চলতি মাসের ১৬ জুন রোববার জয়ন্ত সাহার বাড়িতে বিয়ের দাবিতে অনশনে বসেন। এখবর জানতে পেরে জয়ন্ত সাহা পালিয়ে যায়।
এদিকে কৃষক লীগের সভাপতি ও প্রধান শিক্ষক রাম কমল সাহার বাড়িতে ওই শিক্ষার্থী অনশনে থাকা অবস্থায় উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সম্পাদকসহ শীর্ষ নেতারা বেপরোয়া হুমকি দেয়া শুরু করেন এবং সাবেক মেম্বার বকুল হোসেনের বাড়িতে জোরপূর্বক গত মঙ্গলবারে নিয়ে আসেন। সেখানেই ওই শিক্ষার্থীর পরিবারকে ডেকে ভয়ভীতি দেখিয়ে তাদের হাতে তুলে দেয়া হয়। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক গ্রামের বেশকিছু ব্যক্তিরা জানান, প্রায় দিন ওই শিক্ষার্থীকে নেতারা এসে নানা ভাবে ভয়ভীতি ও হুমকি দিয়ে সাবেক মেম্বার বকুলের বাড়িতে নিয়ে যায়। ওই শিক্ষার্থী বকুলের বাড়িতে যেতে চায়নি। কিন্তু বিয়ে দেয়ার কথা বলে জোরপূর্বক বকুল মেম্বারের বাড়িতে নিয়ে যায়। এই ঘটনা যদি কোন সাধারণ ব্যক্তির বাড়িতে হত তাহলে সবাই মিলে বিয়ে দেয়ার ব্যবস্থা করতেন। কিন্তু রাম কমল ক্ষমতা সীন দলের নেতা হওয়ার কারনে সবাই মিলে এক প্রকার মানুষিক নির্যাতন করে এমন ঘটনার জন্ম দিলেন। তবে ওই শিক্ষার্থী টানা পাঁচদিন অনশনে ছিলেন, সে যাওয়ার সময় বলে গেছে জয়ন্ত সাহাকে বিয়ে করতে না পারলে আত্মহনন করব। কোন বিচার পায়নি। যারা বিচার করবে তারা সবাই রাম কমল সাহার পক্ষ নিয়েছেন। বিয়ের দাবিতে অনশনে বসেন রাম কলম সাহার বাড়িতে, কিন্তু তার বাড়ি থেকে জোরপূর্বক সাবেক মেম্বার বকুলের বাড়িয়ে দুদিন রাখে ওই শিক্ষার্থীকে। গ্রামের লোকজন বকুলের বাড়িতে কেন ওই শিক্ষার্থী, কেনই বা বকুল দুদিন ধরে ওই শিক্ষার্থীকে রাখল এমন নানা প্রশ্ন তুলেন। রাম কমলের ছেলেকে বিয়ে না করা পর্যন্ত বাড়ি থেকে যাবেনা এমন কথা বলে অনশনে ছিলেন ওই শিক্ষার্থী। যদি প্রেমের সম্পর্ক না থাকত তাহলে পঞ্চগড়ের মেয়ে রাম কমলের বাড়িতে আসবে কেন।
সাবেক মেম্বার বকুল হোসেনের সাথে মোবাইলে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, আমার বাড়িতে দুদিন ছিল। গত বৃহস্পতিবার শিক্ষার্থীর পরিবারের লোকজন এসেছিল তাদের হাতে তুলে দেয়া হয়েছে। আপনার বাড়িতে কেন ওই শিক্ষার্থী জানতে চাইলে কোন সদ উত্তর না দিয়ে আপোষে ওই মেয়ে চলে গেছেন বলে দায় সারেন তিনি।
বকুলের বাড়িতে বসেছিল সালিশ বিচার। বিচারে উপজেলার শীর্ষ নেতারা ছিলেন বলে একাধিক সুত্র নিশ্চিত করেন।
তবে জয়ন্ত সাহার সাথে কোনভাবেই যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। খোঁজ করেও তার কোন সন্ধান দেয় নি পরিবারের লোকজন।
জয়ন্ত সাহার পিতা কৃষক লীগের সভাপতি রাম কমল সাহা জানান, সবার প্রচেষ্টায় ওই শিক্ষার্থীকে পরিবারের কাছে দেয়া হয়েছে। ওই শিক্ষার্থীকে জোরপূর্বক বকুলের বাড়িতে দুদিন রেখে ভয়ভীতি ও হুমকি দেখিয়ে পরিবারের কাছে দেয়া হয়েছে জানতে চাইলে তিনি জানান, কোন হুমকি বা ভয়ভীতি দেখানো হয়নি। আমার ছেলের সাথে প্রেম আছে এমন কোন প্রমানও দিতে পারে নি। আমার সম্মান নষ্ট করার জন্য এধরণের ঘটনার সুত্রপাত করা হয়েছে।
থানার অফিসার ইনচার্জ ওসি আব্দুর রহিম বলেন, এঘটনায় কোন অভিযোগ পাওয়া যায় নি। পেলে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হত।
Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *