তানোরে মিজান গ্রুপের বাধায় শরিফ উদ্দিনের সংবর্ধনা পন্ড

রাজশাহী লীড
তানোর প্রতিনিধি: রাজশাহীর তানোর উপজেলা  বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক  মিজান গ্রুপের বাধায় অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল ও চেয়ারপার্সন উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য  শরিফ উদ্দিনের সংবর্ধনা অনুষ্ঠান পন্ড হয়ে গেছে। সোমবার বিকেলে উপজেলা কৃষক দলের আয়োজনে তানোর পৌর এলাকার গোকুল গ্রামের বিএনপি নেতা বাদলের খৈলানে সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। কিন্তু সোমবার দুপুর থেকেই মিজান গ্রুপের নেতাকর্মীরা পৌর এলাকার বিভিন্ন মোড়ে লাঠিসোটা নিয়ে অবস্থান নেয়। উভয় গ্রুপের ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ায় নির্ধারিত স্থানে সভা করতে পারেনি শরিফ গ্রুপ। সংবাদ পেয়ে উভয় গ্রুপকে সরিয়ে দিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করেন পুলিশ প্রশাসন। বিএনপির কঠিন সময়ে নিজেদের এমন দ্বন্দ্বে চরম ভাবে হতাশ তৃনমুলের নেতাকর্মী রা।
দলীয় সুত্রে জানা গেছে,  বিএনপির চেয়ারপার্সন বেগম জিয়ার উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য হওয়ায় অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল শরিফ উদ্দিন কে সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করেন তানোর উপজেলা কৃষক দল। অনুষ্ঠানের সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করেন কৃষক দলসহ বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা। সোমবার বিকেলের দিকে পৌর এলাকার গোকুল গ্রামের বিএনপি নেতা বাদলের খৈলানে সংবর্ধনা অনুষ্ঠান হওয়ার কথা। এদিকে সংবর্ধনা অনুষ্ঠান অনুষ্ঠান পন্ড করতে পৌর এলাকার বিভিন্ন মোড়ে লাঠিসোটা নিয়ে অবস্থান নেয় মিজান গ্রুপের নেতাকর্মীরা।
প্রত্যাক্ষদর্শীরা জানান, সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে যাওয়ার অবস্থা ছিল চাপড়া ব্রীজ পার হয়ে গোকুল মোড় দিয়ে এবং তালন্দ বাজার দিয়ে। চাপড়া ও তালন্দ বাজারে অবস্থান নেয় উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সাবেক মেয়র মিজান গ্রুপের নেতাকর্মীরা। তালন্দ বাজারে দুই গ্রুপের মধ্যে মারপিট ও ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া শুরু হলে নেতাকর্মীর দিকবিদিক ছুটাছুটি শুরু করেন।
এদিকে কলমা ইউপির দিক থেকে গাড়ী বহর নিয়ে অনুষ্ঠানে আসছিলেন শরিফ উদ্দিন। তিনি সুমাসপুর ও হরিদেবপুর গ্রামের মাঝখানে গাড়ি বহর নিয়ে আটকা পড়েন। পরিবেশ শান্ত করার জন্য পুলিশ সেখান থেকে তাদেরকে সরিয়ে দেন।
শরিফ উদ্দিন হ্যান্ড মাইকে নেতাকর্মীদের কলমা বাজারের দিকে যাওয়ার নির্দেশ দেন। তার কথা মত নেতাকর্মীরা কলমা বাজারে রওনা হয়।
কামারগাঁ ইউপির বেশকিছু তৃনমুলের নেতাকর্মীরা তানোর টু চৌবাড়িয়া রাস্তার তালন্দ সুমাসপুর মোড় পার হয়ে পৌর এলাকার শেষ সীমানায় অবস্থান নেয়। তারা জানায় গোকুল গ্রামে অনুষ্ঠানে যাওয়ার সময় মিজান গ্রুপের নেতাকর্মীরা বাধা দেন এবং মারপিটসহ বাইকে আঘাত করে। কোনভাবেই সভাস্থলে যেতে দেয়নি। পরে পুলিশ এসে সবাইকে সরিয়ে দিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করেন। নিজেদের মধ্যে কাঁদা ছোড়াছুড়ি করে অন্যদের কাছে হাসির পাত্র হয়েছি। দীর্ঘ দিন পর একটা সভা তাও আবার নিজেদের জন্য পন্ড হয়ে গেল।
সুমাসপুর গ্রাম পার হয়ে তালন্দ কলমা রাস্তায় দলীয় নেতাকর্মী থেকে শুরু করে উপজেলা কৃষক দলের আহবায়ক আব্দুর রশিদ ও সদস্য সচিব আব্দুল মালেক অবস্থান করছিলেন। তারা জানান, মিজান গ্রুপ সভা পন্ড করার জন্য ক্ষমতা সীন দলের এজেন্ট বাস্তবায়ন করেছেন। সে নিজ গ্রাম ও কিছু সোন্ডা পান্ডাদের দিয়ে এমন ঘটনার জন্ম দিয়ে নতুনভাবে বিভেদ সৃষ্টি করলেন। এর মাসুল তাকে দিতেই হবে।
দুপুরে দিকে মালেক তার ফেসবুক আইডিতে সভার প্রস্তুতি সম্পন্ন বলে পোস্ট করেন। সেখানে মিজান গ্রুপের কয়েকজন কমেন্ট করে লিখেন মিজান বাহিনী মোড়ে মোড়ে অবস্থান করছে।
দুপুরের দিকে মিজানের সাথে মোবাইলে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, আমি ঢাকায় আছি, এসব বিষয়ে কিছুই জানিনা।
শরিফ উদ্দিনের সাথে কথা বলতে চাইলে তিনি কোন কথা না বলে কলমা বাজারে যেতে নেতাকর্মী দের আহবান করেন। কলমা বাজারে শরিফ উদ্দিন কে সংবর্ধনা দেয়া হয় এবং পরবর্তী তে তানোর পৌরসভায় সভা করবেন বলে জানান নেতাকর্মীরা।
জেলা বিএনপির সদস্য সচিব অবসরপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ শ্রী বিশ্বনাথ সরকার বলেন, তানোর ও গোদাগাড়ী তে লবিং গ্রুপিংয়ের রাজনীতি শুরু করেছেন মেজর শরিফ উদ্দিন। যার কারনে আজকে এমন ঘটনার সুত্র পাত হয়েছে। তবে সভা পন্ড করা সঠিক হয়নি।
থানার অফিসার ইনচার্জ ওসি আব্দুর রহিম বলেন, উভয়গ্রুপকে ঘটনাস্থল থেকে সরিয়ে দিয়ে পরিবেশ শান্ত করা হয়েছে। বর্তমানে কোন উত্তেজনা নেই, পরিবেশ আমাদের অনুকূলে রয়েছে বলে জানান তিনি।
Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *