স্টাফ রিপোর্টার: ১৬ বছর লিটনের ছত্রছায়ায় থেকে আওয়ামী লীগের ব্যানারে কোটি টাকার মালিক হয়ে এখন পাক্কা বিএনপির হওয়ার চেষ্টা করছে সালাম শিশির। ৫ ই আগস্ট সরকার পতনের পর থেকেই তারা তাদের নতুন মিশন শুরু করে বলে এ্যাকাধিক সুত্র নিশ্চিত করেছে। স্বৈরাশাসক সরকারের সময় আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী লিটনের পক্ষে প্রচার-প্রচারণ ও স্বতন্ত্র এমপি প্রার্থী শফিকুর রহমান বাদশা কাচি প্রতিকের পক্ষে প্রচার-প্রচারণা চালিয়েছিলেন সালাম ও শিশির।
স্থানীয়রা জানান, তার ভাই কানা শফিকুল বিএনপি নেতা ছিলেন। সালাম ও শিশির ও ২০০৮ সালের নির্বাচনে মিজানুর রহমান মিনুর ধানের শীষের পক্ষে প্রচার-প্রচারণা চালান। আওয়ামী লীগ সরকার আসার পর থেকেই ভোট পাল্টে তাদের চেম্বারে শেখ হাসিনার ছবি লাগিয়ে আওয়ামীলীগার বনে যান তারা। সালাম একজন ঠিকাদার। সে রোডস্ সহ আরো কয়েকটি সরকারি প্রতিষ্ঠানের ঠিকাদার। তাদের অরজিনাল বাড়ি চরে। তাদেরকে চরে সালাম বলে সবাই চিনে। তাদের আরেক পরিচয় তারা ভূমি দস্যু।
আলিগঞ্জের ও হরগ্রাম ইউনিয়নের স্থানীয়রা জানান জোর দখল করে জমি দখল করে । যে জমি ইচ্ছা দখল করে বিক্রি করে বলার কেউ নেই। জমি জায়গাকে কেন্দ্র করে তার ভাই শফিকুল নিহত হয়। এই নিয়ে তাদের উপর মামলাও চলমান রয়েছে। মামলাটি করেন তিন নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর কামাল হোসেন। কামালের সাথে কথা বললে জানা যায়, তিনি সালামসহ তাদের উপর একটি মামলা করেছেন তার ভাতিজা নিহত হওয়ার। লক্ষ্মীপুর একটি মার্কেট দখল করেও তারা সেখানে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান করে তুলেছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন ডাক্তার জানান, আমাদেরকে নামে মাত্র টাকা দিয়ে আমাদের কাছ থেকে জমি কিনে নেয় সালাম। ২০২৩ সালের নির্বাচনে প্রকাশ্যে মেয়র লিটনের নৌকার পক্ষে প্রচার-প্রচারণা চালান সালাম ও শিশির। মেয়র লিটনের মেয়ে অর্চনা জামানের সাথে একাধিক ছবি রয়েছে শিশিরের। শুধু তাই নয় রাজশাহী সিটি কর্পোরেশন মেয়রের বাড়ি সহ সব জায়গায় দেখা মিলে পিতা পুত্র সালাম ও শিশিরের।
এর পর ৫ ই আগস্ট এর পরে ভোল পাল্টে তারা বিএনপি নেতা হওয়ার চেষ্টা করছেন। তাদের চেম্বারসহ একাধিক জায়গায় জিয়া ও তারেক রহমানের ছবি রেখেছেন। তারা নিজেদেরকে মিজানুর রহমান মিনুর অনুসারী বলে দাবি করছেন।
বিএনপির স্থানীয় নেতারা জানান, আমরা আন্দোলন সংগ্রামে মাঠে ছিলাম হঠাৎ করেই শফিকুল ও তার ছেলে শিশির নিজেদেরকে বিএনপির নেতা বলে দাবি করছে। কখনো বলছে আমি মিনুর লোক কখনো বলছে আমি মিলনের লোক। দুলু মন্ত্রীর নাম ভাঙ্গে তারা স্বেচ্ছাসেবকদের মাঝে পানীয় খাদ্য বিতরণ করে। নাটোরের সাবেক এমপি দুলু বিএনপির বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ছিলেন সাবেক।
সাবেক এমপি ও মন্ত্রী দুলু সাথে মুঠোফোনে কথা বললে তিনি জানান, এখন অনেকেই আমাদের নাম ভাঙ্গে বিএনপির নেতা হওয়ার সুযোগ নিবে। মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব মামুন জানান, বিএনপির নাম ভাঙ্গে কেউ বিশৃঙ্খলা করলে তার দায়ভার আমরা নেব না।
তিন নম্বর ওয়ার্ডে স্থানীয়র দেয়া অভিযোগ করেন, সরকার পতনের পর পরই এলাকায় কাউন্সিলর ও ডিলার মহাতাবের চেম্বার ভাঙচুর করেন সালাম এর নির্দেশে তার ভাই। তিন নাম্বার ওয়ার্ড এর বাসিন্দারা জানান হঠাৎ করে তারা এখন বিএনপির নেতা হওয়ার পায়তারা চালাচ্ছে। এতদিন তারা কথায় কথায় লিটন ও অর্না জামানে নাম ভাঙাতো। এখন তারা বলছে তারা মেনু ও মিলনের লোক। তারা আওয়ামী লীগের নাম ভাঙ্গি অনেক অপকর্ম করেছে এখন যদি বিএনপির নাম ভাঙ্গায় তাহলে সেটা কি কাম্য হবে। তাহলে আওয়ামী লীগ আর বিএনপি’র পার্থক্য কোথায়। আওয়ামী লীগ ১৬ বছর লুটপাট করেছে। এসব নামধারী নেতারা তো আবারও লুটপাট করবে জনগণকে নিরাপত্তা দিবে কে।
এ বিষয় নিয়ে সালামের মুঠো ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তিনি মুঠোফোনটি রিসিভ করেননি। শিশিরের মুঠো ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
বিএনপির একটি সূত্র জানাই সালামের ছোট ভাই শফিকুল এক সময় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক ও থানা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। তবে সালাম ও শিশির বিএনপির কোন পোষ্ট ছিল না। তাদেরকে দেখলাম ১৫ই আগস্টে এলাকায় সিন্নি বিতরণ করতে মেয়েরলিটন আসলে ৩০-৪০ জন ছেলে নিয়ে লিটনের পাশে দাঁড়াতে আমাদের ওয়ার্ডের ক্লাস্টারের অফিস উদ্বোধনের মেয়র লিটনের পাশে ছিলেন সালাম। সেই অনুষ্ঠানের ছবি কয়েকটি সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত হয়। মেয়র লিটনের প্রচারণায় তিন নম্বর ওয়ার্ডে তার একাধিক ছবিসহ জাতীয় ও দৈনিক পত্রিকায় প্রকাশিত হয়। শুধু তাই নয় তিন নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি সাধারণ সম্পাদক জিম্মি ছিল সালামের কাছে। তার কথামতোই কার্যক্রম পরিচালিত হতো এবং মেয়র লিটনের খুব কাছের ছিল সালাম। এখন ভোট পাল্টে বিএনপি সেজেছে।
ইতিমধ্যেই বিএনপির চেয়ারম্যান তারেক রহমান নির্দেশনা দিয়েছে নতুন কাউকে বিএনপিতে ঢুকানো যাবে না। কোন হাইব্রিড বিএনপিতে প্রবেশ করতে পারবে না।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক নেতারা জানান আমরা ১৬ বছর হামলা-মামলা নিয়ে দল করলাম এখন সুবিধা নিচ্ছে আওয়ামী লীগের সাথে থাকা লোকজন। এই চিত্র শুধু মহানগরে নয়, বাগমারা বাঘা চারঘাট সহ সব জায়গায় একই চিত্র। চার ঘাটে ছাত্রলীগের ক্যাটারদের কে স্থান দিচ্ছেন বিএনপি নেতা চান সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ফখরুল ও একরামুলকে সহায়তা করার অভিযোগ উঠেছে বিএনপি নেতা সাবেক মেয়র বিকুলের বিরুদ্ধে।
বিএনপি নেতারা নিরাপত্তা দিচ্ছে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের এমনটি অভিযোগ করেন চারঘাট বিএনপি নেতারা। তারা বলেন আমরা চার ঘাটের ফখরুলের অত্যাচারে কত কয়েক বছর ধরে এলাকাতে থাকতে পারেনি অথচ আমাদের নেতারাই ফখরুলকে পালাতে সহায়তা করেছে। রীতিমত ফখরুলের বাড়িকে তারাই নিরাপত্তার চাদরে রেখেছে। আমাদের নেতারাই তাদের প্রটেকশন দিচ্ছে।