বাঘায় পিতা-মাতার কলহে আহত শিশুর মৃত্যু

রাজশাহী

বাঘা (রাজশাহী) প্রতিনিধি: বিয়ের বয়স পূর্ণ হওয়ার আগে প্রথম বিয়ে করেছিলেন আরিফুল ইসলাম। ৬মাস পর সেই স্ত্রী তাকে তালাক দিয়ে চলে যায়। গত ২বছর আগে দ্বিতীয় বিয়ে করেন আরিফুল ইসলাম। বছর খানেক আগে আরিফুলের দ্বিতীয় স্ত্রী রুকসানা খাতুনের গর্ভে জন্ম নেয় আব্দুর রহিম। পৃথিবীর আলো দেখেও আরিফুল-রুকসানা দম্পতির বিবাহিত জীবনের কলহের জেরে ১ বছর বয়সে চির বিদায় নিয়েছে শিশু সন্তান আব্দুর রহিম।

গত শনিবার (৩০ নভেম্বর) রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায় শিশু আব্দুর রহিম । শনিবার বিকেলে পারিবারিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়েছে। আরিফুল ইসলাম রাজশাহীর বাঘা উপজেলার মহদিপুর গ্রামের হারান আলীর ছেলে। রুকসানা খাতুন একই উপজেলার পাকুড়িযা গ্রামের আব্দুল খালেকের মেয়ে।

এলাকাবাসীর ভাষ্য, পিতা-মাতার দাম্পত্য জীবনে কলহের বলি হলো শিশু আব্দুর রহিম। সংসার বুঝে ওঠার আগেই বিয়ের কারণে প্রায়শঃ কলহ দেখা দিতো তাদের সংসার জীবনে। সেক্ষেত্রে কাঙ্খিত আদর যতœ থেকেও বঞ্চিত হয়েছে আব্দুর রহিম।

জানা যায়, এসএসসি পরীক্ষা চলাকালীন সময়ে তার বন্ধুর বউকে ভাগিয়ে নিয়ে বিয়ে করেন আরিফুল। তার জন্ম তারিখ অনুযায়ী ওই সময়ে বয়স ছিল ১৭ বছর। বিয়ের ৬ মাস পরে তালাক দিয়ে চলে যায় তার প্রথম স্ত্রী। গত ২ বছর আগে উপজেলার পাকুরিয়া গ্রামের আব্দুল খালেকের মেয়ে রুকসানা খাতুনের সাথে পারিবারিক ভাবে দ্বিতীয় বিয়ে করেন আরিফুল। ওই সময় রুকসানার বয়স ছিল ১৫ বছর। দাম্পত্য জীবনের এক বছর পরে তাদের ঘরে জন্ম নেয় শিশু সন্তান আব্দুর রহিম। ২ বছর সংসার করাকালীন সময়ে দাম্পত্য জীবনে কলহ দেখা দেয় আরিফুল-রুকসানা দম্পতির।

রুকসানা জানান, গত বৃহস্পতিবার তার সন্তানকে বুকের দুধ পান করাচ্ছিলেন। পারিবারিক কলহের জেরে তার শ্বাশুরি রাগান্নিত হয়ে সন্তান আব্দুরকে কোল থেকে কেড়ে নিয়ে যায়। ওই সময় আঘাত প্রাপ্ত হয়। সেইদিন রাতে আব্দুর রহিমের প্রচন্ড জ্বর আসে এবং মাথায় এক জায়গায় ফোলা চোখে পড়ে।

আরিফুল ইসলাম জানান, বাড়ির লোকজন মিলে আব্দুল রহিমকে চারঘাট স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। উন্নত চিকিৎসার জন্য সেখান থেকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ২ দিন চিকিৎসার পর গত ৩০ শে নভেম্বর ভোর রাতে মারা যায় শিশু সন্তান আব্দুল রহিম। তবে দাম্পত্য জীবনে ছোট খাটো ঘটনা ছাড়া বড় ধরনের কলহের কথা অস্বীকার করেছেন আরিফুল।

আব্দুল খালেক জানান, বিয়ের পর থেকেই যৌতুকের টাকার জন্য তার মেয়েকে মাঝে মধ্যে শারীরিক নির্যাতন করতেন রুকসানার স্বামী সহ শ্বশুর-শাশুড়ি।

তার অভিযোগ অস্বীকার করে হারান আলী বলেন, এমন কোন ঘটনা ঘটেনি। তাদের নাতি আব্দুর রহিম অসুস্থ হওয়ায় তাকে মেডিকেল এ নিয়ে যাওয়া হয়। পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায়।

বাঘা থানার ওসি আবু সিদ্দিক জানান, ঘটনা জানার পর সরেজমিন সেখানে গিয়ে কথা বলে অভিযোগ করার মতো তেমন কিছু তথ্য যায়নি।

এ বিষয়ে কেউ অভিযোগও করেননি। পরে লাশ দাফনের অনুমতি দেওয়া হয়।

 

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *