তানোরে ভিজিডির কার্ড নিয়ে রাজনীতি উত্তেজনা

রাজশাহী লীড

তানোর প্রতিনিধি: রাজশাহীর তানোর উপজেলার দু:স্থ অসহায়দের জন্য মাসিক ভিজিডির কার্ড নিয়ে বিএনপির দুগ্রুপের মধ্যে শুরু হয়েছে নোংরা রাজনীতি বলে অভিযোগ উঠেছে । সরকার কর্তৃক ইউনিয়ন পরিষদে বরাদ্দ দেয়া হলেও ক্ষমতার দাপটে বিএনপির ইউপি সভাপতি ও সম্পাদককে দিতে হয়েছে কার্ড। সেই কার্ড নিয়ে সভাপতি ও সম্পাদকের অনুসারীদের মধ্যে শুরু হয়েছে ইদুর বিড়াল খেলা। সম্পাদক পুরো কার্ড হাতিয়ে নিয়েছে বলে দাবি সভাপতির। এঘটনায় ঈদুল আজহার আগে ইউএনওর দপ্তরে সমাধানের জন্য বসেছিল ইউপির নেতারা। ইউএনও সভাপতি ও সম্পাদককে সমান ভাগে কার্ড ভাগ করার কথা বললেও সম্পাদক কোন ধরনের কর্নপাত করেনি বলে দাবি করেন সভাপতি। অবশেষে গত সোমবার উপজেলা পরিষদে লটারি হওয়ার কথা থাকলেও বিএনপির আরেক পক্ষের নেতার কথায় ভেস্তে যায় লটারি কার্যক্রম বলেও একাধিক সুত্র নিশ্চিত করেন। এতে করে নেতাদের এমন কর্মকাণ্ডে চরম বিব্রতকর অবস্থায় পড়েছেন ভুক্তভোগীসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।

জানা গেছে, অসহায় দু:স্থদের জন্য মাসিক ভিজিডির কার্ডের বরাদ্দ দেয়া হয় উপজেলার সাত ইউপিতে। ছয় ইউপির তালিকা সমন্বয় করে প্রস্তুত করা হলেও কলমা ইউপির তালিকা সম্পূর্ণ হয়নি। কলমা ইউপি তে ৫৬২ টি ভিজিডির কার্ড বরাদ্দ দেয়া হয়। এসব কার্ডের বিবরীতে প্রগি মাসে ৩০ কেজি করে চাল পাবেন কার্ডধারীরা। ৫৬২ টি কার্ডের বিপরীতে ইউনিয়ন বিএনপিকে ২৫৫ টি কার্ড দেয়া হয় এবং ইউপি জামাতকে দেয়া হয় ৮০ টি বাকি কার্ড চেয়ারম্যান ও মেম্বার দের মাঝে ভাগবাটোয়ারা করে দেয়া হয়। কিন্তু ইউনিয়ন বিএনপির সম্পাদক মানিরুল একাই ২৫৫ টি কার্ড বিতরণের সিদ্ধান্ত নেয়। অথচ সভাপতি মুস্তাফিজুর কে কোন কার্ড দেয়নি।

তনে ইউনিয়ন বিএনপির সম্পাদক মানিরুল জানান, আমিসহ নেতারা দাবি করি প্রতিটি ওয়ার্ডের নেতাদের নিয়ে প্রকৃত গরীব অসহায়দের কার্ড দেয়া হবে। কিন্তু সভাপতি সেটা মানতে নারাজ। তিনি ২৫৫ টি কার্ডের মধ্যে অর্ধেক নিবেন। আমিসহ অনেকে এভাবে কার্ড দিতে রাজি হয়নি। এজন্য ইউএনওর কাছে অভিযোগ করেছেন। শুনছি লটারি হবে। সভাপতির উদ্দেশ্য কার্ড নিয়ে বানিজ্য করার।

সভাপতি মুস্তাফিজুর রহমান জানান, ২৫৫ টি কার্ডের বিপরীতে অর্ধেক কার্ড আমি চেয়েছি। কিন্তু আমাকে কোন কার্ড দিবে না। আমি চাই লটারির মাধ্যমে প্রকৃত দরিদ্র ব্যক্তিরা যেন কার্ড পায়। তারা লটারি মানবেনা বলে শুনেছি।

কলমা ইউপির বাসিন্দা উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহবায়ক রায়হান জানান, আমরা সভাপতিকে বলেছি মিটিং রেজুলেশন করে সবাই মিলে একসাথে কার্ড বিতরণ করা হবে। কিন্তু সে এটাতে রাজিনা। কারন গভীর নলকূপের নিয়োগ বানিজ্য করে কাড়িকাড়ি টাকা কামিয়েছেন সভাপতি। সে এখন ভিজিডির কার্ড নিয়েও বানিজ্য করবে বলে আমরা সন্দিহান।সম্পাদক উপজেলা বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ও জেলা শিক্ষক সমিতির আহবায়ক হযরত আলীর অনুসারী। আর সভাপতি মুস্তাফিজুর তার বিপরীতে কাজ করে।

হযরত আলী জানান, সভাপতি মুস্তাফিজুরের কোন লোকজন নাই। ওয়ার্ড পর্যায়ে সম্পাদকের লোকজন রয়েছে। আমি একসাথে বসে সবকাজ করার কথা বলেছিলাম। কিন্তু সভাপতি ২৫৫ টি কার্ডের বিপরীতে অর্ধেক কার্ড নিবেন। এটা তার অসৎ উদ্দেশ্য। ইউপি চেয়ারম্যান খাদেমুন নবী বাবু চৌধুরী জানান, ইউপি বিএনপিকে ২৫৫ টি কার্ড দেয়া হয়েছিল। কিন্তু তাদের নিজেদের দ্বন্দ্বের কারনে তালিকা প্রস্তুত করা যায়নি। হয়তোবা লটারির মাধ্যমে সমাধান হতে পারে। প্রতিটি ইউনিয়নের তালিকা প্রস্তুত হয়ে গেছে।

উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা হাবিবা খাতুনের সাথে মোবাইলে বিষয়টি সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি জানান, ইউএনও স্যার আসলে আজ লটারির মাধ্যমে সমাধান করা হবে। রাজনৈতিক সরকার নেই আপনি বলেছিলেন ইউনিয়ন কমিটি এসব তালিকা করবে, কিন্তু বিএনপির নেতারা কিভাবে কার্ড পায় জানতে চাইলে তিনি জানান, ইউপি চেয়ারম্যান সমন্বয় করতে পারেন। সমস্যা হলে সমাধানের পথও রয়েছে। উপজেলা নির্বাহী অফিসার লিয়াকত সালমানের সরকারি মোবাইলে ফোন দেয়া হলে তিনি রিসিভ করেনি।

 

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *