বাঘায় আমবাগানে গম চাষ,গাছে গুটি, গমে দানা

কৃষি

বাঘা প্রতিনিধি:
আমবাগান রয়েছে এমন ১ বিঘা জমিতে গম চাষ করে ৭ থেকে ৮ মণ উৎপাদন করা সম্ভব। অন্য যে কোন ফসলের তুলনা যা লাভজনক। একই সঙ্গে এতে গাছের কোন ক্ষতির আশঙ্কা থাকেনা। এ সম্ভাবনা কাজে লাগিয়ে আমবাগানের জমিতে গম চাষ করে সাফল্য পেতে যাচ্ছেন কৃষকরা। বিষয়টি মাঠ পর্যায়ের চাষীদের মধ্যে ব্যাপক সাড়া জাগিয়েছে। বিশেষ করে উপজেলার চকরাজাপুর ইউনিয়নের চরাঞ্চলে আমবাগানে গমের আবাদ বেশি করা হয়েছে। চরের জেগে উঠা জমিতে তৈরি করা হযেছে আমবাগান। আর আমবাগানের এসব জমিতেই আবাদ করা হয়েছে গম। এছাড়াও উপজেলার বিভিন্ন অঞ্চলের আমবাগানে বাড়তি আয়ের উৎস হিসেবে গমের আবাদ করেছেন কৃষকরা। সব মিলিয়ে অপূর্ব দৃশ্য, বাগানের আম গাছে মুকুলের পর গুটি আর গাছের নীচে গমের দানা ।

বাগান মালিক,জমির লীজ গ্রহিতা এবং মাঠ পর্যায়ের বিভিন্ন কৃষকের সাথে কথা বলে জানা গেছে, এভাবে গম চাষ খুবই লাভতজনক। সংশ্লিষ্টরা জানান, জমিতে লাগানো আমগাছ বেড়ে উঠতে কয়েক বছর সময় লাগে। প্রতিবছর গাছ বেড়ে উঠলেও অনেক জমি পতিত থাকে। বর্তমান প্রযুক্তি ব্যবহার করে জমিতে বাগান তৈরি করছেন তারা। যাতে করে একই জমিতে অন্য ফসলও করা যায়। এ ছাড়াও আমগাছ পরিচর্যায় লেবার, সার, পানি সেচ ও বালাইনাশক ব্যবহারে এমনিতেই খরচ করতে হয়। জামাল নামের এক কৃষক জানান, সে ক্ষেত্রে গমের আবাদ করলে অতিরিক্ত হিসেবে বীজ লাগে। একই সাথে গমের আবাদেও যদি খরচ করা হয় সেক্ষেত্রেও বাগানেও বাড়তি খরচ করতে হয়না।

উপজেলা কৃষি অফিসার সাইফুল্লাহ সুলতান বলেন, উপজেলার প্রায় এলাকায় বাণিজ্যিকভিত্তিতে আম চাষ হচ্ছে। এ ক্ষেত্রে বেশিরভাগ জমি পতিত থাকে। অথচ এখানে গমের কিংবা হুলুদ-আদা চাষ করে অনেক লাভ করা সম্ভব। এসম্ভাবনাকে কাজে লাগিয়ে কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তর সহায়তা প্রদান করছে। যেখানে অন্য ফসলের তুলনায় লাভজনক বলে দেখা গেছে। তবে অত্যাধিক খরচ কিংবা বাগানের ক্ষতি হতে পারে এমন বিবেচনায় অনেকের মধ্যে আগ্রহ কম। যে কারণে এ অঞ্চলের যেখানে আমবাগান রয়েছে তার বেশিরভাগ জমি অনাবাদি থেকে যাচ্ছে। কিন্তু প্রতি বিঘা জমিতে আবাদের জন্য প্রয়োজনীয় বীজ,লেবার খরচ,সার নিড়ানি, ও পানি সেচ বাবদ তাদের যে টাকা খরচ,তা বাগানে গম চাষের তুলনায় অনেক বেশি। কিন্তু অনেকেই এ সুযোগ কাজে লাগাতে পারছেন না। উপজেলায় এবার লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি গমের আবাদ হয়েছে। এ বছর তাদের গম উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৫ হাজার ৬শ’ ৬০হেক্টর জমি। কিন্তু লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে গমের আবাদ হয়েছে তার চেয়ে অনেক বেশি। বিঘা প্রতি ১৬ থেকে ১৮ মন ফলন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

স্ব.বা/বা

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *