স্বদেশবাণী ডেস্ক: চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলায় পারকি সমুদ্রসৈকতে প্রায় চার বছরের অধিক সময় ধরে আটকে থাকা বিশাল আকারের মালবাহী ‘এমভি ক্রিস্টাল গোল্ড’ জাহাজটি অবশেষে কাটা শুরু হয়েছে।
২০১৭ সালের ৩০ মে ঘূর্ণিঝড় মোরার আঘাতে নোঙর ছিঁড়ে পারকি সমুদ্রসৈকতে এসে আটকে পড়ে জাহাজটি। তখন মালিকপক্ষ অনেক চেষ্টা করেও জাহাজটি অন্যত্র সরিয়ে নিতে পারেনি। পরে ফোর স্টার এন্টারপ্রাইজ নামে একটি প্রতিষ্ঠান জাহাজটি কাটার জন্য কিনে নেয়।
সোমবার সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, সমুদ্রসৈকতে আটকেপড়া জাহাজটির চারদিক ঘিরে কাটা হচ্ছে। শনিবার থেকে জাহাজটি কাটা শুরু হয়েছেন বলে জানান কর্মকর্তারা।
দায়িত্বে থাকা শিপ রিসালট্যান্ট কনসালট্যান্ট মোহাম্মদ মাহবুব জানান, পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র নিয়ে জাহাজটি কাটা হচ্ছে। হাইকোর্টের নির্দেশনা মোতাবেক পরিবেশবান্ধব উপায়ে জাহাজটি কাটার জন্য অনেক প্রক্রিয়া অনুসরণ করা হয়েছে। গুরুত্বপূর্ণ যে কাজটি করা হয়েছে, সেটি হচ্ছে— জাহাজের ৭০ পয়েন্ট থেকে স্যাম্পল সংগ্রহ। কেননা জাহাজে পরিবেশের জন্য বিপজ্জনক বর্জ্য, তেল ও ক্ষতিকারক ৪০ থেকে ৫০টি জিনিস থাকে, যা পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর।
তিনি আরও বলেন, সব থেকে স্যাম্পল সংগ্রহ করে স্যাম্পলগুলো পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার জন্য মালয়েশিয়ার একটি ল্যাবে পাঠানো হয়েছিল। তারা পরীক্ষা করে জানিয়েছে, পরিবেশের জন্য যেসব বেশি ক্ষতিকারক থাকে বর্তমানে সেগুলো রিমুভ হয়ে গেছে। বিস্ফোরক অধিদপ্তর, পরিবেশ অধিদপ্তর ও সংশ্লিষ্ট সব ডিপার্টমেন্টে কীভাবে এ জাহাজটি কাটা হবে এবং জাহাজের বর্তমান অবস্থাটা কী, সেই জিনিসগুলো পরিবেশ অধিদপ্তরকে দেখানোর পর অনুমতি মিলেছে।
তিনি বলেন, জাহাজটা সৈকতে আটকে থাকার কারণে পরিবেশের ক্ষতি হচ্ছে। চার বছর ধরে জাহাজটা আটকে থাকার কারণে স্বাভাবিকভাবে যে জোয়ারভাটার বালু আসে জাহাজ আটকে থাকার কারণে বালু আসতে পারেনি। এই কারণে গাছের শেকড় থেকে বালু সরে যাচ্ছে। বেড়িবাঁধ ভেঙে যাচ্ছে। আর এক বছর যদি জাহাজটা আটকে থাকে, তা হলে বেড়িবাঁধ রক্ষা করা সম্ভব হবে না।
এ কারণে এটি পরিবেশবান্ধব উপায়ে এখান থেকে রিমুভ করাটা পরিবেশের জন্য গুরুত্বপূর্ণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
পরিবেশ অধিদপ্তর চট্টগ্রাম অঞ্চলের পরিচালক মফিদুল আলম জানান, পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র নিয়ে জাহাজটি কাটা হচ্ছে।