দক্ষিণ সুনামগঞ্জে নিহত তারেকের পরিবারে এখনো শোকের মাতম

জাতীয়

কাজী মোঃ জমিরুল ইসলাম মমতাজ (সুনামগঞ্জ): দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলার পূর্ব পাগলা ইউপির ডিগারকান্দি গ্রামের হতদরিদ্র এক ব্যক্তি মুজিবুর রহমান। দ্রারিদ্রের চরম করালগ্রাসেই চলছে তাদের জীবন। তিন বেলা খাবারও জুটেনা তাদের।

মুজিবুর রহমান অন্যের বাড়িতে কাজ করেই সংসার চালায়। চারিদিকে বিদ্যুতের আলো জলমল করলেও অভাবের কারণে তাদের বিদ্যুৎ নেই। মুজিবুর রহমানের বড় ছেলে তারেক। অভাবের তারনায় ছোট বেলা থেকেই কাজে লেগে যায় সে। পরিবারের অভাব মোছন করতে গোবিন্দগঞ্জ সুহিতপুর সালাম এন্ড ব্রাদার্সে কাজ নেয়। কাজ নেয়ার কয়েকমাস পরেই পরিবারের অভাব দূর করার স্বপ্ন ভেঙ্গে চুরমার হয়। নির্মম ভাবে হত্যা করা হয় তারেককে। মা বাবার কান্না এখনো থামেনি। হত্যার সত্যতা যাচাই হয়নি এখনো। ছেলে হারানোর শোকে এখনো কাতর পরিবারের সবাই। তবে কি পার পেয়ে যাবে তারেকের হত্যাকারীরা? পরিবারের কান্নার কি অবসান হবে না?

মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায় গত ০৬/০৮/ ১৯ ইং তারিখে দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলার ডিগারকান্দি গ্রামের মুজিবুর রহমান(৪৫) পিতা মৃত সুরুজ আলী এই মর্মে এজহার দাখিল করেন, মুজিবুর রহমানের ছেলে তারেক আহমদ গত ৫ মাস পূর্বে ছাতক থানার বানারশিপুর গ্রামের মবশ্বির আলীর ছেলে জামাল উদ্দিনের গোবিন্দগঞ্জ সুহিতপুর ছালাম ব্রাদার্স নামীয় বাসায় পরিচ্ছন্ন কর্মী হিসেবে কাজ করে আসছিল।

কিন্তু গত ২৭/০৭/১৯ ইং তারিখ দুপুর ২টায় ফোন করে জানান আমার ছেলে তারেককে খুজে পাওয়া যাচ্ছে না। আমরা খবর পাওয়ার সাথে সাথেই সেখানে যাই। আমার আত্মীয় স্বজন নিয়ে খোজা খুজি করতে থাকি। এবং খোজাখোজির পর কোন খবর না পেয়ে নিখোঁজ সংবাদের ভিত্তিতে ছাতক থানায় একটি জিডি করি। গত ০৫/০৮/১৯ ইং তারিখে আমার ভাই ফরিদ আলী ও কবির আহমদ দ্বয় আমার ছেলেকে খোজাখোজি করাবস্থায় বিকাল আনুমানিক ৫টায় সুহিতপুর গ্রামের ছোয়াব আলীর বাড়ির দক্ষিণ পাশের কচুরিপানাবৃত জমিতে কুকুর আসা যাওয়া করতে দেখে সেখানে গেলে মানুষের কঙ্কাল দেখতে পান।

সেখানে পড়ে থাকা কাপর দেখে এটা তারেকের মরদেহ বলে সনাক্ত করেন তারা। সাথে সাথেই ছাতক থানা পুলিশকে খবর দিলে থানা পুলিশ এসে কঙ্কাল সহ সুরত হাল তৈরি করে মরদেহটি ময়নাতদন্তে পাঠান। নিহত তারেকের বাবা মুজিবুর রহমান তার ছেলের হত্যা জামাল উদ্দিন জড়িত আছে বলেও এজাহারে উল্লেখ করা হয়।

নিহত তারেকের বাবা মুজিবুর রহমান কান্নাজড়িত কন্ঠে লবলেন, আমরা গরীব মানুষ দিন আনি দিন খাই। আমার ছেলেকে এভাবে হত্যা করা হল কিন্তু এখনো হত্যাকারীদের আইনের আওতায় আনা হচ্ছে না। আমরা গরীব বলে কি বিচার পাবো না?

ছাতক থানার অফিসার্স ইনচার্জ মোঃ মোস্তফা কামাল এ প্রতিবেদককে মামলার সত্যতা স্বীকার করে জানান, মামলাটি তদন্তাধীন রয়েছে।

স্ব.বা/শা

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *