শীতকালে পেঁপে-আম-কলা-পেয়ারা গাছ লাগানোর আদর্শ সময়

কৃষি লীড

স্বদেশ বাণী ডেস্ক: শীতের হাওয়া বইতে শুরু করেছে পুরো দেশেই। দিনের বেলা উজ্জ্বল সূর্যকিরণের সময় তাপমাত্রা ২৭ থেকে ৩১ ডিগ্রি সেলসিয়াসের ঘরে ওঠানামা করলেও সন্ধ্যার পর ধীরে ধীরে নেমে আসছে ১০ ডিগ্রি থেকে ১৮ ডিগ্রিতে। বাতাসও হয়ে উঠেছে বেশ শুষ্ক। ফলে সকাল-সন্ধ্যা-রাতে বেশ ঠাণ্ডা অনুভূতি হচ্ছে।

শীতের এই প্রভাবে শুধু মানুষেরই নয়, সবকিছুতে একটু বাড়তি যত্নের প্রয়োজন। শীতের হিমেল হাওয়া যেমন মানুষের সহ্য হয় না, তেমনি সহ্য হয় না হাঁস-মুরগিরও। আবহাওয়া অধিদফতরের তথ্য বিশ্লেষণে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর প্রাণীদের যত্নে তাই বেশকিছু পরামর্শ দিয়েছে কৃষকদের। একইসঙ্গে শীতকালে যেসব উদ্যান ফসল লাগানোর আদর্শ সময় তাও পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

হাঁস-মুরগি

বলা হচ্ছে এই শীতে হাঁস-মুরগি বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হতে পারে। তাই পশু চিকি‍ৎসকের পরামর্শ নিয়ে এক সপ্তাহের বাচ্চাকে রানিক্ষেত রোগের এবং দুই সপ্তাহের বাচ্চাকে গামবোরো রোগের টিকা দিতে হবে। থাকার জায়গা সপ্তাহে দু’দিন পরিষ্কার করতে হবে। খুপরি বা খোয়াড়ের ভেতরে যাতে ঠাণ্ডা বাতাস না ঢুকতে পারে তা নিশ্চিত করতে চারপাশে দিতে হবে চটের বস্তা বা প্লাস্টিকের পর্দা। মুরগির খোয়াড়ে সন্ধ্যার পর এক থেকে দুই ঘণ্টা বাল্ব জ্বালিয়ে রাখলে ডিম উৎপাদন বৃদ্ধি পাবে এবং রোগবালাই কম হবে।

মাছ

এ সময় পুকুরের পানিতে অক্সিজেন কমে যেতে পারে। এক্ষেত্রে পিএইচ (দ্রবীভূত হাইড্রোজেন আয়নের সক্রিয়তার পরিমাপ) দেখে প্রয়োজন অনুযায়ী চুন প্রয়োগ করতে হবে। তুলে ফেলতে হবে পুকুরের তলদেশ থেকে আগাছা। ঝোপঝাড় পরিষ্কার করা ছাড়াও পুকুরের পানি নেড়ে দিতে হবে। আর মাছের খাবার দিতে হবে রৌদ্রজ্জ্বল দিনে।

উদ্যান ফসল

শীতের এই সময় বিভিন্ন উদ্যান ফসল- পেঁপে, আম, কলা, পেয়ারা ইত্যাদি লাগানোর জন্য আদর্শ। কচি ফল গাছে সেচ দিতে হবে। আর কলা পাতা ও ফল বিটল পোকা থেকে রক্ষা করতে মোচা থেকে কলা বের হওয়ার আগেই ছিদ্রযুক্ত পলিথিন দিয়ে কলার কাঁদি ব্যাগিং করে দিতে হবে। আবহাওয়া শুষ্ক থাকায় সেচ দিতে হবে ১৫ থেকে ২০ দিন পরপর।

আলু

শীতকাল আলু চাষের আদর্শ সময়। আলু চাষে জন্য নির্ভরযোগ্য প্রতিষ্ঠান থেকে বিজ সংগ্রহ করে জমিতে লাগাতে বলা হয়েছে। লাল পিঁপড়া ও কাটুই পোকার আক্রমণ হলে প্রয়োগ করতে হবে বিঘাপ্রতি ২ কেজি হারে থিমেট ও ১০জি অথবা ম্যালাথিয়ন ৫ শতাংশ ডাস্ট।

আবহাওয়া অধিদফতর বলছে, উপমহাদেশীয় উচ্চচাপ বলয়ের বর্ধিতাংশ বিহার এবং তৎসংলগ্ন এলাকা পর্যন্ত বিস্তৃত। মৌসুমের স্বাভাবিক লঘুচাপ দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করছে, যার বর্ধিতাংশ উত্তর-পূর্ব বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত বিস্তৃত। ফলে আবহাওয়া শুষ্ক রয়েছে। এই অবস্থায় দেশের কোথাও কোথাও শেষ রাত থেকে সকাল পর্যন্ত হালকা থেকে মাঝারি ধরনের কুয়াশা পড়তে পারে।

আবহাওয়াবিদ কাওসার পারভীন জানিয়েছেন, গত সপ্তাহের দৈনিক উজ্জল সূর্যকিরণের গড় স্থায়িত্বকাল ছিল ৭ দশমিক ৪৫ ঘণ্টা। চলতি সপ্তাহে থাকতে পারে ৬ দশমিক ২৫ ঘণ্টা থেকে ৭ দশমিক ২৫ ঘণ্টা।

আর গত সপ্তাহে গড় বাষ্পীভবন ছিল ২ দশমিক ৪৯ মিলিমিটার। চলতি সপ্তাহে ২ দশমিক ৬১ মিলিমিটার থেকে ৩ দশমিক ৫০ মিলিমিটার থাকতে পারে।

এদিকে শনিবার (০৭ ডিসেম্বর) সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত দেওয়া পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, এদিন তাপমাত্রা একই রকম থাকতে পারে। আর আগামী তিনদিনের পূর্বাভাসে আবহাওয়ার উল্লেখযোগ্য কোনো পরিবর্তন না থাকার কথাও বলছে আবহাওয়া অফিস।

স্ব.বা/শা

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *