স্বদেশ বাণী ডেস্ক: কনকনে ঠাণ্ডা আর হিমেল বাতাসে চলমান মাঝারি শৈত্যপ্রবাহ ও ঘন কুয়াশার কারণে দিনাজপুরের বিভিন্ন এলাকার বীজতলা হুমকির মুখে পড়েছে। বিবর্ণ আকার ধারণ আর ঠাণ্ডায় ২০ শতাংশ বীজতলা নষ্ট হয়ে যাওয়ায় আগামী বোরোর ফলন নিয়ে দুশ্চিন্তায় রয়েছে চাষিরা।
গত এক সপ্তাহ ধরে তাপমাত্রা ওঠানামা করায় শীতে জনজীবন অচল হওয়ার পাশাপাশি বীজতলা ক্লোড ইনজুরির কবলে পড়েছে। কুয়াশায় জেলার বেশিরভাগ বীজতলা হলুদ হয়ে পড়েছে।
বোরো বীজতলায় ঠাণ্ডার কারণে চারাগুলো বড় হতে পারছে না। কুয়াশা থেকে বীজতলাকে রক্ষার করার জন্য পলিথিন দিয়ে মুড়িয়ে রাখার চেষ্টা করছেন অনেকে। কিন্তু পলিথিন দিয়েও রক্ষা করতে পারছে না হলুদ বিবর্ণ আর পচন থেকে।
দিনাজপুর সদরে রানীগঞ্জ এলাকার চাষি মোশাররফ হোসেন বলেন, ঠাণ্ডা থেকে বীজতলা রক্ষা করতে না পারলে বোরো রোপণ নিয়ে দুশ্চিন্তায় রয়েছি। শীতে বীজতলা ভালো রাখতে ইউনিয়ন পর্যায়ের ব্লক অনুযায়ী উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তারা কৃষকদের সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণসহ পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছেন। কিন্তু শীতের প্রকোপ বেশি থাকায় কাজ হচ্ছে না।
একই এলাকার মজিবর রহমান জানান, ইরি-বোরোর বীজতলাকে শৈতপ্রবাহের হাত থেকে রক্ষা করতে কৃষকরা বেড তৈরির মাধ্যমে শুকনা বীজতলা তৈরির প্রতি ঝুঁকছে। জমিতে বেড তৈরি করে তাতে জৈব সার দিয়ে ধানের বীজ ছিটিয়ে ওপরে পাতলা পলিথিন দিয়ে ঢেকে দেওয়া হচ্ছে।
চাঁদগঞ্জের চাষি জাকির হোসেন জানান, তীব্র শীত ও ঘন কুয়াশায় হিলিতে বোরো ধানের বীজতলাগুলো ‘কোল্ড ইনজুরিতে’ আক্রান্ত হয়েছে। হলুদ ও লালচে রঙ ধরে গোড়ায় পচন ধরে বীজতলা নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। ফলে ইরি-বোরো আবাদের বীজতলা নিয়ে চরমভাবে বিপাকে আছে এই অঞ্চলের কুষকেরা।
বেলবাড়ী ব্লকের সুপারভাইজার এনামুল হক বলেন, কয়েকদিন ধরে সকাল ও রাতে তীব্র কুয়াশা ও শীতের কারণে বীজতলার রং হলুদ হয়ে পড়েছে। শৈত্যপ্রবাহ চললে বোরো চাষের জন্য সদ্য বোপণ করা বীজতলার ক্ষতির সম্ভাবনা রয়েছে। তবে রোদ উঠলেই এ সমস্যা কেটে যায়। বীজতলাকে রক্ষা করতে পলিথিন দিয়ে ঢেকে রাখা হচ্ছে, যাতে কুয়াশা আর শীতে নষ্ট না হয়।
দিনাজপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর উপ-পরিচালক তৌহিদুল ইকবাল বলেন, দিনাজপুরে এ বছর ৮ হাজার ৫৬২ হেক্টর জমিতে ইরি বোরোর বীজতলা নির্ধারণ করা হয়েছে। ইতোমধ্যে এই জেলার বিভিন্ন উপজেলায় ৮ হাজার ৪০৬ হেক্টর জমিতে বীজতলা বপন করা করা হয়েছে। ঘনকুয়াশায় এই অঞ্চলে বীজতলা বিবর্ণ হয়ে যাচ্ছে । তবে দুইদিন ধরে দুপুরে রোদ পাওয়া যাচ্ছে। সূত্র: বাংলাদেশ জার্নাল।
স্ব.বা/শা