বোরো বীজতলা রক্ষা করতে মরিয়া নিয়ামতপুরের কৃষকরা!

কৃষি রাজশাহী লীড

নিয়ামতপুর প্রতিনিধি: ডিসেম্বর মাসের মাঝামাঝি সময় হতেই শুরু হয়েছে শীতে প্রকোট। কখনো শৈত্য প্রবাহতে বইছে হিমেল বাতাস, কোথাও আবার সারাদিন দেখা মিলছেনা সর্য্যের। গত রাতে গুড়িগুড়ি বৃষ্টি। কুয়াশার দাপটে সারাদিন ঠান্ডায় কাপছে পশুপাখিসহ মানুষ। এমন অবস্থায় নিয়ামতপুরে বোরো বীজতলা রক্ষা করতে মরিয়া হয়ে উঠেছে কৃষকেরা। তাই ঘনকুয়াশা থেকে বাঁচতে পুরো বীজতলা কীটনাশক বা পলিথিন দিয়ে ঢেকে ফেলেছেন কৃষকেরা।

কৃষিবিদরা বলছেন, বেশি কুয়াশায় বীজতলা লাল হয়ে মরে যায়। তাই পলিথিন ব্যবহার বেশ উপকারিতা রয়েছে। এতে বীজ তলা সতেজ থাকে এবং পোকা আক্রমণও করতে পারেনা।

নিয়ামতপুরের মাঠে মাঠে বোরো বীজতলা নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষক। আর কিছু দিন পরেই বীজতলা থেকে চারা তুলে বোরো রোপন শুরু করবে ক্ষেতে। গত বছরের বোরো ও আমন ধান পানির দরে বিক্রি করে লোকসান গুনতে হয়েছে। সেই লোকসানের বোঝা মাথায় নিয়েই চলতি মৌসুমে আবারও বোরো চাষের প্রস্তুতি শুরু করেছেন নিয়ামতপুরের কৃষকেরা।

নিয়ামতপুরের কৃষি সম্প্রাসরণ অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, চলতি মৌসুমে নওগাঁ জেলার নিয়ামতপুর উপজেলায় বোরোর লক্ষ্য মাত্রা ধরা হয়েছে ২০ হাজার ৪২৫হেক্টর জমিতে। এর জন্য উপজেলায় এবার বীজতলা হয়েছে ২১০ হেক্টর জমিতে।

সদর ইউনিয়নের মায়ামারী গ্রামের কৃষক আবুল কাসেম জানান, চলতি মৌসুমে তিনি ১৮ বিঘা জমিতে বোরো চাষাবাদ করবেন। এই জন্য গত ২৫ দিন আগে বাড়ির পার্শে ২৫ শতক জমিতে বীজতলায় বীজ বোপন করেছেন। আবহাওয়া জনিত কারনে পুরো বীজতলা কয়েকবার কীটনাশক ব্যবহার করেছি । একটু খরচ বেশী হলেও তার বীজতলা নিয়ে আর কোন চিন্তা নাই। ১২ থেকে ১৫ দিনের মধ্যেই বোরো রোপন শুরু করবেন বলে জানান তিনি।

নিয়ামতপুর গ্রামের বিপদ বর্মন জানান, গত বছর কুয়াশায় কম থাকায় তার বীজতলা নিয়ে চিন্তা ছিলোনা। এ বছর ঘনকুয়াশা বেশী ও শৈত্যপ্রবাহ থাকায় বীজতলাতে ঘন ঘন কীটনাশক ব্যবহারে খরচ গনতে হয়েছে বেশী।

তিনি আরো জানান, গত বছর বোরো ধান পানির দরে বিক্রি করে প্রায় ৫০ হাজার টাকা লোকসান গুনতে হয়েছে। তবুও চলতি মৌসুমে গত বছরের লোকসান মাথায় নিয়ে জমিতে বীজ বোপন করেছেন। এতে তিনি ১৮ বিঘা জমিতে বোরো চাষাবাদ করবেন বলে জানান তিনি।

সদর ইউনিয়নের মায়ামারী গ্রামের কৃষক আবুল কাসেম ও নিয়ামতপুর গ্রামের কৃষক বিপদ বর্মন একাই নয়, নিয়ামতপুরে হাজার হাজার কৃষক গত বছরের বোরো ধানে লোকসান মাথায় নিয়েই চলতি মৌসুমে আবারো বীজতলা তৈরি করে পরিচর্যা করে যাচ্ছেন।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ আমীর আব্দুল্লাহ মোঃ ওয়াহেদুজ্জামান জানান, চলতি মৌসুমে বোরো চাষাবাদ করার জন্য অগ্রহায়ন মাসের ১৫ তারিখ থেকে বীজতলার কাজ শুরু করেছেন এই অঞ্চলে কৃষকেরা। ডিসেম্বর মাসের মাঝামাঝি সময় থেকে কুয়াশা ও ঠান্ডার দাপট বীজতলা নষ্ট হতে পারে তাই কৃষকদের পলিথিন ব্যবহারে উৎসাহ দেয়া হচ্ছে। এতে করে বীজতলা বীজ ভাল সুস্থ্য সবল ও পোকার আক্রমণ থেকে রক্ষা পাবে। আবহাওয়া অনুকুলে থাকলে বোরো উৎপাদন লক্ষমাত্রা শতভাগ অর্জিত হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেছেন।

স্ব.বা/শা

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *