মারাত্মকভাবে হ্রাস পেয়েছে ‘কৃষিবান্ধব’ কুঁচে

কৃষি চারণ সংবাদ বিশেষ সংবাদ লীড

স্বদেশ বাণী ডেস্ক: কুঁচে একটি ইল-প্রজাতির মাছ। স্থানীয়ভাবে কুইচা, কুচিয়া, কুঁইচ্ছা মাছ ও কুচে বাইম নামে পরিচিত। এর ইংরেজি নাম Asian Swamp Eel। Sybranchidae পরিবারের এই মাছটির বৈজ্ঞানিক নাম Monopterus Cuchiya। একসয় প্রচুর দেখা যেত ‘কৃষিবান্ধব’ এই প্রাণী।

জমির উর্বরতা রক্ষায় ভূমিকা রাখা কুঁচে এখন প্রায় সংকটাপন্ন। এতে প্রচুর পুষ্টিগুণ ও অর্থনৈতিক গুরুত্ব থাকায় চাষ না করে পুরোটাই প্রাকৃতিক উৎস থেকে আহরণ করা হচ্ছে। এ কারণে মারাত্মকভাবে হ্রাস পেয়েছে এর সংখ্যা। তাছাড়া আবাসস্থল ধ্বংস, জমিতে কীটনাশকের ব্যবহারও এদের বিপন্নের কারণ।

প্রাণী বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, বাংলাদেশের পাহাড়ি অঞ্চলের অগভীর খাল-বিল, হাওর-বাওর, পুকুর ও মাটির গর্তে কুঁচে বাস করে। শুকনো মৌসুমে পুকুর কিংবা ডোবায় যখন পানি শুকিয়ে যায় তখন এরা কাদার নিচে অনেক দিন বেঁচে থাকতে পারে। এদের প্রধান খাদ্য বিভিন্ন প্রজাতির ছোট মাছ। এছাড়াও জলজ পোকা ও প্রাণী খায়। বাংলাদেশে বণ্যপ্রাণী সংরক্ষণ আইনে এই প্রাজাতিটি সংরক্ষিত ও আইইউসিএন এর তালিকা (২০১৫) অনুযায়ী এই প্রজাতিটি বাংলাদেশ ও বিশ্বব্যাপী সংকটাপন্ন।

সম্প্রতি সিলেটের বালাগঞ্জ উপজেলার উমরপুর ইউনিয়নের শিবপুর গ্রামের বিলে দুই উপজাতি কিশোরকে কুঁচে শিকার করতে দেখা যায়। তারা মৌলভীবাজারের মৃত্তিঙ্গা চা বাগানের হালকিটিলা গ্রামের বিপুল উড়া’র ছেলে সঞ্জয় উড়া (১৮) ও লক্ষিনধর বসাকের ছেলে অমিত বসাক (২০)।

তারা জানায়, ৭-৮ বছর ধরে এভাবেই কুচিয়া শিকার করে জীবিকা নির্বাহ করছে। প্রতিদিন ২-৩ কেজি পরিমাণ কুচিয়া শিকার করে পাইকারি বাজারে কেজি প্রতি ৩০০ টাকায় বিক্রি করে ওরা। এছাড়াও বিশেষ ফাঁদ ও বড়শি দিয়ে পুরো বর্ষাকালই দেশের হাড়ও-বাওরে কুঁচে শিকার করা হয় বলে জানায় তারা।

এ বিষয়ে কথা হলে প্রকৃতি ও জীবন ফাউন্ডেশনের গবেষণা কর্মকর্তা শিহাব খালেদীন ‘বাংলাদেশ প্রতিদিন’কে বলেন, বিভিন্ন ধরনের ছোট ছোট প্রাণী ও কীট খেয়ে থাকে বলে জলজ প্রতিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে।

প্রচুর পুষ্টিগুণ সম্পন্ন হওয়ায় কুঁচের রয়েছে অর্থনৈতিক গুরুত্বও। এটি চাষ না করার ফলে প্রায় পুরোটাই প্রাকৃতিক উৎস থেকে আহরণ করা হয়। তাই এদের সংখ্যা কমে যাচ্ছে। অর্থনৈতিক ও পুষ্টিগুরুত্বের বিবেচনায় এই মাছ সংরক্ষণ করা জরুরি। একই সাথে গবেষণার মাধ্যমে কুঁচে চাষের সম্ভাবনাও যাচাই করা প্রয়োজন। সূত্র: বিডি-প্রতিদিন।

স্ব.বা/শা

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *