আলুর পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করলেও আবহাওয়া নিয়ে চিন্তিত তানোরের আলু  চাষীরা 

কৃষি
তানোর প্রতিনিধি: প্রতিবছরের তুলনায় এবার তানোর উপজেলা জুড়ে রেকর্ড পরিমাণ জমিতে আলু চাষ হয়েছে। যেদিকেই চোখ যায় সেদিকেই শুধু আলুর সবুজ পাতার সমারোহ। দম ফেলার সময় নেই কৃষকের। তীব্র ঠান্ডা ও কুয়াশা ভেত করে ভোর থেকে বিকেল পর্যন্ত আলুর জমি পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছেন তানোরের আলু চাষীরা। কিন্তু হঠাৎ করে আকাশের আবহাওয়া পরিবর্তন দেখে শঙ্কিত হয়ে পড়েছেন আলু চাষিরা।
বরেন্দ্র খ্যাত নামে পরিচিত রাজশাহী তানোর উপজেলা জুড়ে বিভিন্ন মাঠে আলুর গাছ বেরিয়ে সবুজে রূপ নিয়েছে। যেদিকে তাকাই শুধু সবুজ আর সবুজ। উপজেলার বিভিন্ন আলুর মাঠ ঘুরে দেখা গেছে,সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত আলুর জমিতে পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন আলু চাষীরা। গত বছরের তুলনায় এ বছর আলু রোপণের শুরুতেই আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় প্রতিটি জমির আলুর গাছ সুন্দর ভাবে বের হওয়ায় কৃষকের মধ্যে এক প্রকার স্বস্তি কাজ করছে। গত’কয়েক বছরের তুলনায় এবার আলুর দাম ভালো থাকায় এবার বুকভরা স্বপ্ন নিয়ে তিনগুণ বেশি জমিতে আলু চাষ করেছে কৃষক।
জানা গেছে, চলতি মৌসুমে আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় আমন ধান কাটা মাত্র কৃষকরা ঝুকে পড়েন আলু চাষের জন্যে। উপজেলার প্রায় প্রতিটি মাঠে এবার ব্যাপক হারে আলু চাষ হয়েছে। শীতের রাত জেগে বিরামহীন পরিশ্রম করছেন চাষিরা। প্রচন্ড শীতে রাত জেগে আলুর জমিতে দিচ্ছেন পানি সেচ। আলুতে যেন রোগ বালাই না ধরে সেজন্য প্রতিনিয়ত স্প্রে করা হচ্ছে বালাইনাশক। তানোর পৌর এলাকার গুবিরপাড়া গ্রামের কৃষক হাবিবুর রহমান জানান, তিনি গত বছর ৩৫ বিঘা জমিতে আলু চাষ করে বেশ ভালো টাকা আয় করেছেন।
এবার সেই আশায় তিনি ৫৫ বিঘা জমিতে আলু চাষ করেছেন। আলু চাষের খরচ প্রায় দেড়গুন বেশি হবে বলে তিনি জানান। তানোর পৌর এলাকার বেলপুকুরিয়া গ্রামের কৃষক টিপু জানান, জীবনের প্রথম ঋণের টাকায় জমি টেন্ডার নিয়ে গত বছর ৪ বিঘা জমিতে আলু চাষ করেছিলাম। দামও ভালো পেয়েছি। তাই এবার ১১বিঘা জমিতে আলু রোপণ করেছি কিন্তু এবার রেকর্ড পরিমাণ জমিতে আলু চাষ হওয়ায় দাম নিয়ে চরম শঙ্কায় রয়েছি।
তানোর পৌর এলাকার গুবিরপাড়া গ্রামের প্রসিদ্ধ আলু চাষি হালিম মন্ডল বলেন, তিনি গত বছর ৪০ বিঘা জমিতে আলু চাষ করে বেশ ভালো দাম পেয়েছেন। কিন্তু এবার ব্যাপক ভাবে আলু চাষ হওয়ায় তিনিও ১’শ বিঘা জমিতে আলু চাষ করেছেন।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, তানোরে গত মৌসুমে আলু চাষ হয়েছিল প্রায় সাড়ে ৯ হাজার হেক্টর জমিতে। কিন্তু এবার প্রায় তিনগুন জমিতে আলু চাষ হয়েছে। এব্যাপারে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শামিমুল ইসলাম জানান, প্রথম থেকেই এবার আবহাওয়া অনুকূলে থাকার জন্যে সঠিক সময়ে চাষিরা আলু রোপন করতে পেরেছেন। তাছাড়া এখন পর্যন্ত কোন চাষির জমিতে কোন প্রকার আলুতে রোগবালাই দেখা যায়নি। আশা করছি যতই আলু চাষ হোক কৃষকদের লোকসান হবে না। তবে যারা আলু হিমাগারে রাখতে পারবেন তারা বেশী লাভবান হবে বলে জানান তিনি।

স্ব.বা/বা

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *