তানোরের বিলকুমারী বিলে সবুজ শীষের সমারোহ

কৃষি
সারোয়ার হোসেন, তানোর: যুগযুগ ধরে কখনো কৃষক দের আহাজারি, আবার কখনো সোনালী হাসি,বন্যার পানিতে সব স্বপ্ন শেষ হয়ে যায়, আবার গোলা ভর্তি ধান পেয়ে আনন্দিত হয়ে পড়েন রাজশাহীর তানোরে বিল কুমারী বিল সংলগ্ন কৃষকদের হয় এমন পরিস্থিতি । শতশত কৃষকের বছরের খাবার বিলের জমির বোরো ধান থেকেই হয়। বিলের চারপাশ সবুজ শীষের সমারোহ। চমৎকার দৃশ্য বহন করছে বিল কুমারী। পুরো বিল সবুজ শীষে ভরে উঠেছে। আর অল্প কয়েক দিনের মধ্যেই কাটা শুরু হবে বিলের বোরো ধান। সবুজ শীষের সমারোহে আশায় বুক বেধেছেন চাষীরা।  বলছিলাম তানোরের ঐতিহ্য বাহী অন্যতম সৌন্দর্য বহন করে আছে শীব নদী বা বিল কুমারী বিলের বোরো ধানের সবুজ শীষের সমারোহের কথা। এবিলকে ঘিরে তানোর বাসির নানা স্বপ্ন। হয়তো কোন এক সময়  বোরো চাষের পাশাপাশি  পর্যটন বা নৌরুট হতেও পারে এমন আশাও তরুন প্রজন্মের । আবার এই বিলে পানি কখনো গর্জে উঠে বন্যার  ভয়াল থাবায় তছনছ হয়ে পড়ে । বন্যার পানিতে কৃষকের সোনালী স্বপ্ন কখনো ম্লান হয়ে পড়ে। বর্তমানে বিলের জমিগুলো বোরো ধানের সবুজ শীষের সমারোহে ভরপুর। বাতাসে দোল খাচ্ছে সবুজ শীষগুলো। রাত দিন বাতাসে দোল খাচ্ছে কৃষকের কষ্টার্জিত সবুজ শীষ। মনে হচ্ছে কে যেন বিছিয়ে রেখেছে সবুজের চাদর। সব ধানের শীষ একই রকমের। চমৎকার দৃশ্য, মনপ্রাণ জুড়িয়ে যাচ্ছে।
তরুন চাষী গুবিরপাড়া গ্রামের সারোয়ার হোসেন জানান, শেখ রাসেল মিনি স্টেডিয়াম সংলগ্ন শীতলী পাড়ার নিচে দেড় বিঘাসহ আড়াই বিঘা জমিতে প্রথমবারের মত বোরো লাগিয়েছেন।
তিনি জানান এর আগে কখনো চাষাবাদ করিনি। এবার চাষাবাদ করে মজা লাগছে। ধান গাছে শীষ গজিয়েছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকার কারনে প্রায় সবার ধানে একই ভাবে শীষ গজিয়েছে। মহান আল্লাহর কাছে আশা করছি১০/১২ দিনের মধ্যে কাটা পড়বে। তিনি আরো জানান ধান থোড় অবস্থায় উজান থেকে আসা পানিতে তলিয়ে গিয়েছিল অনেকের রোপিত ধান। পানি দ্রুত নেমে যাওয়ার কারনে অনেকের সেই তলিয়ে যাওয়া ধান আবার হয়েছে। অবশ্য এসব একেবারে বিলের নিচের জমিগুলোর হয়েছিল এমন অবস্থা। তাদের ধানে শীষ সে ভাবে এখনো গজায়নি।
তার পাশে পৌরসভার কর্মচারী আকবর দু বিঘা জমি লীজ নিয়ে রোপন করেছেন। তিনি জানান ধানের শীষের চেহারা দেখেই প্রান জুরিয়ে যাচ্ছে।  অল্প দিনের মধ্যেই কাটা পড়বে।   উপজেলার চান্দুড়িয়া ব্রীজ ঘাট থেকে কামারগাঁ ইউপির মালশিরা পর্যন্ত বিশাল এরিয়া নিয়ে বিল কুমারী। আগাম আলু, আগাম বোরোসহ নানান জাতের শাক সবজিও চাষ করে থাকেন কৃষকরা।
উপজেলার পূর্ব প্রান্ত বা নিচু এলাকা জুড়েই বিল।
বিলের মুল অংশ ধরা হয় গোল্লাপাড়ার নিচে নব নির্মিত ব্রীজের দক্ষিন থেকে ধানতৈড় গ্রামকেই বোঝায়।তবে আরেক বিশাল অংশ রয়েছে রাস্তার
দুপারে লবিয়তলা ব্রীজের পূর্ব পশ্চিম দিগন্ত বিলে সবুজে ভরা।
পৌর এলাকার জিওল গ্রামের চৈত্যা নামের এক চাষী জানান, প্রতি বছর কার্তিক অগ্রহায়ণ মাসে বিলের জমিতে বোরো রোপন করা হয়।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, উপজেলায় দু ভাগে বোরো চাষাবাদ হয়। বিলের জমিতে আগাম এবং আলু উত্তোলনের পর চাষ হয় বোরো ধান।
উপজেলা কৃষি অফিস জানায়, উপজেলায় এবারে বোরো চাষ হয়েছে ১৩ হাজার ১৫০ হেক্টর জমিতে এবং বিলের জমিতে ১ হাজার ১০০ হেক্টর জমিতে চাষ হয়েছে।
কৃষি বিজ্ঞানী ও পদক প্রাপ্ত নুর মোহাম্মাদ জানান বিলের জমিতে চমৎকার বোরো  ধান হয়েছে।বিলে যেদিকে তাকায় সেদিকেই সবজ শীষের সমারহ মন প্রান জুড়িয়ে যাচ্ছ।
নবাগত কৃষি অফিসার সাইফুল্লাহ জানান, সময়মত কৃষকদের পরামর্শ প্রদান, আবহাওয়া অনুকুলে থাকার কারনে ধান গাছ ও শীষের চেহারা দারুন।আশা করছি ফলনও বাম্পার হবে।
উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান লুৎফর হায়দার রশিদ ময়না বলেন, এবারে বিলের জমিতে ভালোই হয়েছে ধান।বিলের ধান জাতীয় অর্থনীতিতে ভুমিকা রেখে আসছে। তবে মাননীয় সাংসদের বিল নিয়ে নানা পরিকল্পনা রয়েছে। এবার ফলন ভালো হবে বলে আশা প্রকাশ করেন এই চেয়ারম্যান।
Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *