তানোরে জাল কাগজে কৃষি ডিপ্লোমা কলেজ এমপিও ভুক্ত করতে মরিয়া অধ্যক্ষ

কৃষি রাজশাহী

তানোর প্রতিনিধি : রাজশাহীর তানোরের নাম করা আলোচিত ও সমালোচিত অধ্যক্ষ ইসাহাক আলীর বিরুদ্ধে কৃষি ডিপ্লোমা ইনস্টিটিউট কলেজ খুলে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ উঠেছে। এমনকি কৃষি ডিপ্লোমা কলেজের নামে নিজস্ব জায়গা না থাকলেও কাগজে কলমে বোর্ড পর্যন্ত জালিয়াতি করে কলেজের নামে জমি দেখানো হয়েছে। যা পুরোপুরি বাটপারি বানোয়াট। কলেজের নামে কোন নিজস্ব জমি নাই। অধ্যক্ষ ইসাহাক আলী চাপড়া এতিমখানার মার্কেট ঘর ভাড়া নিয়ে চালাচ্ছেন কৃষি ডিপ্লোমা কলেজের কার্যক্রম। এমনকি এই কৃষি ডিপ্লোমা কলেজে ছাত্র ছাত্রীর চাইতে শিক্ষক কর্মচারীর সংখ্যা তিনগুণ বেশি। ফলে কে শিক্ষক, কর্মচারী আর কে ছাত্র বোঝা বড় দায়।

জানা গেছে, অধ্যক্ষ ইসাহাক আলীর চাকরির বয়স শেষ হওয়ার জন্য তানোর মহিলা কলেজ থেকে অবসর দেয়া হয়েছে। কিন্তু অধ্যক্ষ ইসাহাক আলী অবসর নিয়ে আবারো নতুন করে তানোর মহিলা কলেজের সাথে লাগিয়ে কৃষি ডিপ্লোমা ইনস্টিটিউট নামের কলেজ খুলে বসেছেন। আবার সেই কলেজে যাওয়ার জন্য নেই কোন রাস্তা। ছাত্র-ছাত্রীদের কে নিয়ে কৃষি উদ্ভিদের জন্যও নেই কোন কলেজে কৃষি যন্ত্রপাতি। শুধু তাই নয় অন্যদিকে চিটিং করে তানোর মহিলা কলেজের প্রায় ১ একর ৭৫ শতাংশ জমি গোপনে কৃষি ডিপ্লোমা কলেজের নামে রেজিস্ট্রি করতে গিয়ে সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে হাতেনাতে ধরে ফেলেন তৎকালীন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইউএনও সুশান্ত কুমার মাহাত্ম্য। সেই ঘটনায় অধ্যক্ষ ইসাহাক আলীর বিরুদ্ধে কোটে চিটিংবাজ মামলাও হয়েছে। যা এখনো চলমান রয়েছে।

অথচ কলেজ এমপিও ভুক্ত না হলেও একেক টি পোস্টের জন্য নিয়োগ বানিজ্য করা হচ্ছে ১০ থেকে ২০ লক্ষ করে টাকা। আবার অনেকে টাকা দিয়েও চাকরি না পেয়ে মাসের পর মাস বছরের পর বছর অধ্যক্ষ ইসাহাক আলীর পিছনে ঘুরছেন। কিন্তু অধ্যক্ষ তাদের খুব শীঘ্রই কলেজ এমপিও ভুক্ত হবে বলে বিভিন্ন আশ্বাস দিয়ে তালবাহানা করে যাচ্ছেন। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, তানোর পৌর এলাকার তালন্দ হরিদেবপুর গ্রামের সার ডিলার মনিরুল ইসলামের ছোট ভাই ওবায়দুল কে গণিত শিক্ষক নিয়োগ দেয়া হবে বলে তার কাছে থেকে ২০লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেয় অধ্যক্ষ ইসাহাক আলী। এছাড়াও তানোর সদরের পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক শামসুদ্দিন মাষ্টারের মেয়ে পারভীন কে চাকরি দেয়া হবে বলে প্রায় ১০লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেওয়া হয়েছে। পৌর এলাকার গুবির পাড়া গ্রামের মতিউর রহমানকে পিয়ন পোস্টে চাকরি দিবে বলে তার কাছে থেকে অধ্যক্ষ ইসাহাক আলী ৮লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়েছিলেন। তবে মতিউর রহমানের বাড়ি পোপারে হয় অধ্যক্ষ ইসাহাক আলী গুবিরপাড়া মোড়ে ধরে মারধর লাঞ্ছিত করে টাকা উত্তোলন করেন মতিউর রহমান। কিন্তু বাকিদের বাড়ি দূরে হওয়ায় চরম দু’চিন্তায় রয়েছে তারা।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক প্রভাষক বলেন, অধ্যক্ষ ইসাহাক আলী কি ভাবে এক কলেজ থেকে অবসর নিয়ে আরেক কলেজের অধ্যক্ষ হয়। তার বয়স অনেক আগেই শেষ হয়ে গেছে। তার অন্যকোন কলেজ খুলে অধ্যক্ষ হওয়ার কোন সুযোগ নেই। তার পরেও তিনি বর্তমানে কি ভাবে কৃষি ডিপ্লোমা ইনস্টিটিউট কলেজের অধ্যক্ষ হন আমার বোধগম্য নয়। আমার মনে হয় সে নিজে অধ্যক্ষ না হয়ে অত্যন্ত গোপনে অন্য কাউকে অধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্বে রেখে কলেজ পরিচালনা করছেন তিনি বলে জানান। বিষয়টি নিয়ে অধ্যক্ষ ইসাহাক আলীর সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে তার কোন বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

 

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *