ফুলকপি চাষ করে লাভবান কৃষক

কৃষি

স্বদেশ বাণী ডেস্ক: আগাম জাতের ফুলকপি চাষ করে লাভবান হচ্ছেন কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলার কৃষকরা। তারা সারাবছর চাষ করছেন এ ফুলকপি। ফুলকপির ভরা মৌসুমে তারা দাম ভালো না পেলেও অসময়ে ফুলকপির দামে পুষিয়ে যাচ্ছে তাদের। তাই আগাম জাতের ফুলকপির দিকেই ঝুঁকছে চাষীরা।

ধানসহ অনান্য ফসলে চাষীরা যখন লোকসানের মুখ দেখছেন তখনই উপজেলা কৃষি অফিসের পরামর্শে ও সহায়তায় আগাম এ ফুলকপি চাষ করে লাভবান কৃষকরা।

মিরপুর উপজেলার মালিহাদ ইউনিয়নের আবুরী এলাকার কৃষক বাদল মিয়া জানান, ‘ধান, গম করে আমরা খুব একটা লাভবান হতে পারিনি। ধান চাষ করে লোকসান গুনতে হয়। তাই আমরা ফুলকপি চাষ করছি। শীতকালে ফুলকপির ভরা মৌসুমে দাম একটু কম হয়। তবে অন্যান্য সময় আমরা বেশ ভালো দাম পাই। তাই আমরা সারা বছরই এখন ফুলকপি চাষ করছি।’

তিনি আরো জানান, ‘এবছর আমি আমার দুই বিঘা জমিতে আগাম লিডার জাতের ফুলকপির চাষ করেছি। বিঘায় প্রায় ৬ হাজারের মতো গাছ রয়েছে। খরচ হয়েছে বিঘা প্রতি ৮-১০ হাজার টাকা। বাজারে এখন যে দাম রয়েছে তাতে আমি বিঘা প্রতি ৬০-৭০ হাজার টাকা পাবো।’

আরেক চাষী আসাদুল হক জানান, ‘অন্য ফসলের তুলনায় ফুলকপি চাষ অধিক লাভজনক। আমি দেড় বিঘা জমিতে আগাম ফুলকপি চাষ করেছি। জমি থেকেই পাইকারি ক্রেতারা ফুলকপি কিনে নিয়ে যাচ্ছে ৩০-৩৫ টাকা কেজি। প্রায় এক বিঘা জমিতে ৫০-৬০ হাজার টাকা লাভ হচ্ছে।’

সিদ্দিক আলী নামের আরেক কৃষক জানান, ‘আগে শীতকালে জমিতে ফুলকপির চাষ হতো। সে সময় ভালো দাম পাওয়া যেতো না। কৃষি অফিসের পরামর্শে আমরা এখন সারা বছর ফুলকপির চাষ করি।’

তিনি আরো জানান, ‘এখানের ফুলকপি ঢাকা, খুলনা, চট্টগ্রাম, গোপালগঞ্জ, সিলেটে রপ্তানি করি। এছাড়া স্থানীয় হাট-বাজার ও কুষ্টিয়া শহরেও আমরা বিক্রি করি। ধান, গম, ভুট্টা, আলু, পেঁয়াজের তুলনায় অধিক লাভ এই আগাম ফুলকপিতে। তাই কৃষক ফুলকপি চাষে ঝুঁকছে।’

একই এলাকার কৃষক মারুফ আহম্মেদ জানান, আমরা স্থানীয় বাজারের চেয়ে বাইরে রপ্তানি করলে ভালো দাম পাই। এজন্য কৃষি অফিসের সহায়তায় আমরা আগাম ফুলকপি উৎপাদন করে বাজারজাত করছি। এছাড়া কৃষি বিপনন কেন্দ্রের মাধ্যমে আমরা ন্যায্য মূল্যে ফসল বিক্রি করতে পারছি। এছাড়া সমবায়ভিত্তিতে ফুলকপিসহ অন্যান্য সবজি চাষাবাদ করে অন্য জেলায় বিক্রি করি। এতে আমরা সবজির ন্যায্য মূল্য পেয়ে লাভবান হচ্ছি।

মিরপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ রমেশ চন্দ্র ঘোষ বলেন, ‘এই এলাকার আবহাওয়া ও মাটি সবজি চাষের জন্য খুবই উপযোগী। এছাড়া কৃষি বিভাগের পরামর্শে এই অঞ্চলের মানুষ আধুনিক চাষের সঙ্গে সম্পৃক্ত হয়েছে। চাষীরা আগাম জাতের ফুলকপি চাষ করে বেশ লাভবান হচ্ছেন। ফলে তারা ফুলকপি চাষের দিকে ঝুঁকছেন।’

তিনি আরো বলেন, ‘শীতকালেই আগাম, মধ্যম ও নাবী মৌসুমে বিভিন্ন জাতের ফুলকপি আবাদ করা যায়। এ ছাড়া গ্রীষ্মকালেও চাষের উপযোগী জাত রয়েছে।’

তিনি আরো জানান, মালিহাদ ইউনিয়নের বিশেষ করে সবজি উৎপাদন ও প্রক্রিয়াজাত এবং বাজারজাত করণের জন্য আমরা কৃষি বিপনন কেন্দ্র স্থাপন করি এবং এফএমএ কমিটির গঠন করি। এর ফলে উক্ত এলাকার কৃষকরা তাদের উৎপাদিত সবজির ভালো দাম পাচ্ছে। সূত্র: রাইজিং বিডি।

স্ব.বা/শা

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *