প্রধানমন্ত্রীর অনুদানে পিতৃহারা ছেলের মতো মেয়েটিও পেয়েছে গোল্ডেন জিপিএ-৫ 

শিক্ষা
আল-আফতাব খান সুইট, নাটোর: প্রধানমন্ত্রীর অনুদানে বেঁচে থাকা সেই পরিবারের মেয়েটিও তার ভাইয়ের মতোই পরীক্ষায় ভালো ফল করেছে। সে এবার এসএসসি পরীক্ষায় বিজ্ঞান বিভাগ থেকে সব বিষয়ে জিপিএ-৫ পেয়েছে। তার ভাই গত বছর মেডিকেল কলেজে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন। দুই ভাই-বোনের সাফল্যে সবাই খুশি।
কিন্তু মেয়েটির উচ্চমাধ্যমিক শ্রেণিতে পড়াশোনার খরচ নিয়ে পরিবারটি দুশ্চিন্তায় পড়েছে।
নাটোরের বড়াইগ্রামের সেন্ট জোসেফ’স স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে পরীক্ষা দিয়ে জিপিএ-৫ প্রাপ্ত মেয়েটি হলো- নাটোরের লালপুর উপজেলার কদিমচিলান গ্রামের নিরাপত্তাপ্রহরী ২০১৩ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি যুদ্ধাপরাধী দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর মামলার রায়ের দিন জামায়াত-শিবির কর্মীর হাতে নিহত খাইরুল ইসলামের মেয়ে খাদিজাতুল কোবরা।
তার বিদ্যালয়ের শিক্ষক রুবেল হোসেন বলেন, মেয়েটি তার ভাইয়ের মতোই মেধাবী।
মেয়েটির বাবার হত্যাকাণ্ড নিয়ে সেসময় বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে খবর প্রকাশিত হয়। সেই খবরের কাটিংসহ তার মা লিপি খাতুন নাটোরের একটি কলেজের উপাধ্যক্ষ বাবুল আক্তারের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর কাছে একটি আবেদন করেন। তখন প্রধানমন্ত্রী মেয়েটির মায়ের হাতে ১০ লাখ টাকার পারিবারিক সঞ্চয়পত্র তুলে দেন। এই অনুদানের টাকায় তার সংসার ও অদম্য মেধাবী ছেলে মেয়ের লেখাপড়া চলে।
খাদিজাতুল কোবরার ভাই জুবায়ের হোসেন গত বছর মেডিকেল কলেজে ভর্তির সুযোগ পেলেও পড়াশোনার খরচ নিয়ে সংকটে পড়ে পরিবারটি। এ নিয়ে গত বছরের ২১ অক্টোবর ‘প্রধানমন্ত্রীর অনুদানের মান রেখেছেন জুবায়ের’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। এরপর ঢাকার এক সহৃদয় ব্যক্তি তাঁর পড়াশোনার দায়িত্ব নিলে তাঁর সহযোগিতায় জুবায়েরকে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজে ভর্তি হন।
লিপি খাতুন বলেন, এই অদম্য মেধাবী এতিম  সন্তানদের নিয়ে তৎকালীন সাংসদ ও বর্তমান পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম সেই সময় তাদেরকে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাতের সুযোগ করে দিয়েছিলেন। তিনি আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী  সব কথা শুনে তাদেরকে জড়িয়ে ধরে বলেছিলেন, ১০ লাখ টাকা দিলে তার অনেক অংশীদার বের হবে। এ জন্য পারিবারিক সঞ্চয়পত্র দেওয়া হলো।
লিপি খাতুন আরো জানান, এই সঞ্চয়পত্র থেকে প্রতি মাসে যে মুনাফা পাওয়া যায়, তা দিয়ে তাঁর সংসার খরচ ও ছেলেমেয়ের লেখাপড়া চালাতে হয়। এখন মুনাফার পরিমাণ কমে এসেছে। মাসে সাত হাজার টাকার কিছু বেশি পান। তাই মেয়ের পরর্বতী লেখা পড়া চালাতে হিমসিম খেতে হবে।
উল্লেখ্য ২০১৩ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি যুদ্ধাপরাধের দায়ে সাঈদীর ফাঁসির রায় হয়। দুপুরে নামাজ পড়ে উঠে খাইরুল স্ত্রীর কাছে ভাত খেতে চান। তাঁর স্ত্রী রান্নাঘরে খাবার আনতে যান। এ সময় হইচই শুনে খাইরুল বাড়ির বাইরে আসেন। তখন তাঁর চাচার বাড়িতে জামায়াত-শিবিরের কর্মীরা হামলা করে আগুন লাগিয়ে দেন। খায়রুলকে সামনে পেয়ে তাঁকে কুপিয়ে হত্যা করেন তাঁরা।

স্ব.বা/বা

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *