রাবিতে মাস্টার্সের ফলাফল মূল্যায়নে পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ

শিক্ষা

স্বদেশবাণী ডেস্ক: রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের সভাপতি ড. সৈয়দ মো. আবদুল্লাহ আল মামুন চৌধুরীর বিরুদ্ধে মাস্টার্স (এমএসএস-১৯) পরীক্ষার ফল বিপর্যয়, সেচ্ছাচারিতার ও পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ তুলে ফলাফল পরিবর্তনের জন্য সাতদিনের আল্টিমেটাম দিয়েছে উক্ত বিভাগের (২০১৪-১৫ শিক্ষাবর্ষ) শিক্ষার্থীরা। প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে মাস্টার্সের শিক্ষার্থী মাহমুদুল হাসান এ তথ্য জানিয়েছেন।

বিজ্ঞপ্তিতে জানান, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের ২০১৯ সালের মাস্টার্স পরীক্ষার্থীরা গত ৯ ডিসেম্বর আমাদের বিভাগের সভাপতি আবদুল্লাহ আল মামুন চৌধুরী স্যারের বিরুদ্ধে উদ্দেশ্যমূলক ফলাফল বিপর্যয়ের অভিযোগ এনে তদন্তপূর্বক ফলাফল পরিবর্তনের দাবিতে পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক বরাবর আবেদন জমা দেয়। পরবর্তীতে ২২ ডিসেম্বর সংবাদ সম্মেলন করে বিভাগ সভাপতির স্বেচ্ছাচারিতা ও অনিয়ম তুলে ধরা হয়।

তবে এত গুরুতর অভিযোগ থাকা স্বত্বেও প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোন তদন্ত কমিটি গঠন করেনি। যা আমাদের মনে হতাশা জন্ম দিয়েছে। তবে আগামী ৭ দিনের মাঝে প্রশাসন কোন পদক্ষেপ গ্রহণ না করলে আমরা আইনানুগ প্রক্রিয়ায় যেতে বাধ্য হবো।

এর পূর্বে গত ৯ ডিসেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক বরাবর (এমএসএস) পরীক্ষার ফল বিপর্যয় ও তদন্ত পূর্বক ফলাফল পরিবর্তনের আবেদন জানান। পরবর্তীতে ২২ ডিসেম্বর বিরুদ্ধে ২০১৯ সালের (এমএসএস) পরীক্ষার ফল বিপর্যয়, সেচ্ছাচারিতা ও পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ তুলে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে উক্ত বিভাগের ২০১৪-১৫ সেশনের শিক্ষার্থীরা।

তবে সব অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে (২৮ ডিসেম্বর) পাল্টা প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের সভাপতি আবদুল্লাহ আল মামুন চৌধুরী জানিয়েছেন, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের মাস্টার্স ২০১৯ (থিসিস) ফলাফল গত ১১নবেম্বর প্রকাশিত হয়েছে। প্রায় ১ মাস পর শিক্ষার্থীরা পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের নিকট ফলাফলে অসন্তোষ জানিয়ে আবেদন জমা দিয়েছে।

থিসিস পরিচালনা জন্য বিভাগে অভিজ্ঞ শিক্ষক না থাকায় আমাকেই সময় দিতে হয়েছে কিন্তু এসব থিসিস আমি পরীক্ষা করিনি। থিসিসগুলো ঢাবি, জাহাঙ্গীরনগর, জবি ও রাবির অভিজ্ঞ শিক্ষকরাই মূল্যায়ন করেছেন। এসব থিসিস দু’জন পরীক্ষক মূল্যায়ন করেছেন। অভ্যন্তরীণ মূল্যায়ন করার ক্ষেত্রে যে অভিযোগ তোলা হয়েছে তাতে আমার কোন দায়-দায়িত্ব নেই। বিভাগের সকল কার্যক্রম বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল নিয়ম অনুসরণ করে করা হয়েছে। এদিকে শিক্ষার্থীদের সাথে সংহতি প্রকাশ করে প্রেস বিজ্ঞপ্তি দিয়েছে বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন।

বিজ্ঞপ্তিতে তারা বলেন, শিক্ষার্থীরা আন্দোলন করেও প্রশাসনের দ্বারে-দ্বারে ঘুরেও কোন ফল পাচ্ছেনা। আমরা ছাত্র ইউনিয়ন মনে করি রাবি দুর্নীতির বেড়াজালে আক্রান্ত। অনতিবিলম্বে তদন্ত কমিটি গঠন করে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানাচ্ছি। অন্যথায় শিক্ষার্থীদের স্বার্থে কঠোর কর্মসূচী দিতে বাধ্য হবো। জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ও ছাত্র উপদেষ্টা (অতিরিক্ত দায়িত্বপ্রাপ্ত) প্রফেসর লুৎফর রহমান বলেন, আমি কয়েকদিন যাবৎ ক্যাম্পাসের বাহিরে আছি। ক্যাম্পাসে ফিরে এ বিষয়ে খোঁজ নিবো।

তদন্ত কমিটির গঠনের বিষয়ে জানতে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক আনন্দ কুমার সাহাকে মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও ফোন রিসিভ করেননি।

প্রসঙ্গত, রাবি আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের মাস্টার্স (২০১৯) শিক্ষার্থীদের অভিযোগগুলো হলো, বিভাগের সভাপতির একাই ৫টি কোর্সের উত্তরপত্র মূল্যায়ন। ইনকোর্স পরীক্ষা না নিয়েই ইচ্ছাকৃতভাবে কম নাম্বার প্রদান, পরিক্ষক প্যানেল বহির্ভূত শিক্ষকদের দিয়ে উত্তরপত্র মূল্যায়ন, পরীক্ষা কমিটির সদস্য হিসেবে দুজন বহিস্থ শিক্ষক রাখা ইত্যাদি।

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *