ঢাবিতে হামলার পরও মধুর ক্যান্টিনে ছাত্রদল

শিক্ষা

স্বদেশ বাণী ডেস্ক: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) ক্যাম্পাসে সোমবার ছাত্রদলের ওপর হামলা করেছে ছাত্রলীগ। এরপর দিনই আজ আবার মধুর ক্যান্টিনে এসে জড়ো হয়েছেন ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা। তারা সেখানে দীর্ঘক্ষণ অবস্থান করেন। পরে উপাচার্য অধ্যাপক আখতারুজ্জামানের সঙ্গে দেখা করেন।

মঙ্গলবার সকাল ১০টার দিকে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের সভাপতি ফজলুর রহমান খোকন এবং সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন শ্যামলের নেতৃত্বে প্রায় শতাধিক নেতাকর্মী মধুর ক্যান্টিনে প্রবেশ করেন। তারা সেখানে কিছু সময় অবস্থান করেন। এ সময় ক্যান্টিনে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কিংবা বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ের শীর্ষ কোনো নেতা উপস্থিত ছিলেন।

পরে ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা ভিসি আখতারুজ্জামানের কার্যালয়ে যান। সেখানে ভিসির কাছে তারা গতকালের হামলার বিষয়ে পদক্ষেপ নেয়ার দাবি জানান। তারা ক্যাম্পাসে সহাবস্থান নিশ্চিত করারও দাবি জানান।

জানতে চাইলে ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন শ্যামল জানান, তারা সুষ্ঠু সহাবস্থানের রাজনীতিতে বিশ্বাস করেন বলেই হামলার পরও ক্যাম্পাসে এসেছেন।

এ সময় গতকালের হামলার বিষয়ে আজ প্রক্টরের কাছে লিখিত অভিযোগ দেয়ার কথা জানান তিনি।

ছাত্রদলের কার্যক্রমে আদালতের নিষেধাজ্ঞার বিষয়ে জানতে চাইলে ছাত্রদলের সভাপতি ফজলুর রহমান বলেন, আমরা এ সংক্রান্ত কোনো নিষেধাজ্ঞা এখনও পাই নি। পেলে আইনিভাবে মোকাবেলা করা হবে।

প্রসঙ্গত, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের ওপর হামলা চালিয়েছে ছাত্রলীগ। সোমবার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের হাকিম চত্বর, দোয়েল চত্বর ও টিএসসিতে দফায় দফায় হামলার ঘটনা ঘটে।

এতে অন্তত ২০ জন আহত হয়েছেন। এর মধ্যে তিন সাংবাদিক রয়েছেন। গুরুতর আহত ১০ জন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

হামলায় আহতরা হলেন- ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের যুগ্ম সম্পাদক মো. শাহনেওয়াজ, ডাকসুর এজিএস পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী মো. খোরশেদ আলম সোহেল, মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমান হলের যুগ্ম আহ্বায়ক কামরুল ইসলাম, বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক জাকিরুল ইসলাম শাহীন, শহীদুল্লাহ হলের জিএস প্রার্থী মাহবুবুল আলম শাহীন, সূর্যসেন হলের যুগ্ম আহ্বায়ক ফিরোজ আলম, আতাউর রহমান, খন্দকার ফাহিম, সাগর রহমান ও কর্মী শাহ আলম চৌধুরীসহ অন্তত ১৭ জন।

ঘটনার সংবাদ সংগ্রহের সময় হামলার শিকার হন স্টুডেন্ট জার্নালের বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক আনিসুর রহমান, প্রতিদিনের সংবাদের রাফাতুল ইসলাম রাফি এবং বিজনেস বাংলাদেশের আফছার মুন্না।

হামলার শিকার ও প্রত্যক্ষদর্শী কয়েকজন জানান, ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন শ্যামল সকালে নেতাকর্মীদের নিয়ে মধুর ক্যান্টিনে গিয়েছিলেন।

সেখান থেকে দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে হাকিম চত্বরে একটি বেসরকারি টিভি চ্যানেলকে সাক্ষাৎকার দিতে আসেন তিনি। এ সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি সনজিত চন্দ্র দাস তার অনুসারীদের নিয়ে সেখানে যান এবং ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের এলাকা ছেড়ে চলে যেতে বলেন।

এর কিছুক্ষণ পর ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা টিএসসি সংলগ্ন ডাসে অন্য সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন। এরপর ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক নেতাকর্মীদের বিদায় জানিয়ে রওনা দিতেই সনজিতের অনুসারীরা রড, স্ট্যাম্প, লাঠিসোটা নিয়ে তাদের ওপর চড়াও হয়।

এতে ৫০ জনের মতো নেতাকর্মী সক্রিয়ভাবে অংশ নেন। এর কিছুক্ষণ পর দোয়েল চত্বর এবং হাকিম চত্বরেও হামলার ঘটনা ঘটে। দলে দলে ভাগ হয়ে তারা ছাত্রদল নেতাকর্মীদের মারতে থাকে।

এর মধ্যে টিএসসির পশ্চিম পাশে এক নেতাকে মেরে অজ্ঞান অবস্থায় রাস্তায় ফেলে যায় তারা। টিএসসির বটতলার নিচেও একজনকে মারতে দেখা যায়। পরে ছাত্রলীগের নামে স্লোগান দিয়ে স্থান ত্যাগ করে হামলাকারীরা।

ভুক্তভোগী কয়েকজন জানান, ছাত্রলীগের স্যার এএফ রহমান হলের আপেল মাহমুদ, জসিমউদ্দীন হলের মহসিন আলম তালুকদার, সূর্যসেন হলের যুগ্ম সম্পাদক সৈয়দ শরিফুল ইসলাম শপু, সূর্যসেন হল ছাত্রলীগের সহসভাপতি রাইসুল ইসলাম, সূর্যসেন হল সংসদের ভিপি মারিয়াম জামান খান সোহান, জগন্নাথ হল সংসদের জিএস কাজল দাস, জসীমউদ্দীন হল সংসদের জিএস ইমামুল হাসান, জহুরুল হক হলের সহসম্পাদক হাসান রাহাত হামলায় অংশ নেয়। সূত্র: যুগান্তর।

স্ব.বা/শা

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *