নায়ক শাকিব খানের খামখেয়ালিতে আটক সিনেমা, প্রযোজকের মামলা

বিনোদন

বিনোদন ডেস্ক: ঢাকাই সিনেমার সফল জুটি শাকিব খান ও অপু বিশ্বাস। পর্দার বাইরেও তারা ছিলেন স্বামী-স্ত্রী, কিন্তু গেল বছরের মাঝামাঝি সময়ে এই দুই তারকার বিচ্ছেদ ঘটে। যার কারণে হুমকির মুখে পড়েছে এই জুটির নির্মিতব্য বেশ কয়েকটি সিনেমা।

ছবিগুলোর বেশিরভাগ অংশের শুটিং শেষ হলেও শাকিব-অপুর শিডিউল না পাওয়ায় বাকী কাজ শেষ করতে পারছেন না পরিচালকরা। তাই অনিশ্চিত ভবিষ্যতের এইসব সিনেমা নিয়ে প্রযোজক পড়েছেন নিশ্চিত লোকসানের মুখে।

কিছু ছবির কাজ শেষ হলেও এই জুটির অসমাপ্ত ছবিগুলোর তালিকায় আছে ‘লাভ ২০১৪’, ‘মা’, ‘ও মাই ডার্লিং’ ছবিগুলো। এদিকে অপু বিশ্বাস শুটিং করতে রাজি হলেও সাড়া মেলে না শাকিবের পক্ষ থেকে।

কোনো উপায়ন্তর না দেখে অবশেষে শাকিব খানের বিরুদ্ধে মামলা করতে যাচ্ছেন ‘মাই ডার্লিং’ সিনেমার প্রযোজক মনিরুজ্জামান। ছবিটি পরিচালনা করছিলেন মনতাজুর রহমান আকবর।

প্রযোজক মনিরুজ্জামান বলেন, ‘আমার কোটি টাকার লোকসান হবে সেটা আমি বসে বসে দেখতে পারি না। আমি মামলার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। সেই ২০১৪ সালের সিনেমা ‘মাই ডার্লিং’। আজও শেষ হয়নি শুধুমাত্র নায়কের খামখেয়ালিতে। এটা মানা যায়?

যেখানে তিনি ১৭ দিনে একটি ছবির কাজ শেষ করে সেটা মুক্তি দিয়ে দিতে পারেন সেখানে আমার ছবিতে ২৮ দিন কাজ করেও শুটিংটাই শেষ করতে পারলেন না। অনেক কষ্ট আছে। সেসব বলতে চাই না। তার মতো পেশাদার একজন অভিনেতার কাছে এমন আচরণ কেউ প্রত্যাশা করে না। সবাই শুধু প্রযোজকদের দোষ দেন যে আমরা সিনেমা বানাই না। কিন্তু সিনেমা করতে এসে আমরা যে কত রকম হেনস্তার শিকার হই সেটা ক’জনে খবর রাখে? আপনারাও লিখেন না।’

এই প্রযোজক জানান, ১৫ লাখ টাকা পারিশ্রমিকে চুক্তি হয় শাকিব খানের সঙ্গে। সাইনিংয়েই ১৫ লাখ টাকার চেক দেয়া হয় নায়ককে। কিছুদিন শুটিং করেই নানান টালবাহানা শুরু করেন শাকিব। এ নিয়ে অনেক মিটিং পরামর্শ করেও কোনো সুরাহা পাননি পরিচালক-প্রযোজক।

এরপর ২০১৭ সালের দিকে শাকিব-অপুর সম্পর্কে ফাটল ধরে। তখন থেকে অপুর সঙ্গে কাজ করতে চান না শাকিব। ফলে ‘মাই ডার্লিং’ সিনেমাটির কাজ আর শুরু করা সম্ভব হয়নি।

প্রযোজক মনিরুজ্জামান আরও বলেন, ‘আমি এক চেকে শাকিবকে তার পারিশ্রমিকের ১৫ লাখ টাকা দিয়েছি। কিছুদিন কাজ করেই শাকিব শিডিউল নিয়ে টালবাহানা শুরু করেন। এর পরে আরো পাঁচ লাখ টাকা দাবি করেন। অপু বিশ্বাসও বিষয়টি জানেন। সাদ্দামের মাধ্যমে ২ লাখ টাকা দিলে শুটিংয়ে অংশ নেন শাকিব। এর পরে আবার টালবাহানা।

অমিত হাসান, হিমেল ভাইয়ের মধ্যস্ততায় এফডিসির লাইটিং রুমে বসে আরো তিন লাখ টাকা দিয়ে রশিদ নিয়েছি। এর পরও শিডিউল দেয়নি। এটি ছিল অপু বিশ্বাস প্রেগনেন্ট হওয়ার আগের ঘটনা। এর মাঝে সে অপু বিশ্বাসের সঙ্গে অন্য সিনেমায় কাজ করলেও আমাকে শিডিউল দেননি। শিডিউল চাইলে বলতো দিচ্ছি, দিব। কিন্তু দেয়নি। এখন পর্যন্ত সে বিষয়টি নিয়ে কোনো সমাধানে আসেনি। আমার এতো টাকার ক্ষতি কে পূরণ করে দিবে।

সিনেমার দর্শক তো এমনিতেই নেই। তবুও ছবিটা রিলিজ দিতে পারলে যা ফেরত পাওয়া যায়। কিন্তু শুটিং শেষ না করলে সেটা কী করে সম্ভব?’

এ বিষয়ে চলচ্চিত্রের সংগঠনগুলোতে অভিযোগ করেও কোনো ফলাফল পাননি বলে জানান প্রযোজক। পরিচালক সমিতির কাছে গিয়েছি। তারা পরামর্শ দিয়েছেন আইনি ব্যবস্থা নিতে। সাংগঠনিকভাবে তাদের যা করণীয় সেটুকু দিয়ে আমাকে সাহায্য করবেন বলে কথা দিয়েছেন।’

‘অপু বিশ্বাস শুটিং করতে রাজি আছেন। যদি শাকিব রাজি না হন তাহলে তিনি আমার ক্ষতিপূরণ দেবেন। এই সিনেমার জন্য আমার ২ কোটি টাকা ক্ষতির মুখে। ক্ষতিপূরণ না পেলে আমি মামলা করবো’- যোগ করেন প্রযোজক মনিরুজ্জামান।

প্রসঙ্গত, শাকিব-অপু জুটি ছাড়াও ‘মাই ডার্লিং’ ছবিতে অভিনয় করেছেন অমিত হাসান, প্রবীর মিত্র, রেহানা জলি ও কাবিলা। এর কাহিনি, চিত্রনাট্য ও সংলাপ লিখেছেন পরিচালক মনতাজুর রহমান আকবর নিজে। সূত্র: বাংলাদেশ জার্নাল।

স্ব.বা/শা

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *