আসলে তারা ইউটিউব কন্টেন্ট বানাবে, রসালো হেডিং দেবে: পরীমনি

বিনোদন

স্বদেশ বাণী ডেস্ক: ২৭ দিন বন্দি থেকে মুক্তি পেয়েছেন ঢালিউড নায়িকা পরীমনি। বুধবার বাসায় ফেরার পর নতুন বিড়ম্বনায় পড়েছেন। তাকে বাসা ছাড়ার নোটিস দেওয়া হয়েছে। তড়িঘড়ি করে কোথায় বাসা খুঁজে পাবেন সেটি নিয়ে চিন্তিত নায়িকা। সেই সঙ্গে কিছু গণমাধ্যম কর্মীর ওপর বিরক্ত পরীমনি। বারবার নিষেধ করার পরও তার বক্তব্য নেওয়ার জন্য বাসায় ভিড় করায় এই বিরক্তি প্রকাশ করেন সদ্য জেল থেকে বেরিয়ে আসা ঢাকাই সিনেমার নায়িকা।

পরীমনি বলেন, আমার সঙ্গে যা যা হয়েছে সবই আমি বলব। কিন্তু আপনি শুধু বাসায় এসে দেখে যান এখানে একটা মানুষের থাকার মতো পরিস্থিতি আছে কিনা। আপনি পাগল হয়ে যাবেন। কোনো বাড়িওয়ালা এটা মানবেন না। আমার বাড়িওয়ালা তো অনেক ভদ্র। তিনি অনেক সুন্দর করে আমাকে বলেছেন। আমি বাড়িওয়ালা হলে হয়তো এটা আমিও সহ্য করতাম না। কারণ এভাবে টর্চার করে কেউ? সবাই পরিচয় দিচ্ছেন সাংবাদিক। সবাই কি সাংবাদিক? মোবাইল হাতে নিলেই কি সাংবাদিক হয়ে যায়? এরা কেউ আসলে সাংবাদিক না। বেশিরভাগ ইউটিউবে কন্টেন্ট বানায় তারা। ফ্ল্যাটের লোকজন তাদের সরে যাওয়ার অনুরোধ করলেও তারা না সরে সাংবাদিক পরিচয়ে দাঁড়িয়ে থাকে। সাংবাদিক বলে অন্য ফ্ল্যাটের লোকজনকে হুমকি-ধমকি দিচ্ছে। আসলে এসব করে তারা ইউটিউব কন্টেন্ট বানাবে। রসালো হেডিং দেবে।

এই চিত্রনায়িকা বলেন, বেঁচে থাকার জন্য একটা মানুষের মিনিমাম স্পেস তো লাগে। আমার থাকার জায়গাটা পর্যন্ত ছাড়তেছে না। আমি টায়ার্ড হয়ে যাই মাঝে মাঝে। কতক্ষণ পারা যায় এভাবে? কার বাসার নিচে এভাবে দাঁড়িয়ে থাকলে কে মেনে নেবে? একটা মাস ধরে এ অবস্থা চলছে।

 

‘শারীরিক অবস্থা এখন কেমন’- এমন প্রশ্নের উত্তরে মৃদু হাসিতে পরীমনি বলেন, পাগল পাগল হয়ে গেছি। মুক্তি পাওয়ার আগের রাতে এক্সাইটমেন্টে ঘুম হয়নি। আমাদের সঙ্গে যারা ছিল ওদের কেউ কেউ নামাজ পড়ছিল, কেউ জেগে ছিল। ওদের সঙ্গেও একটা সম্পর্ক হয়ে গিয়েছিল। ফজরের আগে ভাবলাম দুই ঘণ্টা ঘুমাই, ৮টার সময়ে হয়তো ডাকবে। ওমা, ফজরের আজানের পরই শুরু হয়েছে একজনের পর একজন আসা। একজন বলছে রেডি হও, যেতে হবে। একটা ফোঁটাও আমি ঘুমাইনি। গাড়িতে একটুখানি চোখটা বন্ধ হয়েছিল।

মঙ্গলবার দুপুরে পরীমনির জামিনের আদেশ দেন ঢাকার মহানগর দায়রা জজ কেএম ইমরুল কায়েশ। নারী, অভিনেত্রী ও অসুস্থতা বিবেচনায় ৫০ হাজার টাকা মুচলেকায় তিনি পরীমনির জামিন মঞ্জুর করেন। এরপর দিন জামিনে মুক্ত হন নায়িকা।

গত ৪ আগস্ট সুনির্দিষ্ট তথ্যের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে পরীমনিকে তার বনানীর বাসা থেকে আটক করে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব)। মাদক মামলায় তিন দফায় সাত দিন রিমান্ডে নিয়ে পরীমনিকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে সিআইডি।

৪ আগস্ট বিকালে র‌্যাবের উপস্থিতি টের পেয়ে তাৎক্ষণিক নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে লাইভে আসেন পরীমনি। এ সময় র্যাবের পক্ষ থেকে পরীমনিকে তার বাসায় অভিযানের কথা জানানো হয়।

লাইভে পরীমনি বলেন, আমি ঘুমাইতেছিলাম। বাসার নিচে মেইনগেটে সব ভাঙচুর করে তারা ওপরে চলে আসছে। এখন বাসার গেট ভাঙচুরের চেষ্টা করছে। বারবার কলিংবেল বাজাচ্ছে। পুলিশসহ কেউ শুনছে না, আমি সবাইকে ফোন করলাম, কেউ আসছে না।

মরে গেলে আসবেন ভাই? তিনি আরও বলেন, আমার মনে হচ্ছে এরা ডাকাত। একেক জনের একেক রকমের চেহারা। এরা যদি ডাকাত হয় কী করবেন? আমি এটার ভয় করছিলাম। আমি আজ লাইভ কাটব না।

এখানে থানা থেকে আসতে কতক্ষণ লাগে? মানুষ কি মরে যাবে? তারা নাকি কেউ জানে না, কোন থানা থেকে আসছে, সিআইডি না র্যাব কেউ কিছু বলতে পারছে না।

পরীমনি সবার উদ্দেশে আরও বলেন, আমি বুঝতেছি না আমি মরে গেলে আসবেন? আমি তো হার্টআট্যাক করব। ব্রেনস্ট্রোক করে মরে যাব। এটা একদম টর্চার। লাইভে থেকে আলোচিত এই চিত্রনায়িকা কারও একজনের সঙ্গে ফোনে কথা বলেন।

তখন তাকে বলতে শোনা যায়, আমি মরে যাব। আর পৃথিবী দেখব না! আমি লাইভ কাটব না। আমি দেখিয়ে মরব। আমার সঙ্গে কেউ কিছু করে পার পাবে না। আর মেরে ফেললে তো কোনো কিছু করার নেই।

২০১৪ সালে সিনেমায় ক্যারিয়ার শুরু করা পরীমনি এ পর্যন্ত ৩০টি সিনেমা ও বেশ কয়েকটি টিভিসিতে অভিনয় করেছেন। পিরোজপুরের মেয়ে পরীমনিকে চলচ্চিত্র জগতে নিয়ে আসেন প্রযোজক রাজ।

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *