বিক্ষোভ ঠেকাতে কর্নাটক-উত্তর প্রদেশে ১৪৪ ধারা জারি

আন্তর্জাতিক লীড

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনের প্রতিবাদে ভারত জুড়ে ছড়িয়ে পড়া বিক্ষোভের আগুন নিভছে না, বরং দিনে দিনে বেড়েই চলেছে। আর এই বিক্ষোভ দমনে বিভিন্ন রাজ্যে একই অস্ত্র ব্যবহার করে চলেছে মোদি সরকার। যার নাম ১৪৪ ধারা জারি। আসাম, ত্রিপুরা, মনিপুর, দিল্লির পর বুধবার মধ্যরাতে এবার উত্তরপ্রদেশেও জারি করা হয়েছে ১৪৪ ধারা।

বিক্ষোভ ঠেকাতে এর আগে ৫ দিনের কারফিউ জারি করা হয়েছে কর্নাটকের রাজধানী বেঙ্গালুরুতে।

বিতর্কিত নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল লোকসভায় পাস হওয়ার পর থেকেই ভারত জুড়ে ছড়িয়ে পড়েছে বিক্ষোভ। বিক্ষোভের শুরুটা হয়েছিল উত্তর পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলো যথা-আসাম, ত্রিপুরা, মনিপুর, মেঘালয় থেকে। পরে তা পশ্চিবঙ্গ ও দিল্লিতেও ছড়িয়ে পড়ে। ইতিমধ্যে পশ্চিমবঙ্গসহ কমপক্ষে ছয়টি রাজ্য এ আইন প্রয়োগ না করার ঘোষণা দিয়েছে।

দেশ জুড়ে ছড়িয়ে পড়া প্রতিবাদ ও বিক্ষোভ নিয়ন্ত্রণে বিভিন্ন রাজ্যে ১৪৪ ধারা জারি ও মোবাইল-ইন্টরনেট সংযোগ বন্ধ রেখেছে কেন্দ্রীয় সরকার। এরই ধারাবাহিকতায় বুধবার মধ্যরাতে উত্তরপ্রদেশে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে।

রাজ্য পুলিশের ডিজিপি স্থানীয় বাসিন্দাদের উদ্দেশে টুইট করে জানান, ‘উত্তরপ্রদেশে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে। ফলে বৃহস্পতিবার রাজ্যের কোথাও কোনও প্রকার মিছিল ও সমাবেশের অনুমতি দেওয়া হয়নি। দয়া করে বিক্ষোভে অংশ গ্রহণ করবেন না। অভিভাবকদের কাছে অনুরোধ, তারা যেন তাদের সন্তানকে বোঝান।’

স্থানীয় সংবাদ মাধ্যমগুলো বলছে, বৃহস্পতিবার নাগরিকত্ব আইনের প্রতিবাদসহ একাধিক ইস্যুতে যোগী সরকার ও কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করার ঘোষণা দিয়েছিল বিরোধীরা। এই বিক্ষোভে সমাজবাদী পার্টি ও অন্যান্য বেশ কয়েকটি সংগঠনের অংশ নেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু তার আগেই রাজ্যে জুড়ে ১৪৪ ধারা জারি করা হলো। বিরোধীদের অভিযোগ, বিরোধী কণ্ঠস্বর রোধের জন্যই এই পদক্ষেপ।

এর আগে বৃহস্পতিবার থেকে কর্নাটকের রাজধানী বেঙ্গালুরুতে বৃহস্পতিবার থেকে সোমবার, মোট পাঁচ দিনের জন্য কারফিউ জারি করা হয়েছে। একই সঙ্গে নিষিদ্ধ হয়েছে সব ধরনের মিটিং-মিছিলও। ৫ জনের বেশি লোকের একত্রিত হওয়া চলবে না বলেও ঘোষণা স্পষ্ট করে জানিয়ে দেয়া হয়েছে।

এ প্রসঙ্গে কর্ণাটকের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী জানিয়েছেন, ‘আমরা কোনও ধরনের হিংসা চাই না। যে কারণে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে কারফিউ জারি করা হল।’

বৃহস্পতিবারই কর্ণাটকে বনধের ডাক দিয়েছিল সিপিএমসহ ওই রাজ্যের সংখ্যালঘু সংগঠনগুলি। একই সঙ্গে বেশ কয়েকটি সংগঠনের তরফে বৃহস্পতিবার বিক্ষোভ কর্মসূচীও রয়েছে বৃহস্পতিবার সকাল ১১ টা নাগাদ ‘হাম ভারত কে লোগ’ব্যানার নিয়ে একটি বিক্ষোভ সমাবেশ হওয়ার কথা ছিলো টাউন হলে। পাশাপাশি শুক্রবারও কলেজ শিক্ষার্থীদের বেঙ্গালুরুর টাউন হলে জমায়েতের ডাক দিয়েছিল। এসব বিক্ষোভ বন্ধ করতেই তড়িঘড়ি কারফিউ জারি করেছে রাজ্য সরকার।

এ অবস্থায় বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার কর্ণাটক, বিশেষ করে রাজ্যের রাজধানী শহর বেঙ্গালুরুর পরিস্থিতি কোন দিকে যায় তা নিয়ে আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। কারফিউ ভেঙে বিরোধীরা যদি প্রতিবাদ বিক্ষোভে সামিল হয় তাহলে রক্তক্ষয়ী সংঘাত নিশ্চিত। সূত্র: বাংলাদেশ জার্নাল।

স্ব.বা/শা

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *