চীনে খাবারের অভাবে ‘মরতে’ বসেছেন ১৭২ বাংলাদেশি ছাত্র-ছাত্রী!

আন্তর্জাতিক লীড শিক্ষা

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: চীনে হুবেই প্রদেশের যে উহান শহর থেকে প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়েছে সেখানে থ্রি গোর্জেস ইউনিভার্সিটির ১৭২ বাংলাদেশি ছাত্র-ছাত্রী আটকা পড়েছেন। এসব শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয়ের যে ডরমিটরিতে (আবাসিক হল) থাকেন সেটি সিলগালা করে দেয়া হয়েছে। ফলে কেউ বাইরে বের হতে পারছেন না। কার্যত তারা এখন বন্দী।

তাদের খাবার ফুরিয়ে গেছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষও কোনো খাবার সরবরাহ করছে না। ফলে খাবার ও বিশুদ্ধ পানির সংকটে অনেকে অসুস্থ হওয়ার উপক্রম।

এমন পরিস্থিতি নিজেদের জীবন বাঁচাতে বাংলাদেশ সরকারের কাছে সাহায্য চেয়ে অনেক শিক্ষার্থী ফেসবুকে আকুতি জানিয়েছেন।

দ্বীন মুহাম্মদ প্রিয় নামের এক শিক্ষার্থী তার আইডিতে লিখেছেন, ‘খাবারের অভাব যে কত বড় একটা অভাব তা নিজে সম্মুখীন না হলে হয়তো বুঝতে পারতাম না। পানিটা তাও ফুটিয়ে খাওয়া যায়, কিন্তু খাবার না থাকলে তো আর রান্না করা যায় না। আমরা এখানে ১৭২ বাংলাদেশি যে কি পরিমাণ কষ্টে আছি, তা ভাষায় প্রকাশ করতে পারব না। আমাদের ডরমিটরি সিলগালা করে দেয়া হয়েছে। আমরা বাইরে যেতে পারি না এবং কেউ ভেতরেও আসতে পারে না।’

তিনি আরও লেখেন– ‘ইউনিভার্সিটি খাবার দিতে চেয়েছে সেই তিন দিন আগে, খাবার অর্ডার করেছিলাম এখন পর্যন্ত খাবার পাইনি। এ অবস্থায় আমরা এখানে কতদিন সুস্থভাবে বেঁচে থাকব সেটি জানি না। আমাদের ট্রেন, স্টেশন ও বিমানবন্দর বন্ধ। সরকারের সাহায্য ব্যতীত আমরা এখান থেকে বের হতে পারব না। ’

বাংলাদেশ সরকারের সংশ্লিষ্টদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে দ্বীন মুহাম্মদ প্রিয় লেখেন– ‘প্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্ট সব মন্ত্রণালয়ের প্রতি বিনীত অনুরোধ– আমাদের এই অবস্থা থেকে রক্ষা করুন। এখানে কোনো বাংলাদেশি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হইনি; কিন্তু ইউনিভার্সিটিতে বেশ কয়েকজন আক্রান্ত। বিশুদ্ধ পানি ও খাবারের সংকটে অচিরেই অনেকেই অসুস্থ হয়ে পড়বে।’

তিনি আরও লেখেন– ‘আমি ২০১৬ ব্যাচের ছাত্র। এখন সিনিয়র। ২০১৭, ২০১৮, ২০১৯ ব্যাচের ছোট ভাইবোনেরা যখন সমস্যার কথা জানায়, তখন এই নিজেকে অক্ষম মনে হয়। দয়া করে আমাদের এখান থেকে উদ্ধার করুন।’

অন্য স্ট্যাটাসে দ্বীন মোহাম্মদ জানান, দূতাবাসের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তারা আমাদের কোনো দায়িত্ব নেয়ার ভ্রুক্ষেপ করছেন না। সামাজিকমাধ্যম wechat-এ একটি গ্রুপ খুলে বাংলাদেশ দূতাবাসের ফার্স্ট অফিসার খায়রুল বাশারকে বিষয়টি অবহিত করা হলে তিনি কিছু না বলেই গ্রুপ ত্যাগ করেন। তিনি কোনো ধরনের সহযোগিতা করছেন না। এ ধরনের অবহেলাই কি আমাদের প্রাপ্য?

প্রসঙ্গত, চীনে প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসে মৃত্যুর সংখ্যা বুধবার প্রায় ৫০০ জনের কাছাকাছি পৌঁছেছে। এ ছাড়া এখন পর্যন্ত ২৪ হাজার ৩২৪ জন আক্রান্ত হয়েছেন। সূত্র: যুগান্তর।

স্ব.বা/শা

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *