এই ‘বাম্বু র‍্যাট’ ইঁদুর থেকেই ছড়িয়েছে করোনাভাইরাস? চীনের নতুন দাবি!

আন্তর্জাতিক লীড

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: চীনের উহান শহরের বন্যপ্রাণীর বাজার থেকে ঘাতক করোনা ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার পর গবেষকদের সন্দেহের তালিকায় বিলুপ্তপ্রায় প্যাঙ্গোলিন, বাদুড়ের পর এবার যুক্ত হয়েছে বড় আকৃতির গেছো ইঁদুরের (বাম্বু র‍্যাট) নাম।

বিজ্ঞানীরা এখনো নিশ্চিত করে বলতে পারেননি। তবে গবেষণা যে দিকে এগোচ্ছে, তাতে বোঝা যাচ্ছে যে কভিড-১৯ ছড়িয়ে পড়ার সঙ্গে এসব বন্যপ্রাণীর বেশ ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক আছে।

চীন সরকার এবার করোনা ছড়ানোর জন্য বড় আকৃতির গেছো ইঁদুরকে দোষারোপ করছে। দরিদ্র মানুষেরা তাদের অর্থনৈতিক অবস্থা ফেরাতে খামারে মজাদার এসব বিশাল ইঁদুর পালন করে থাকে। এবার সেই ইঁদুর পালনে নিষেধাজ্ঞা জারি করতে যাচ্ছে দেশটির সরকার। মেরে ফেলতে হবে প্রায় আড়াই কোটি ইঁদুর।

ফেব্রæয়ারিতে চীনা কর্তৃপক্ষ ইঙ্গিত দিয়েছিল যে, অস্থায়ী ভিত্তিতে বন্যপ্রাণী খাওয়া ও চাষ নিষিদ্ধ করা হবে। এই প্রস্তাবটি নভেল করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাবের পরে দেওয়া হয়েছিল। চীনে বিশ্বাস করা হয় যে, উহান শহরের একটি বন্যপ্রাণীর বাজার থেকে ভাইরাসটির প্রাদুর্ভাব শুরু হয়েছিল।

যদিও বেশিরভাগ গবেষকরা ভাইরাসটির জন্য প্যাঙ্গোলিন এবং বাদুড় যারা কভিড -১৯ স্ট্রেনের উৎস, সেগুলোকে নিষিদ্ধ করার কথা বলেছেন। তবে একজন বিজ্ঞানী গেছো ইঁদুরকে দোষারোপ করে সেটা পালনে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার জন্য পরামর্শ দিয়েছেন।

ম্যান্ডারিনে ‘ঝু শু’ নামে পরিচিত বড় আকৃতির এই ইঁদুরগুলো অনেকটা গোলগাল হয় এবং এটি আকারে যথেষ্ট বড়। একটি প্রাপ্তবয়স্ক বাম্বু ইঁদুর পাঁচ কেজি ওজনের হতে পারে এবং ৪৫ সেন্টিমিটার পর্যন্ত লম্বা হতে পারে।

চীনাদের কাছে এই ইঁদুর খুবই সুস্বাদু খাবার হিসাবে বিবেচিত। হাজার বছর ধরে চীনাদের পাতে এটা রসনা বিলাস দিয়ে আসছে। বর্তমানে ঐতিহ্যবাহী এই খাবারটির জনপ্রিয়তা আরো বেড়েছে। এক জোড়া বাম্বু ইঁদুর ১১৩ ইউরোয় (বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ১০ হাজার ৪০০ টাকা) বিক্রি হচ্ছে।

বন্যপ্রাণী পালন ও বেচাকেনায় কড়াকড়ি আরোপের পর চীনের অধিকাংশ এলাকায় বর্তমানে বাম্বু ইঁদুর পালন বন্ধ হয়ে গেছে। নিষেধাজ্ঞার আগে খাওয়ার জন্য খামারিরা প্রায় আড়াই কোটি ইঁদুর লালন-পালন করছিল। এসব ইঁদুরের খামারের বেশিরভাগ গুয়াংজি এলাকায় অবস্থিত।

এই শিল্প বন্ধ হওয়ার এক মাস আগে চীনের শীর্ষস্থানীয় মহামারি বিশেষজ্ঞ ডা. ঝং নানশান সতর্ক করেছিলেন যে, মহামারিটি গেছো ইঁদুর বা ব্যাজারের সাথে যুক্ত হতে পারে। যদি আরও বড় প্রমাণ মেলে তাহলে এসব প্রাণী পালন দীর্ঘমেয়াদে অবৈধ হতে পারে।

মহামারি এড়াতে চাইছেন এমন লোকেরা সরকারের এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানালেও, বাম্বু ইঁদুর চাষীদের জন্য এটি বিপুল অর্থনৈতিক ক্ষতির কারণ হবে।

সূত্র- মিরর ইউকে ও দৈনিক অধিকার

স্ব.বা/বা

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *