২৪ ঘণ্টায় সারা বিশ্বে আরও ৭ হাজার ৪০৯ জনের মৃত্যু

আন্তর্জাতিক

স্বদেশ বাণী ডেস্ক: বৈশ্বিক মহামারি করোনা ভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা ৫ কোটি ৮৯ লাখ ছাড়িয়েছে। আক্রান্তের পাশাপাশি প্রতিদিনই মৃত্যুর তালিকায় যুক্ত হচ্ছে কয়েক হাজার মানুষ। গত ২৪ ঘণ্টায় সারা বিশ্বে মারা গেছেন আরও ৭ হাজার ৪০৯ জন। এ নিয়ে এ মহামারিতে আক্রান্ত হয়ে বিশ্বে মৃতের সংখ্যা ছাড়াল ১৩ লাখ ৯৩ হাজার জনে।

করোনাভাইরাসে আক্রান্তদের সংখ্যা ও প্রাণহানির পরিসংখ্যান রাখা ওয়েবসাইট ওয়ার্ল্ডওমিটারের তথ্যানুযায়ী, সোমবার (২৩ নভেম্বর) সকাল পর্যন্ত বিশ্বে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ৫ কোটি ৮৯ লাখ ৮০ হাজার ৫৯ জন এবং মৃত্যু হয়েছে ১৩ লাখ ৯৩ হাজার ৫৩৭ জনের। সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ৪ কোটি ৭ লাখ ৬৩ হাজার ৯৫০ জন।

এ ছাড়া গত একদিনে করোনায় নতুন করে মৃত্যু হয়েছে ৭ হাজার ৪০৯ জনের এবং একই সময়ে নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন ৪ লাখ ৮৯ হাজারের বেশি মানুষ।

বিশ্বে এখন পর্যন্ত করোনায় আক্রান্ত হয়ে সবচেয়ে বেশি মৃত্যু হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রে, ২ লাখ ৬২ হাজার ৬৯৬ জন। বিশ্বে সর্বোচ্চ আক্রান্তের সংখ্যাও এই দেশটিতে। বিশ্বের ক্ষমতাধর এ দেশটিতে এখন পর্যন্ত ১ কোটি ২৫ লাখ ৮৮ হাজার ৬৬১ জন আক্রান্ত হয়েছেন।

আক্রান্তে দ্বিতীয় এবং মৃত্যুতে তৃতীয় অবস্থানে থাকা ভারতে এখন পর্যন্ত সংক্রমিত হয়েছেন ৯১ লাখ ৪০ হাজার ৩১২ জন এবং মারা গেছে ১ লাখ ৩৩ হাজার ৭৭৩ জন।

আক্রান্তে তৃতীয় এবং মৃত্যুতে দ্বিতীয় অবস্থানে থাকা লাতিন আমেরিকার দেশ ব্রাজিলে এখন পর্যন্ত করোনায় ৬০ লাখ ৭১ হাজার ৪০১ জনের বেশি মানুষ সংক্রমিত হয়েছেন এবং মৃত্যু হয়েছে ১ লাখ ৬৯ হাজার ১৯৭ জনের।

আক্রান্তে চতুর্থ অবস্থানে থাকা ফ্রান্সে এখন পর্যন্ত করোনায় সংক্রমিত হয়েছেন ২১ লাখ ৪০ হাজার ২০৮ জন। এর মধ্যে মারা গেছেন ৪৮ হাজার ৭৩২ জন।

আক্রান্তে পঞ্চম স্থানে থাকা রাশিয়ায় করোনায় সংক্রমণের সংখ্যা ২০ লাখ ৮৯ হাজার ৩২৯ জন। এর মধ্যে মৃত্যু হয়েছে ৩৬ হাজার ১৭৯ জনের।

গত বছরের ডিসেম্বরের শেষ দিকে চীনের হুবেই প্রদেশের উহান থেকে করোনাভাইরাস সংক্রমণ শুরু হয়। এখন পর্যন্ত বাংলাদেশসহ বিশ্বের ২১৯টি দেশ ও অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়েছে কোভিড-১৯।

এদিকে, করোনার দ্বিতীয় ঢেউ এখনও প্রবাহিত। কোন কোন দেশে এখনও সেই ঢেউ পৌঁছায়নি। এরই মধ্যে সংক্রমণের তৃতীয় ঢেউ-এর আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) এক বিশেষ দূত। এখনই প্রতিরোধে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নিতে ব্যর্থ হলে ২০২১ সালের শুরুর দিকে ইউরোপজুড়ে তৃতীয় ঢেউ আঘাত হানতে পারে বলে তার আশঙ্কা।

ডব্লিউএইচও’র কোভিড-১৯ বিষয়ক বিশেষ দূত ডেভিড নাবারো সুইজারল্যান্ডের কয়েকটি পত্রিকায় দেওয়া সাক্ষাৎকারে এভাবেই নিজের আশঙ্কার কথা জানিয়েছেন।

তিনি বলেন, ‘ইউরোপের দেশগুলো প্রথম ঢেউ নিয়ন্ত্রণে আসার পর গরমের মাসগুলোতে এই ভাইরাস প্রতিরোধে প্রয়োজনীয় অবকাঠামো তৈরিতে ব্যর্থ হয়েছে। এখন আমাদের দ্বিতীয় ঢেউ মোকাবেলা করতে হচ্ছে। যদি তারা প্রয়োজনীয় অবকাঠামো নির্মাণ না করে তবে আগামী বছরের শুরুতে তৃতীয় ঢেউ দেখতে হবে।’

এ বছরের শুরুর দিকে ইউরোপজুড়ে করোনাভাইরাস সংক্রমণ মারাত্মক রূপ নিয়ে ছড়িয়ে পড়েছিল। বছরের মাঝামাঝিতে সংক্রমণ বিস্তারের গতি হ্রাস পায় এবং গ্রীষ্মে তা বেশ নিয়ন্ত্রণে চলে আসে। কিন্তু শীতের শুরুতে আবারো সংক্রমণ বাড়তে শুরু করেছে, যেটিকে সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউ বলা হচ্ছে। বর্তমানে দৈনিক সংক্রমণ যেভাবে বাড়ছে তাতে গত শীতের মতো বা তার থেকেও ভয়াবহ পরিস্থিতি আবার ফিরে আসতে পারে বলে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে।

সুইজারল্যান্ড ও অস্ট্রিয়ায় দৈনিক হাজারো মানুষ নতুন করে এ রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন। তুরস্কে শনাক্ত হচ্ছে অনেক মানুষ।

এ পরিস্থিতিতেও শীতে তুষারপাত শুরু হওয়ায় সুইজার‌ল্যান্ড পর্যটকদের জন্য তাদের স্কি রিসোর্টগুলো খুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তবে গন্ডোলায় (এক ধরনের নৌকা) চড়তে হলে ‍মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।

সুইজারল্যান্ড সরকারের এ সিদ্ধান্ত পছন্দ হয়নি ডব্লিউএইচও দূত নাবারোর। তিনি সেদিকে ইঙ্গিত করে বলেন, ‘সুইজার‌ল্যান্ডে সংক্রমণ এবং মৃত্যু উভয়ই অনেক বেশি হতে পারে। যখন সংক্রমণ হ্রাস পেতে শুরু করবে তখন ক্রমাগত সেটা হ্রাস পাবে। তখন আমরা যা খুশি তাই করার সুযোগ পাব। কিন্তু এই মুহূর্তে? স্কি রিসোর্টগুলো খুলে দেওয়া কী ঠিক হল? কোন শর্তে সেগুলো খোলা হল?’

তবে ডেভিড নাবারো ভাইরাস নিয়ন্ত্রণে দক্ষিণ কোরিয়ার মতো এশিয়ার দেশগুলোর প্রশংসা করেছেন।

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *