সন্ত্রাসী হামলায় নিহত কে এই ইরানের পরমাণু বিজ্ঞানী

আন্তর্জাতিক

স্বদেশ বাণী ডেস্ক : চলতি বছরের শুরুতে মার্কিন ড্রোন হামলায় নিহত হন ইরানের ইসলামি বিপ্লবী গার্ড বাহিনী বা আইআরজিসি’র কুদস ফোর্সের কমান্ডার লেফটেন্যান্ট জেনারেল কাসেম সোলাইমানি। এবার আরও এক গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিকে হারিয়েছে দেশটি। স্থানীয় সময় শুক্রবার (২৭ নভেম্বর) সন্ধ্যায় সন্ত্রাসী হামলায় নিহত হন ইরানের ‘বোমার জনক’ নামে পরিচিত মোহসেন ফখরিযাদে।

আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলোর তথ্যানুযায়ী, নিহত মোহসেন ফখরিযাদে ইরানের সবচেয়ে প্রবীণ পরমাণু বিজ্ঞানী। যিনি ছিলেন দেশটির প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের গবেষণা ও উদ্ভাবনী সংস্থার প্রধান।

এর আগে ইসলামী প্রজাতান্ত্রিক দেশটির রেভল্যুশনারি গার্ডের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন ফখরিযাদে। যিনি ইরানে ‘বোমার জনক’ নামে পরিচিত। তার মর্যাদা ছিল মন্ত্রণালয়ের উপ-প্রতিরক্ষামন্ত্রী ও রেভরল্যুশনারি গার্ডের ব্রিগেডিয়ার জেনারেলের সমান।

প্রবীণ এই পদার্থ বিজ্ঞানী ১৯৫৮ সালে ইরানের শিয়া সম্প্রদায়ের পবিত্র নগরী হিসিবে পরিচিত ‘কওম’ নামক শহরে জন্মগ্রহণ করেন। পরমাণু প্রকৌশল নিয়ে ডক্টরেট ডিগ্রি অর্জন করেছেন তিনি। ইরানের ‘ইউনিভার্সিটি অব ইমাম হোসেইন’র পরমাণু বিভাগের অধ্যাপকেরও দায়িত্ব পালন করেছেন মোহসেন ফাখরিযাদে।

দীর্ঘ দিন পর্যন্ত ইরানি পরমাণু বিজ্ঞানী হিসেবে তাকে কখনই দেশটির গণমাধ্যম প্রকাশ্যে আনতো না। বরং তাকে একজন সাধারণ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক হিসেবেই তুলে ধরা হয়ে আসছিল। কিন্তু যখন ছয় জাতি জাতিগোষ্ঠীর সঙ্গে ইরানের পরমাণু বিষয়ক চুক্তি হয় তারপর থেকেই মোহসেন ফাখরিযাদের নাম প্রকাশ্যে আসে।

সেই থেকে ইসরায়েল ও পশ্চিমা গোয়েন্দা সংস্থাগুলো বলে আসছে তিনি ইরানের খুবই ক্ষমতাশালী ব্যক্তি এবং ইরানের পরমাণু কর্মসূচির প্রধান স্তম্ভ। ২০১৮ সালে ইসরায়েল বলেছিল, তাদের হাতে যেসব গোপন নথিপত্র এসেছে সেগুলো অনুয়ায়ী ইরানের পরমাণু কর্মসূচির তিনি প্রধান রূপকার মোহসেন ফাখরিযাদে। তার নেতৃত্বেই ইরানের পরমাণু কর্মসূচি গড়ে উঠেছে।

ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু সেসময় বলেছিলেন ‘ওই নামটা (মোহসেন ফাখরিযাদে) মনে রাখবেন’- তিনিই ইরানের পরমাণু কর্মসূচির প্রধান বিজ্ঞানী।

২০১৫ সালে নিউইয়র্ক টাইমস তার তুলনা করেছিল জে রবার্ট ওপেনহাইমারের সাথে। ওপেনহাইমার দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় ম্যানহাটান প্রকল্পের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন যে প্রকল্পের অধীনে প্রথম আণবিক বোমা তৈরি করা হয়।

এদিকে, এ হামলার জন্য ইসরায়েলকে অভিযুক্ত করছে ইরান। পাল্টা পদক্ষেপ হিসেবে প্রতিশোধ নেয়া ঘোষণা দিয়েছে দেশটির সেনা প্রধান।

এর আগে ২০১০ থেকে ২০১২ সালের মধ্যে ইরানের চারজন পরমাণু বিজ্ঞানী আততায়ীর হাতে প্রাণ হারিয়েছেন এবং এইসব হত্যার ঘটনায় ইসরায়েল জড়িত বলে ইরান অভিযোগ করে আসছে দেশটি। ইরানের রেভরল্যুশনারি গার্ডের কমান্ডার বলেছেন এই হত্যাকাণ্ডের প্রতিশোধ নেয়া হবে।

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *