ভাকসিন না আসা পর্যন্ত মাস্কই ভ্যাকসিন : কানাডার দুই বিশেষজ্ঞ

আন্তর্জাতিক

স্বদেশ বাণী ডেস্ক: ভ্যাকসিন না আসা পর্যন্ত কোভিড মোকাবেলায় মাস্ককে ভ্যাকসিন হিসেবে ব্যবহারের পরামর্শ দিয়েছেন দুই কানাডীয়ান বিশেষজ্ঞ। তারা বলেছেন, দ্রুততম সময়ে কার্যকর একটি ভ্যাকসিন মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে বিজ্ঞানীরা প্রাণপণ কাজ করে যাচ্ছে। কিন্তু তার আগের সময়টায় মাস্ক এবং হাত ধোয়ার মাধ্যমে কোভিড থেকে নিজেদের বাঁচিয়ে রাখতে হবে।

ভ্যাকসিন পাওয়ার প্রনস্তুতির পাশাপাশি ভ্যাকসিন ব্যবহারের পর তার প্রতিক্রিয়া পর্যালোচনার ব্যবস্থা করারও তাগিদ দেন তারা।

কানাডার বাংলা পত্রিকা ‘নতুনদেশ’ এর প্রধান সম্পাদক শওগাত আলী সাগর এর সঞ্চালনায়  সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে  সম্প্রচারিত ‘শ্ওগাত আলী সাগর লাইভ’ অনুষ্ঠানে ব্রিটিশ কলম্বিয়া সেন্টার ফর ডিজিস কন্ট্রোল  এর বিশেষজ্ঞ ড. মোহাম্মদ মোরশেদ এবং মাইক্রোবিয়াল বায়োটেকনোলোজিস্ট ড. শোয়েব সাঈদ অতিথি হিসেবে আলোচনায় অংশ নেন।

স্থানীয় সময় বুধবার রাতে অনুষ্ঠিত এই আলোচনায় সারা বিশ্বের কোভিড পরিস্থিতি, ভ্যাকসিনের অগ্রগতি নিয়ে আলোচনা হলেও দুই বিশেষজ্ঞই বাংলাদেশ নিয়ে তাদের মতামত দেন।

ড. মোহাম্মদ মোরশেদ তার আলোচনায় বলেন, মডার্না এবং ফাইজার এই দুটিই এমআরএন্ও ভ্যাকসিন এই প্রথম এই ভ্যাকসিটি মানবদেহে প্রয়োগ করা হচ্ছে। ফলে ক্রিয়া প্রতিক্রিয়া নিয়ে মানুষের মধ্যে একটু সংশয় ছিলো।কিন্তু এখন পর্যন্ত প্রাপ্ত তথ্যে কোনো ভ্যাকসিনেরই সেই অর্থে ক্ষতিকর বা চিন্তত হবার মতো কোনো পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।

তিনি বলেন, ভ্যাকসি প্রাপ্তি নিয়ে সারা বিশ্বেই এখন তুমুল প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছে। কার আগে কোন দেশ ভ্যাকসিন পাবে সেই প্রতিযোগিতায় অনেক দেশই আগাম অর্থ দিয়ে ভ্যাকসিন কিনে রেখেছে। ভ্যাকসিন সংগ্রহের এই প্রতিযোগিতায় অনেক দেশই ভ্যাকসিন প্রাপ্তির ক্ষেত্রে পিছিয়ে পড়তে পারে।

তিনি বাংলাদেশ সরকারকে এই ব্যাপারে উদ্যোগী হওয়ার পরামর্শ দিয়ে বলেন, বাংলাদেশের জন্য আরো একটি বিষয়ে এখন থেকেই  মনোযোগ দেয়া দরকার। ভ্যাকসিন ব্যবহারের পর তার প্রতিক্রিয়া পরিমাপ এবং তা পর্যালোচনার ব্যবস্থা নিশ্চিত করার জন্য এখন থেকেই কাজ শুরু করা দরকার। তিনি বলেন, কোভিডের ভ্যাকসিন প্রয়োগের পর ইমিউন রেসপন্স ঠিকমতো হচ্ছে কী না তা পর্যবেক্ষণের  ব্যবস্থা না থাকলে সমস্যা দেখা দিতে পারে।

ড. মোহাম্মদ মোরশেদ বলেন, বাস্তবতার কারনেই বাংলাদেশের সামাজিক দুরত্ব অনুসরন করা কঠিন। সেকারনেই প্রত্যেকের মাস্ক ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে। তিনি বলেন, টাইগার মার্কা ব্র্যান্ড এর মাস্ক ব্যবহার করতে হবে কোনো কথা নেই। লুঙ্গি বা শাড়ির কাপড় দিয়ে তৈরি করা মাস্কেই কোভিডের বিরুদ্ধে কার্যকর প্রতিরোধ সম্ভব।

ড. শোয়েব সাঈদ তার আলোচনায় বাংলাদেশের ভ্যাকসিন সংগ্রহ থেকে সংরক্ষণ এবং বিতরন ব্যবস্থা সরাসরি সরকারের নিয়ন্ত্রণে রাখার উপর গুরুত্ব আরোপ করে বলেন, এর সাথে জাতীয় নিরাপত্তার প্রশ্ন জড়িত।

তিনি বলেন, বাংলাদেশ কিন্তু অ্যাস্ট্রাজেনেকার ভ্যাকসিন নিয়েই আলোচনা করছে। এর বাইরে আর কোনো ভ্যাকসিনের সাথে তাদের কোনো আলোচনা  আছে কী না সেই ব্যাপারে কোনো তথ্য গণমাধ্যমে  নাই। অথচ বিশ্বের  সবদেশই একাধিক কোম্পানির সাথে চুক্তি করে রেখেছে।

তিনি বলেন, মডার্না বা  ফাইজারের ভ্যাকসিন অনুমোদন পা্ওয়ার স্বল্পতম সময়েই সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়বে।  কিন্তু বাংলাদেশ এই দুই কোম্পানির সাথে সাথে কোনো আলোচনা  করেছে বলে কোনো খবর চোখে পড়েনি।

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *