দিগন্তে আশার আলো

আন্তর্জাতিক

স্বদেশ বাণী ডেস্ক: আর মাত্র কয়েকদিন বাকী। তারপরই শুরু হবে বৈশ্বিক একটি বিশাল ও ভয়ঙ্কর মানবঘাতী শত্রুর বিরুদ্ধে জয়ের শুভসূচনা। আগামী সপ্তাহ থেকেই ফাইজার ও বায়োনটেক আবিস্কৃত কোভিড-১৯ এর প্রতিষেধক টিকা দেয়া শুরু হবে যুক্তরাজ্যে। যুক্তরাজ্যের ঔষধ নিয়ন্ত্রণ সংস্হা টিকাটি অনুমোদন করেছেন।

বিশ্বে যুক্তরাজ্যই প্রথম দেশ যেখানে এই প্রতিষেধক প্রথম দেয়া হবে। আগামী সপ্তাহেই যুক্তরাজ্যে আসছে ৮ লাখ মাত্রা প্রতিষেধক। বছর শেষ হওয়ার আগেই আরো ১ কোটি মাত্রা। ধাপে ধাপে প্রতিষেধক টিকা দেয়া হবে। প্রতিষেধক প্রাপ্তির প্রথম কাতারে থাকছেন কোভিড-১৯ এ কর্মরত চিকিৎসক, সেবিকা, অন্যান্য স্বাস্হ্য কর্মীরা, বয়োবৃদ্ধরা, যাঁদের কিছু মৌলিক স্বাস্হ্য সমস্যা আছে ইত্যাদি। সবাইকে দিতে দিতে হয়তো আগামী গ্রীষ্ম এসে যাবে।

আজ এ আনন্দের মুহূর্তে আমরা যাতে ভুলে না যাই, কোভিড-১৯ অতিমারীতে এ পর্যন্ত বিশ্বে সাড়ে ১৪ কোটি মানুষ আক্রান্ত হয়েছেন এবং প্রানহানি ঘটেছে ১৫ লক্ষ মানুষের। সেই সব ঝরে যাওয়া প্রানকে আজ বিনম্রচিত্তে স্মরণ করি। পরম কৃতজ্ঞতা ও শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করি হাজার হাজার চিকিৎসক, সেবিকা অন্যান্য স্বাস্হ্য কর্মীকে যাঁরা কোভিড-১৯ এর বিরুদ্ধে যুদ্ধে সহ-মানুষদের রক্ষা করতে গিয়ে মৃত্যুর স্বীকার হয়েছেন। ভুলি কি করে শে সব চিকিৎসক, সেবিকা অন্যান্য স্বাস্হ্য কর্মীকে যাঁরা এখনও অন্যদের বাঁচানোর লড়াইয়ে ব্যস্ত?

বহু বিজ্ঞানীর দিন-রাত্রিব্যাপী অক্লান্ত পরিশ্রমে এ অসাধ্য সাধিত হয়েছে। তাঁদের প্রতি সমস্ত মানবজাতির অতল কৃতজ্ঞতা। ফাইজার ও বায়োনটেক আবিস্কৃত এ প্রতিষেধকের সঙ্গে সঙ্গে অন্যান্য একাধিক প্রতিষ্ঠানে এ জাতীয় প্রতিষেধক আবিষ্কৃত হয়েছে। যে অবিশ্বাস্য গতিতে এবং স্বল্পতম সময়ে এই পুরো প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন হয়েছে, তা অভাবিত।

এই আনন্দের মুহূর্তে ক’টি সতর্ক বাণী। এক, প্রতিষেধক দেয়া শুরু মানে অন্যান্য প্রতিরোধক ব্যবস্হা যেন আমরা বাদ না দেই। প্রতিষেধক ও প্রতিরোধক ব্যবস্হা একে অন্যের পরিপূরক। দুই, আমরা যেন প্রতিষেধক টিকা না নেয়া থেকে বিরত না হই। জানি, প্রতিষেধকের ব্যাপারে নানা গোষ্ঠী নানান ভয় দেখাবে, ষড়যন্ত্র তত্ত্বের কথা বলা হবে। আমরা যাতে সে সব মিথ্যাচাররে না টলে যাই। তিন, কোন কেন দেশ দাবী করছে যে তারাও প্রতিষেধক আবিষ্কার করেছে। সে সব প্রক্রিয়া বিশ্ব স্বাস্হ্য সংস্হা কর্তৃক অনুমোদিত হয় নি। সে সব থেকে আমরা যাতে দূরে থাকি।

আজ সুরঙ্গের শেষে সত্যিই আলো দেখা যাচ্ছে। সমস্ত মানবজাতি উল্লসিত এবং আশাবাদী। দিগন্তে আজ আশার সুবর্ণ রেখা। আগামী সপ্তাহে যখন মানুষেরা তাঁদের বাহুতে টিকা নেবে, তা শুধু একটি অতিমারীর বিরুদ্ধে প্রতিষেধক নয়; তা আশার, আস্হার এবং একটি সুনন্দ ভবিষ্যতের নিশ্চয়তার টিকাও বটে।

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *