ভারতে লাভ-জিহাদ বিরোধী আইনে প্রথম গ্রেফতার

আন্তর্জাতিক

স্বদেশ বাণী ডেস্ক: ভারতের উত্তর প্রদেশে একজন হিন্দু নারীকে ইসলাম ধর্মে দীক্ষিত করার অভিযোগে পুলিশ একজন মুসলিম পুরুষকে গ্রেপ্তার করেছে। ওই ব্যক্তি দেশটিতে ‘লাভ-জিহাদ’ নামে বিয়ের মাধ্যমে হিন্দু মেয়ে ইসলাম ধর্মে ধর্মান্তরিতকরণ বন্ধে যে নতুন আইন হয়েছে, তার অধীনে প্রথম গ্রেপ্তারের ঘটনা এটি।

সম্প্রতি হিন্দু-মুসলিম বিয়ে বন্ধ করার জন্য দেশটিতে ২৪শে নভেম্বর দশ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড এবং জামিন অযোগ্য–এমন বিধান রেখে উত্তরপ্রদেশের বিজেপি সরকার একটি নতুন আইন পাস করে।সমালোচকেরা আইনটিকে ইসলামোফোবিক বলে আখ্যা দিয়েছেন, এর বিরুদ্ধে দেশে ব্যাপক ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছে।

উত্তর প্রদেশ ছাড়াও আরো চারটি রাজ্যে ‘লাভ-জিহাদ’ বিরোধী আইনের খসড়া চূড়ান্ত করছে। বুধবার উত্তর প্রদেশের বারিলি জেলার পুলিশ গ্রেপ্তারের বিষয়টি টুইটারে পোস্ট দিয়ে নিশ্চিত করেছে।

যে নারীকে ধর্মান্তরিত করা হচ্ছিল, তার বাবা বলেছেন, তিনি পুলিশে অভিযোগ করেছেন, কারণ ওই ব্যক্তি তার মেয়ের ওপর চাপ সৃষ্টি করছিল, এবং হুমকি দিচ্ছিল।

মুসলমান ব্যক্তির সঙ্গে ওই নারীর সম্পর্ক ছিল, কিন্তু বছরের শুরুতে তিনি অন্য একজন পুরুষকে বিয়ে করেন।

পুলিশ বলেছে, এক বছর আগে ওই নারীর পরিবার ওই মুসলমান ব্যক্তির বিরুদ্ধে অপহরণের মামলা করেছিল। কিন্তু পরে ওই নারী ফেরত এসে যখন বলেন যে তাকে অপহরণ করা হয়নি, তখন মামলা বন্ধ করে দেয়া হয়।

বুধবার গ্রেপ্তারের পর ওই ব্যক্তিকে ১৪ দিনের জুডিশিয়াল কাস্টডিতে পাঠানো হয়েছে। সাংবাদিকদের কাছে তিনি দাবি করেছেন, তিনি নির্দোষ, এবং ‘ওই নারীর সঙ্গে তার কোন সম্পর্ক নেই’।

লাভ-জিহাদ বিরোধী আইনটি কী?

‘বলপূর্বক’ বা ‘জালিয়াতি’ করে ধর্মান্তরিত করা বন্ধ করার জন্য ভারতের প্রথম রাজ্য হিসেবে উত্তর প্রদেশ নভেম্বরে এই আইন পাস করে। অর্ডিন্যান্সটিতে বলা হয়েছে, এই ধরনের ধর্মান্তরের প্রমাণ পাওয়া গেলে সেই বিয়ে ‘শূন্য’ বা বাতিল বলে বিবেচিত হবে।

যারা সেই ধর্মান্তর করাবেন, সেই দোষী ব্যক্তিদের আর্থিক জরিমানা ও সর্বোচ্চ দশ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ডও হবে। অর্ডিন্যান্সটিকে সাধারণভাবে ‘লাভ-জিহাদ বিরোধী’ আইন বলেই বর্ণনা করা হচ্ছে – যদিও লাভ জিহাদ শব্দ-বন্ধটি অর্ডিন্যান্সের খসড়াতে কোথাও ব্যবহার করা হয়নি।

ভারতে মুসলিম যুবকরা যখন কোনও হিন্দু মেয়েকে ভালবেসে বিয়ে করতে যান, সেটাকে বিজেপি ও দেশের বিভিন্ন হিন্দুত্ব-বাদী গোষ্ঠী অনেকদিন ধরেই ‘লাভ জিহাদ’ বলে বর্ণনা করে আসছে। এই মূহুর্তে মধ্য প্রদেশ, হরিয়ানা, কর্ণাটক এবং আসামও ‘লাভ-জিহাদ’ ঠেকানোর এই আইন পাসের পরিকল্পনা করছে।

এই সব ক’টি রাজ্য পরিচালনার দায়িত্বে রয়েছে ভারতীয় জনতা পার্টি বিজেপি, এবং তাদের বিরুদ্ধে মুসলমান-বিরোধী সেন্টিমেন্ট স্বাভাবিকীকরণের অভিযোগ রয়েছে। সমালোচকেরা মনে করেন আইনটি প্রতিক্রিয়াশীল এবং আপত্তিকর। সূত্র: বিবিসি বাংলা

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *