যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞার বিষয়ে যা বলল র‌্যাব

আন্তর্জাতিক

স্বদেশবাণী ডেস্ক:  মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে র‍্যাবের সাবেক ও বর্তমান সাত কর্মকর্তার ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।গতকাল (১০ ডিসেম্বর) পৃথকভাবে এই নিষেধাজ্ঞা দেয় যুক্তরাষ্ট্রের ট্রেজারি ডিপার্টমেন্ট (রাজস্ব বিভাগ) ও পররাষ্ট্র দপ্তর।

যুক্তরাষ্ট্রের এই নিষেধাজ্ঞার বিষয়ে শনিবার এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র‌্যাব) আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মইন বলেছেন, র‌্যাবের বিরুদ্ধে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে সত্য নয়। র‌্যাবের মতো মানবিকতা বিশ্বের খুব কম বাহিনীই দেখিয়েছে।

রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র‌্যাবের মিডিয়া সেন্টারে একটি চুরির ঘটনা উদঘাটন নিয়ে ওই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।ওই সংবাদ সম্মেলন শেষে যুক্তরাষ্ট্র সরকারের নিষেধাজ্ঞার বিষয়ে র‌্যাবের প্রতিক্রিয়া জানতে চান সাংবাদিকেরা।

জবাবে র‌্যাবের মুখপাত্র বলেন, র‌্যাবের মতো মানবিকতা বিশ্বের খুব কম বাহিনীই দেখিয়েছে। র‌্যাব মানবাধিকার লুণ্ঠন করে না, মানবাধিকার রক্ষা করে। এখন পর্যন্ত নিষেধাজ্ঞা বিষয়ে যা কিছু জেনেছি, তার সবই গণমাধ্যম থেকে পাওয়া। আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু জানানো হলে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এ বিষয়ে সরকারের অবস্থান জানাবে।

তিনি জানান, মানবাধিকার রক্ষায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী র‌্যাবের লে. কর্নেল আজাদসহ ২৮ জন জীবন দিয়েছেন। মানবাধিকার রক্ষা ও আইনশৃঙ্খলা সমুন্নত রাখতে র‌্যাবের এক হাজারের অধিক সদস্যের অঙ্গহানি হয়েছে। দেশের আইনশৃঙ্খলা সমুন্নত রাখার জন্য দুই হাজারের বেশি সদস্য বিভিন্নভাবে আহত হয়েছেন।

কমান্ডার খন্দকার আল মইন বলেন, ‘বিশ্বে এমন কোনো ফোর্স নেই, যার সদস্য সংখ্যা ৯ হাজার। তাদের মধ্যে আমি যে পরিসংখ্যান দিলাম… দেশের আইনশৃঙ্খলা মানবাধিকার রক্ষার্থে এভাবে আত্মত্যাগ করেছে কিনা, আমার সন্দেহ রয়েছে।’

এ সময় র‌্যাবের উদ্যোগে সুন্দরবন জলদস্যুমুক্ত হয়েছে উল্লেখ করে তিনি জানান, ৩৬টি বাহিনীর ৩২৬ জন আত্মসমর্পণ করেছেন। জঙ্গিবাদ দমনেও র‌্যাব কাজ করেছে। তাদের পুনর্বাসনের উদ্যোগ নিয়েছে। জলদস্যুদের ঘর বানিয়ে দিয়েছে, গরু দিয়েছে, সুস্থ জীবনে ফিরে আসার জন্য যা যা দরকার, সব করেছে র‌্যাব। বিশ্বের খুব কম বাহিনীই এত মানবিকতা দেখিয়েছে।

কমান্ডার খন্দকার আল মইন আরও বলেন, র‌্যাবেই প্রথম ডোপ টেস্টের উদ্যোগ নেওয়া হয়- যেন কোনো মাদকাসক্ত এই বাহিনীতে ঢুকতে না পারেন। করোনার সময় যখন ছেলে বাবাকে কিংবা বাবা ছেলেকে ফেলে গেছেন, তখন র‌্যাব হেলিকপ্টারে তাদের হাসপাতালে নিয়ে এসেছে।

বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডে র‌্যাবের সম্পৃক্ততার যে অভিযোগের কথা উঠেছে সে সম্পর্কে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে সংস্থাটির মুখপাত্র বলেন, ‘বিভিন্ন সময় গুলিবিনিময় বা ক্রসফায়ার নিয়ে অভিযোগ ওঠে। আত্মরক্ষার অধিকার আইন দিয়েছে। মাদক ও জঙ্গিবাদবিরোধী অভিযানে আমরা যখন প্রতিরোধের শিকার হয়েছি, যখন গুলি চালিয়েছে তখনই আমরা গুলি করেছি। গুলি বিনিময়ে অফিসার ও বিভিন্ন সদস্য শহিদ হয়েছেন।’

তিনি জানান, প্রতিটি গুলিবর্ষণের ঘটনার নির্বাহী তদন্ত হয়। যদি কেউ ভুল করে থাকেন, তাহলে র‌্যাব কঠোর ব্যবস্থা নেয়। আইন ও নিয়ম ভঙ্গের বিরুদ্ধে র‌্যাবের অবস্থান কঠোর বলেও উল্লেখ করেন কমান্ডার মইন।

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *